ঢাকা ১১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
ফুলবাড়ীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী দোলনা আক্তার গ্রেপ্তার মৌলভীবাজারে বাবার হাতে ছেলে খুন, ঘাতক পিতা আটক মঠবাড়িয়ায় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির সাথে অশোভনীয় আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন ময়মনসিংহ জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জে দিনে দুপুরে পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে টাকা ছিনতাই জয়পুরহাটে ১৪৪ ধারা জারি ডিমলায় র‍্যাবের হাতে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার টুঙ্গিপাড়ায় মেয়াদোত্তীর্ণ মাছের খাবার বিক্রি: ৫ হাজার টাকা জরিমানা পাবনায় জামায়াতের অফিসে হামলা-ভাংচুরের অভিযোগ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পাইকগাছার রাড়ুলী ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ বদলগাছীতে ৮ হাজার ২শ ২০ বিঘা জমিতে সরিষা উৎপাদন সাবেক মন্ত্রী নুর মোহাম্মদ খানের মতবিনিময়

ময়মনসিংহে যাত্রীদের তোপের মুখে স্টেশন সুপার, হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করে চালকের পলায়ন

  • ময়মনসিংহ ব্যুরো
  • আপডেট সময় ০৯:১১:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৫৩৭ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহ রেল স্টেশনে হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করে চালকের পলায়ন

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেয়ার দাবিতে রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ডাকে ট্রেন বন্ধের ঘোষণায় সারাদেশের ন্যায় মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ময়মনসিংহের রেললওয়ে জংশন থেকে কোন ট্রেন চলাচল করেনি।

যাত্রীরা সকাল খেকে রেলওয়ে স্টেশনে এসে জানতে পারেন ট্রেন বন্ধ, কোনো ট্রেন ছেড়ে যাবে না। অনেক যাত্রী সারাদেশে ট্রেন বন্ধ জেনেও রেলওয়ে জংসনে এসেছেন যদি কর্মচারীদের দাবী মেনে নেন সংশ্লিষ্টরা এমন আশায়। বেলা ১০টার দিকে এসব অপেক্ষমান যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে না যেতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেশন সুপারের কার্যালয়ের সামনে ভীড় জমায়। এক পর্যায়ে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন সুপারকে অবরুদ্ধ করে রাখলে তোপের মুখে পড়েন সুপারিনটেনডেন্ট এস এম নাজমুল হক খান।

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকাগামী হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশনে এসে পৌঁছালে স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট যাত্রীদের তোপের মুখে থাকার অবস্থা টের পেয়ে হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ড্রাইভার ট্রেন বন্ধ করে পালিয়ে যায়।

ময়মনসিংহ স্টেশনে আসা ট্রেন যাত্রী এম এ আজিজ বলেন, ময়মনসিংহ জংশনে আসার পর হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আর চলছে না। বিমানবন্দর স্টেশন পর্যন্ত আমার টিকিট কাটা। ট্রেন বন্ধ থাকায় ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। স্টেশনের লোকজন বলছে, ট্রেন আজকে আর যাবে না, অনলাইনে টিকেট কাটা থাকলে যেখান থেকে টিকেট কেটেঝেন সেখান থেকে ফেরত নিয়ে যান অথবা বিআরটিসি বাসে ট্রেনের টিকেট দিয়ে ঢাকা যেতে পারবেন।

এদিকে স্টেশনে আসা ট্রেনের চালক ইঞ্জিন বন্ধ করে পালিয়েছে। আমাদের তো আগে থেকে জানানো হয়নি। মোহনগঞ্জ থেকে বিকল্প পথে যেতাম। এখানে কেন এনে আমাদের বিপদে ফেলা হলো। ঢাকায় যেতে না পারলে কেন ময়মনসিংহ পর্যন্ত আনা হলো, তাঁরা এমন প্রশ্ন করেন স্টেশন সুপারের কাছে বিক্ষুব্ধরা ।

অপরদিকে ট্রেন বন্ধ হওয়ায় বিভাগের জেলাগুলোতে ট্রেন যাত্রীরা যাতায়াতে যাত্রীবাহি বাস বেছে নেয়। ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ পাটগুদাম ব্রীজ, মাসকান্দা বাসটার্মিনাল ঘুড়ে দেখা বাস যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোন অভিযোগ করেননি যাত্রীরা।

ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট এস এম নাজমুল হক খান বলেন, আন্দোলনের কারণে ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন হয়ে চলাচলের ২৮ জোড়া ট্রেন বন্ধ। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিআরটিসি বাসে তাঁদের গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে বেলা ১টা পর্যন্ত কোনো যাত্রীকে বিকল্প পথে ঢাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। কোনো যাত্রীকে টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান স্টেশন সুপার।

উল্লেখ্য, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন ট্রেনের রানিং স্টাফরা। গত বুধবার চট্টগ্রামে পুরোনো রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার শর্ত দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। অন্যথায় ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।

এই রানিং স্টাফরা হলেন গার্ড, ট্রেনচালক (লোকোমাস্টার), সহকারী চালক ও টিকিট পরিদর্শক (টিটিই)। তাঁরা সাধারণত দীর্ঘ সময় ট্রেনে দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসাবে বাড়তি অর্থ পেতেন তাঁরা। এছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ফুলবাড়ীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী দোলনা আক্তার গ্রেপ্তার

Verified by MonsterInsights

ময়মনসিংহে যাত্রীদের তোপের মুখে স্টেশন সুপার, হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন বন্ধ করে চালকের পলায়ন

আপডেট সময় ০৯:১১:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেয়ার দাবিতে রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ডাকে ট্রেন বন্ধের ঘোষণায় সারাদেশের ন্যায় মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ময়মনসিংহের রেললওয়ে জংশন থেকে কোন ট্রেন চলাচল করেনি।

যাত্রীরা সকাল খেকে রেলওয়ে স্টেশনে এসে জানতে পারেন ট্রেন বন্ধ, কোনো ট্রেন ছেড়ে যাবে না। অনেক যাত্রী সারাদেশে ট্রেন বন্ধ জেনেও রেলওয়ে জংসনে এসেছেন যদি কর্মচারীদের দাবী মেনে নেন সংশ্লিষ্টরা এমন আশায়। বেলা ১০টার দিকে এসব অপেক্ষমান যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে না যেতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেশন সুপারের কার্যালয়ের সামনে ভীড় জমায়। এক পর্যায়ে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন সুপারকে অবরুদ্ধ করে রাখলে তোপের মুখে পড়েন সুপারিনটেনডেন্ট এস এম নাজমুল হক খান।

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকাগামী হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশনে এসে পৌঁছালে স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট যাত্রীদের তোপের মুখে থাকার অবস্থা টের পেয়ে হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের ড্রাইভার ট্রেন বন্ধ করে পালিয়ে যায়।

ময়মনসিংহ স্টেশনে আসা ট্রেন যাত্রী এম এ আজিজ বলেন, ময়মনসিংহ জংশনে আসার পর হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আর চলছে না। বিমানবন্দর স্টেশন পর্যন্ত আমার টিকিট কাটা। ট্রেন বন্ধ থাকায় ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। স্টেশনের লোকজন বলছে, ট্রেন আজকে আর যাবে না, অনলাইনে টিকেট কাটা থাকলে যেখান থেকে টিকেট কেটেঝেন সেখান থেকে ফেরত নিয়ে যান অথবা বিআরটিসি বাসে ট্রেনের টিকেট দিয়ে ঢাকা যেতে পারবেন।

এদিকে স্টেশনে আসা ট্রেনের চালক ইঞ্জিন বন্ধ করে পালিয়েছে। আমাদের তো আগে থেকে জানানো হয়নি। মোহনগঞ্জ থেকে বিকল্প পথে যেতাম। এখানে কেন এনে আমাদের বিপদে ফেলা হলো। ঢাকায় যেতে না পারলে কেন ময়মনসিংহ পর্যন্ত আনা হলো, তাঁরা এমন প্রশ্ন করেন স্টেশন সুপারের কাছে বিক্ষুব্ধরা ।

অপরদিকে ট্রেন বন্ধ হওয়ায় বিভাগের জেলাগুলোতে ট্রেন যাত্রীরা যাতায়াতে যাত্রীবাহি বাস বেছে নেয়। ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ পাটগুদাম ব্রীজ, মাসকান্দা বাসটার্মিনাল ঘুড়ে দেখা বাস যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোন অভিযোগ করেননি যাত্রীরা।

ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট এস এম নাজমুল হক খান বলেন, আন্দোলনের কারণে ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন হয়ে চলাচলের ২৮ জোড়া ট্রেন বন্ধ। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিআরটিসি বাসে তাঁদের গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে বেলা ১টা পর্যন্ত কোনো যাত্রীকে বিকল্প পথে ঢাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। কোনো যাত্রীকে টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান স্টেশন সুপার।

উল্লেখ্য, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন ট্রেনের রানিং স্টাফরা। গত বুধবার চট্টগ্রামে পুরোনো রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করে ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার শর্ত দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। অন্যথায় ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।

এই রানিং স্টাফরা হলেন গার্ড, ট্রেনচালক (লোকোমাস্টার), সহকারী চালক ও টিকিট পরিদর্শক (টিটিই)। তাঁরা সাধারণত দীর্ঘ সময় ট্রেনে দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসাবে বাড়তি অর্থ পেতেন তাঁরা। এছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো।