ঢাকা ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
চাটমোহর মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ধোবাউড়ায় ১৩৮ বোতল ভারতীয় মদসহ প্রাইভেটকার জব্দ কমলগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর দোয়া ও ইফতার মাহফিল নতুন ফন্দি অভিযুক্ত বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা রতনের: সংবাদ সম্মেলন ডেকে লাপাত্তা তার পরিবার ২৯ বিজিবির বিশেষ অভিযানে মাদকদ্রব্য সহকারে আটক ১ কুলাউড়ায় ঝিমাই চা বাগানের স্টোর ক্লার্ক কর্মকর্তার একাধিকবার ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, ২ বগি লাইনচ্যুত রায়পুরে মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় যুবক কারাগারে পাইকগাছায় পূর্ব শত্রুতার জেরে বিএনপির নেতার হাতে যুবদল কর্মীকে মারপিটের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন: থানায় মামলা  নান্দাইলে নদীর তলদেশের জ্বালানি সংগ্রহের প্রতিযোগীতা গ্রামবাসীর কালুরঘাট থেকে নতুন আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে: মোস্তাক আহমদ খান বাজিতপুরে মৎস্যজীবী দলের ইফতার মাহফিলে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নান্দাইলে নদীর তলদেশের জ্বালানি সংগ্রহের প্রতিযোগীতা গ্রামবাসীর

নরসুন্দা নদীর মাটি খুঁড়ে জ্বালানি সংগ্রহ করছেন হাজার হাজার মানুষ

নদীর মাটি খুঁড়লেই বের হয়ে আসছে এক ধরনের কালো মাটি। সেই মাটি রোদে শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। খরচবিহীন জ্বালানি সংগ্রহ করা হচ্ছে নদীর তলদেশের মাটি খনন করে। যে কারণে মাটি খোঁড়াখুঁড়ির এক ধরনের প্রতিযোগিতায় মেতেছে গ্রামের শত শত মানুষ।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুলি ও রাজগাতি ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীতে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

নদী পাড়ের কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ কালো রঙের এ জ্বালানি মাটি সংগ্রহ করছেন। স্থানীয়রা সেই মাটিকে ‘কসম’ নামে ডেকে থাকেন। তবে ওই নামের তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে লোকজন তেমন কিছু বলতে পারেননি।

নান্দাইল উপজেলার পূর্ব সীমানা মুশুলি ইউনিয়নের চংভাদেরা গ্রাম থেকে খনন কাজ শুরু হয়ে কালীগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে শুভখিলা রেলসেতু পর্যন্ত খনন কাজ চলছে। নদীর তলদেশের উপরিভাগের মাটির স্তর খননের পর কালো মাটি বের হতে শুরু করে। যেগুলো এলাকার মানুষ জ্বালানি হিসেবে সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে।

জ্বালানি মাটি সংগ্রহের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাটি সংগ্রহ করছে তারা।

সম্প্রতি কালীগঞ্জ বাজারের পাশে ও শুভখিলা রেলসেতুর কাছে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নদী খননের কাজ চলছে। খনন যন্ত্রের কাছে নদীপাড়ের অনেক বাসিন্দা কোদাল, শাবল নিয়ে জড়ো হয়েছেন। খনন যন্ত্রের দ্বারা বিপুল পরিমাণ মাটি উঠে আসছে। ওই মাটির সাথে উঠে আসছে কালো রঙের জ্বালানি মাটি। লোকজন কোদাল, শাবল দিয়ে সাধারণ মাটি থেকে জ্বালানি সমৃদ্ধ কালোমাটি সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

এলাকার কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ বাসিন্দার সাথে কথা বললে তারা বাংলাদেশ সময়কে জানান, “ছোটবেলা থেকে দেখেছেন শুকনো মৌসুম এলে নরসুন্দা নদীর পানি শুকিয়ে চর জেগে উঠে। নদী পাড়ের বাসিন্দারা বাড়ির উঠান ভরাট করার জন্য নদী খোদাই করে মাটি সংগ্রহ করেন। নদী খোদাইয়ের সময় কয়লার মতো কালো মাটি বের হয়ে আসতো। সেই কালো মাটি সংগ্রহের পর রোদে শুকিয়ে তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতো নদী পাড়ের মানুষ। বছরের পর বছর জ্বালানি মাটি সংগ্রহের ফলে তা প্রায় শেষ হয়ে আসে। সম্প্রতি নদী খননের কাজ শুরু হলে আবার সে জ্বালানি মাটি বের হয়ে আসছে।”

বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, “মুরুব্বিদের মুখে শুনেছেন সুদূর অতীতে এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বড় বড় গাছপালা মাটি চাপা পড়েছিল। এসব গাছ পঁচে মাটির সাথে মিশে গেছে। এখন খনন কাজ চালানোর ফলে মাটি মেশানো গাছপালাই হয়তো উঠে আসছে।”

গ্রামের লোকজন আরও জানান, রোদে শুকানোর পর চুলায় দিলে কয়লার মতো জ্বলে। উত্তাপ হয় বেশি, দ্রুত রান্না হয়। তাই মানুষের কাছে এ জ্বালানি চাহিদা রয়েছে।

উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইফতেখার মমতাজ খোকন জানান, “বেশ কয়েকটি গ্রামের অসচ্ছল পরিবারের শত শত মানুষের সামনে বিনামূল্যে জ্বালানি সংগ্রহের চমৎকার একটি সুযোগ এসেছে।”

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চাটমোহর মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

Verified by MonsterInsights

নান্দাইলে নদীর তলদেশের জ্বালানি সংগ্রহের প্রতিযোগীতা গ্রামবাসীর

আপডেট সময় ০৮:২৬:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

নদীর মাটি খুঁড়লেই বের হয়ে আসছে এক ধরনের কালো মাটি। সেই মাটি রোদে শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। খরচবিহীন জ্বালানি সংগ্রহ করা হচ্ছে নদীর তলদেশের মাটি খনন করে। যে কারণে মাটি খোঁড়াখুঁড়ির এক ধরনের প্রতিযোগিতায় মেতেছে গ্রামের শত শত মানুষ।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মুশুলি ও রাজগাতি ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীতে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

নদী পাড়ের কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ কালো রঙের এ জ্বালানি মাটি সংগ্রহ করছেন। স্থানীয়রা সেই মাটিকে ‘কসম’ নামে ডেকে থাকেন। তবে ওই নামের তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে লোকজন তেমন কিছু বলতে পারেননি।

নান্দাইল উপজেলার পূর্ব সীমানা মুশুলি ইউনিয়নের চংভাদেরা গ্রাম থেকে খনন কাজ শুরু হয়ে কালীগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে শুভখিলা রেলসেতু পর্যন্ত খনন কাজ চলছে। নদীর তলদেশের উপরিভাগের মাটির স্তর খননের পর কালো মাটি বের হতে শুরু করে। যেগুলো এলাকার মানুষ জ্বালানি হিসেবে সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে।

জ্বালানি মাটি সংগ্রহের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাটি সংগ্রহ করছে তারা।

সম্প্রতি কালীগঞ্জ বাজারের পাশে ও শুভখিলা রেলসেতুর কাছে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নদী খননের কাজ চলছে। খনন যন্ত্রের কাছে নদীপাড়ের অনেক বাসিন্দা কোদাল, শাবল নিয়ে জড়ো হয়েছেন। খনন যন্ত্রের দ্বারা বিপুল পরিমাণ মাটি উঠে আসছে। ওই মাটির সাথে উঠে আসছে কালো রঙের জ্বালানি মাটি। লোকজন কোদাল, শাবল দিয়ে সাধারণ মাটি থেকে জ্বালানি সমৃদ্ধ কালোমাটি সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।

এলাকার কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ বাসিন্দার সাথে কথা বললে তারা বাংলাদেশ সময়কে জানান, “ছোটবেলা থেকে দেখেছেন শুকনো মৌসুম এলে নরসুন্দা নদীর পানি শুকিয়ে চর জেগে উঠে। নদী পাড়ের বাসিন্দারা বাড়ির উঠান ভরাট করার জন্য নদী খোদাই করে মাটি সংগ্রহ করেন। নদী খোদাইয়ের সময় কয়লার মতো কালো মাটি বের হয়ে আসতো। সেই কালো মাটি সংগ্রহের পর রোদে শুকিয়ে তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতো নদী পাড়ের মানুষ। বছরের পর বছর জ্বালানি মাটি সংগ্রহের ফলে তা প্রায় শেষ হয়ে আসে। সম্প্রতি নদী খননের কাজ শুরু হলে আবার সে জ্বালানি মাটি বের হয়ে আসছে।”

বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, “মুরুব্বিদের মুখে শুনেছেন সুদূর অতীতে এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বড় বড় গাছপালা মাটি চাপা পড়েছিল। এসব গাছ পঁচে মাটির সাথে মিশে গেছে। এখন খনন কাজ চালানোর ফলে মাটি মেশানো গাছপালাই হয়তো উঠে আসছে।”

গ্রামের লোকজন আরও জানান, রোদে শুকানোর পর চুলায় দিলে কয়লার মতো জ্বলে। উত্তাপ হয় বেশি, দ্রুত রান্না হয়। তাই মানুষের কাছে এ জ্বালানি চাহিদা রয়েছে।

উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইফতেখার মমতাজ খোকন জানান, “বেশ কয়েকটি গ্রামের অসচ্ছল পরিবারের শত শত মানুষের সামনে বিনামূল্যে জ্বালানি সংগ্রহের চমৎকার একটি সুযোগ এসেছে।”