রংপুরের মিঠাপুকুরে এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ের প্রলোভণে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ উঠার পর ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে গ্রামবাসীর চাপে তরুণীকে বিয়ের পর অমানুষিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে নয়ন নামে এক যুবক এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এমনকি শ্বশুর বাড়িতে উঠতে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীর পেটে আঘাত করায় তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী জানান, তিন বছর পূর্বে মিঠাপুকুর উপজেলার ০৯ নং ময়েনপুর ইউনিয়নের শেকুরপাড়া গ্রামের রমজান আলীর পুত্র নয়ন মিয়া (২১) তার সঙ্গে বিয়ের প্রলোভণে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে।
পরে ওই তরুণী প্রেমিক নয়নকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে নয়ন তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। ওই তরুণী পরে বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে পরিবারের লোকজন সহ স্থানীয়রা ওই তরুণীকে বিয়ে করতে নয়নকে চাপ দেয়। কিন্তু নয়ন এবং তার পরিবার বিষয়টি মেনে না নেওয়ায় এক পর্যায়ে ওই তরুণীর পরিবার মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে মামলা না করার শর্তে নয়ন ওই নারীকে বিয়ে করতে সম্মতি জানায়।
গত-১৮ জুলাই (৫,০০,০০০) পাঁচ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে নয়ন ওই তরুণীকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর নয়ন নববধূ স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে চলে আসেন। একপর্যায়ে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তিনি তার স্বামী নয়ন মিয়াকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু নয়ন নববধূকে তার নিজ বাড়িতে না নিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
ঘটনার দিন বুধবার (৯ অক্টোবর) ওই নারী রাতে তার স্বামীর খোঁজে শ্বশুর বাড়িতে গেলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে বাড়িতে উঠতে না দিয়ে জানায়, তাকে তালাক প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু ওই নারী নিজেকে চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা দাবি করায় স্বামী নয়ন মিয়া, রমজান আলী, হযরত আলী, রকিবুল ইসলামসহ কয়েকজন তাকে বেধড়ক মারপিট করেন।
একপর্যায়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় ছোরা দিয়ে কোপাতে থাকেন। এতে ওই নারীর রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাঁকে মুমূর্ষু অবস্থায় মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নয়নের কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, নয়ন অনলাইনে কাজ করে টাকা পয়সা উপার্জন করায় এই নিরিহ মেয়েটিকে প্রেমের জালে ফাসিয়ে তার জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করেছে। অভিযুক্ত নয়নের বাবার দাবি, আমার ছেলে ওই মেয়েকে কোর্টে তালাক দিয়েছে। তারপরেও বাড়িতে আসায় পেটানো হয়েছে।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
এই মাত্র পাওয়াঃ
মিঠাপুকুরে বিয়ের প্রলোভণে ধর্ষণ, চাপে পড়ে বিয়ের পর নববধূকে অমানবিক নির্যাতন
- মিঠাপুকুর প্রতিনিধি
- আপডেট সময় ০৮:৫৯:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
- ৮০ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ