ঢাকা ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
আমার বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিয়েছে: জেফার সাংবাদিকরা যদি হুমকি বা হয়রানির শিকার হলে আমরা এক হয়ে লড়ব: সারজিস আলম সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: জ্যেষ্ঠ সচিবের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মারা গেছেন কুলাউড়ায় চুরির অপবাদ সইতে না পেরে মুজাহিদুর নামে আত্মহত্যা কুলাউড়ায় নিষিদ্ধ পলিথিন মজুত রাখার অপরাধে দুইটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা পাংশা রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিকায়নের কাজ শুরু সংসদ নির্বাচন হতে হবে আনুপাতিক হারে: জামায়াত আমির যশোরে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ সুনামগঞ্জে বিএনপি নেতার নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে সন্ত্রাসীদের হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন রাজবাড়ীতে খাদ্য ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণ প্রদান যশোরে জামায়াতের আমীরের সমাবেশ আগামীকাল

কমলগঞ্জে শেষ কর্মদিবসে কাঁদালেন জনবান্ধব ইউএনও জয়নাল আবেদীন

গত বছরের ২০ আগস্ট কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন জয়নাল আবেদীন। যোগদানের পর থেকে তিনি কমলগঞ্জ উপজেলার উন্নয়নে রাত-দিন কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষের যেকোনো সমস্যা সমাধানে তিনি তাৎক্ষণিক ভূমিকা রেখেছেন। শান্তিপ্রিয় কমলগঞ্জ উপজেলাকে দীর্ঘ ১৬ মাস সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে পরিচালনা করেছেন। নিজের সততা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে তিনি সবার মন জয় করে নিয়েছেন। যার ফলে সবার কাছে তিনি জনবান্ধব ইউএনও হিসাবে পরিচিতও লাভ করেছেন।
 
জয়নাল আবেদীন প্রায় ১৬ মাস কমলগঞ্জে দায়িত্ব পালন শেষে বদলিজনিত কারণে বিদায় নিচ্ছেন।
 
গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) তাঁর শেষ কর্মদিবসে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি কমলগঞ্জের মানুষের সহযোগিতা আর আন্তরিকতার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লূত হয়ে ওঠেন। এ সময় সরকারি কমকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হাজির হয়েছিলেন। ইউএনওর কথা শুনে তাদের চোখও অশ্রুশিক্ত হয়েছে।
 
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জয়নাল আবেদীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সিলেট ওসমানীনগর উপজেলায় যোগাদান করার কথা রয়েছে।
 
জানা গেছে, গত বছরের ২০ আগস্ট ইউএনও হিসাবে প্রথম কমলগঞ্জ উপজেলায় যোগদান করেন ৩৫ তম বিসিএস ক্যাডার জয়নাল আবেদীন। এখানে যোগদানের পর তিনি ধীরে ধীরে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে আস্থাভাজন হয়ে উঠেন। উপজেলার অসহায় মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল ছিলেন তিনি। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের কাজের পাশাপাশি দিনরাত ছুটে গেছেন সাধারণ মানুষের কাছে। প্রায় ২১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বসবাস এই উপজেলায়। সরকারী সেবা পৌঁছাতে যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানেই ছুটে গেছেন। সরকারি খাসজমি উদ্ধার, নিজ অর্থায়নে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বিদ্যালয় পরিদর্শন, শিক্ষা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণসহ প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। পর্যটন সমৃদ্ধ উপজেলা হওয়ায় পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন।
 
সম্প্রতি উপজেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মাধবপুর লেকে “আই লাভ কমলগঞ্জ” নামে একটি দৃষ্টিনন্দন বোর্ড স্থাপন করছেন যা এই লেকের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বই মেলা ও পিঠা উৎসবের আয়োজন করে বাঙালি সংস্কৃতি মেলে ধরেছেন। ২০২৪ সালে ভয়াবহ বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। খেলাধুলার প্রসারে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ফুটবলসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করছেন। উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানের নারসামা রেলী নামে একজনকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। 
 
ইউএনও জয়নাল আবেদীনের পৃষ্ঠপোষকতায় লোকসংস্কৃতি বিষয়ক সংকলনগ্রন্থ আরণ্যক নামে একটি বই প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে তাৎক্ষণিক ভূমিকা রেখেছেন। উপজেলায় শিক্ষা, সংস্কৃতি বিস্তার, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির পথচলা সহজ করতে সময় সময় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন দূর্যোগের সময়ে সরকারি সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন জনবান্ধব ইউএনও জয়নাল আবেদীন। 
 
কমলগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষজন বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সবসময় পাশে পেয়েছি। যেকোনো দুর্যোগের সময়ে দিনরাত সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন। সততা, আদর্শ ও কর্মদক্ষতায় মানুষের মন জয় করেছে তিনি। সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী, প্রতিবন্ধী ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যারাই তাঁর কাছে এসেছেন, তাদের সমস্যা শুনে সমাধান করার চেষ্টা করেছেন। যেই কোনো কাজে যতবারই ফোন করেছে, ততবার ফোন রিসিভ করেছেন। উনার দরজা সাধারণ মানুষের জন্য সবসময় খোলা ছিল। উনার চলে যাওয়া শুনে উপজেলার সাধারণ মানুষ আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছেন।
 
মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস খান বলেন, ইউএনও মহোদয় উপজেলায় শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করছেন। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নিজ অর্থায়নে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করছেন। উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সার্বিক অবস্থার খোঁজ রাখতেন। বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিক্ষা কার্যক্রমে যখন যা প্রয়োজন তা পূরণ করার চেষ্টা করেছেন। সত্যি তিনি একজন শিক্ষাবান্ধব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। 
 
মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ আহমেদ তরফদার ও পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, কমলগঞ্জের ইউএনও মহোদয় মানুষের জন্য দিনরাত কাজ করেছেন। যেকোনো সময় কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক মানুষকে সাহায্য করেছেন। ইউএনও মহোদয়কে আমরা সবসময় কাছে পেয়েছি। বন্যার সময় আমাদেরকে সাথে নিয়ে সারা উপজেলায় কাজ করেছেন। তিনি কমলগঞ্জে আসার পর থেকে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করে মানুষের কাছে জনবান্ধব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হয়ে উঠেছেন।
 
কমলগঞ্জের বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ইউএনও হিসেবে কমলগঞ্জ ছিল আমার প্রথম স্টেশন। বৈচিত্র্যময় এই উপজেলায় দীর্ঘ ১৬ মাস কাজ করেছি। এখানকার মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আমি মুগ্ধ। আমার কাজে সবাই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। দায়িত্ব পালনে আমি আমার সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার সকল ভালো কাজের কৃতিত্ব কমলগঞ্জের মানুষের। ক্ষণিকের জন্য বিদায় নিলেও সারাজীবন কমলগঞ্জবাসীর কথা মনে থাকবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আমার বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিয়েছে: জেফার

কমলগঞ্জে শেষ কর্মদিবসে কাঁদালেন জনবান্ধব ইউএনও জয়নাল আবেদীন

আপডেট সময় ০৬:৩৪:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
গত বছরের ২০ আগস্ট কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন জয়নাল আবেদীন। যোগদানের পর থেকে তিনি কমলগঞ্জ উপজেলার উন্নয়নে রাত-দিন কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষের যেকোনো সমস্যা সমাধানে তিনি তাৎক্ষণিক ভূমিকা রেখেছেন। শান্তিপ্রিয় কমলগঞ্জ উপজেলাকে দীর্ঘ ১৬ মাস সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে পরিচালনা করেছেন। নিজের সততা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে তিনি সবার মন জয় করে নিয়েছেন। যার ফলে সবার কাছে তিনি জনবান্ধব ইউএনও হিসাবে পরিচিতও লাভ করেছেন।
 
জয়নাল আবেদীন প্রায় ১৬ মাস কমলগঞ্জে দায়িত্ব পালন শেষে বদলিজনিত কারণে বিদায় নিচ্ছেন।
 
গত বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) তাঁর শেষ কর্মদিবসে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি কমলগঞ্জের মানুষের সহযোগিতা আর আন্তরিকতার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লূত হয়ে ওঠেন। এ সময় সরকারি কমকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হাজির হয়েছিলেন। ইউএনওর কথা শুনে তাদের চোখও অশ্রুশিক্ত হয়েছে।
 
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জয়নাল আবেদীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সিলেট ওসমানীনগর উপজেলায় যোগাদান করার কথা রয়েছে।
 
জানা গেছে, গত বছরের ২০ আগস্ট ইউএনও হিসাবে প্রথম কমলগঞ্জ উপজেলায় যোগদান করেন ৩৫ তম বিসিএস ক্যাডার জয়নাল আবেদীন। এখানে যোগদানের পর তিনি ধীরে ধীরে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে আস্থাভাজন হয়ে উঠেন। উপজেলার অসহায় মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল ছিলেন তিনি। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের কাজের পাশাপাশি দিনরাত ছুটে গেছেন সাধারণ মানুষের কাছে। প্রায় ২১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বসবাস এই উপজেলায়। সরকারী সেবা পৌঁছাতে যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানেই ছুটে গেছেন। সরকারি খাসজমি উদ্ধার, নিজ অর্থায়নে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বিদ্যালয় পরিদর্শন, শিক্ষা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণসহ প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। পর্যটন সমৃদ্ধ উপজেলা হওয়ায় পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন।
 
সম্প্রতি উপজেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র মাধবপুর লেকে “আই লাভ কমলগঞ্জ” নামে একটি দৃষ্টিনন্দন বোর্ড স্থাপন করছেন যা এই লেকের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বই মেলা ও পিঠা উৎসবের আয়োজন করে বাঙালি সংস্কৃতি মেলে ধরেছেন। ২০২৪ সালে ভয়াবহ বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। খেলাধুলার প্রসারে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ফুটবলসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করছেন। উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানের নারসামা রেলী নামে একজনকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। 
 
ইউএনও জয়নাল আবেদীনের পৃষ্ঠপোষকতায় লোকসংস্কৃতি বিষয়ক সংকলনগ্রন্থ আরণ্যক নামে একটি বই প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে তাৎক্ষণিক ভূমিকা রেখেছেন। উপজেলায় শিক্ষা, সংস্কৃতি বিস্তার, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির পথচলা সহজ করতে সময় সময় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন দূর্যোগের সময়ে সরকারি সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন জনবান্ধব ইউএনও জয়নাল আবেদীন। 
 
কমলগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষজন বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সবসময় পাশে পেয়েছি। যেকোনো দুর্যোগের সময়ে দিনরাত সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন। সততা, আদর্শ ও কর্মদক্ষতায় মানুষের মন জয় করেছে তিনি। সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী, প্রতিবন্ধী ও বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির হতদরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যারাই তাঁর কাছে এসেছেন, তাদের সমস্যা শুনে সমাধান করার চেষ্টা করেছেন। যেই কোনো কাজে যতবারই ফোন করেছে, ততবার ফোন রিসিভ করেছেন। উনার দরজা সাধারণ মানুষের জন্য সবসময় খোলা ছিল। উনার চলে যাওয়া শুনে উপজেলার সাধারণ মানুষ আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছেন।
 
মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস খান বলেন, ইউএনও মহোদয় উপজেলায় শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করছেন। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নিজ অর্থায়নে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করছেন। উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার সার্বিক অবস্থার খোঁজ রাখতেন। বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিক্ষা কার্যক্রমে যখন যা প্রয়োজন তা পূরণ করার চেষ্টা করেছেন। সত্যি তিনি একজন শিক্ষাবান্ধব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। 
 
মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ আহমেদ তরফদার ও পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, কমলগঞ্জের ইউএনও মহোদয় মানুষের জন্য দিনরাত কাজ করেছেন। যেকোনো সময় কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক মানুষকে সাহায্য করেছেন। ইউএনও মহোদয়কে আমরা সবসময় কাছে পেয়েছি। বন্যার সময় আমাদেরকে সাথে নিয়ে সারা উপজেলায় কাজ করেছেন। তিনি কমলগঞ্জে আসার পর থেকে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করে মানুষের কাছে জনবান্ধব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হয়ে উঠেছেন।
 
কমলগঞ্জের বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, ইউএনও হিসেবে কমলগঞ্জ ছিল আমার প্রথম স্টেশন। বৈচিত্র্যময় এই উপজেলায় দীর্ঘ ১৬ মাস কাজ করেছি। এখানকার মানুষের ভালোবাসা পেয়ে আমি মুগ্ধ। আমার কাজে সবাই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। দায়িত্ব পালনে আমি আমার সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার সকল ভালো কাজের কৃতিত্ব কমলগঞ্জের মানুষের। ক্ষণিকের জন্য বিদায় নিলেও সারাজীবন কমলগঞ্জবাসীর কথা মনে থাকবে।