কর্মস্থল বগুড়ায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন প্রেমিক হৃদয় কর্মকার (৩০)। এমন খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গ্যাস ট্যাবলেট (চালের পোকা নিধনের বিষাক্ত ওষুধ) খেয়ে প্রাণ দিয়েছেন প্রেমিকা সুদীপ্তা দাস কেকা (২৬)। তবে মেয়ের পরিবার বিষয়টি স্বীকার করছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। এখানে ত্রিভুজ সম্পর্কের ঘটনা থাকতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।
গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শাহজাদপুর পৌরসভার সাহাপাড়া মহল্লায় সুদীপ্তা দাস কেকার মৃত্যু হয়। এর আগে সোমবার গভীর রাতে তার প্রেমিক হৃদয় কর্মকার বগুড়ায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন।
বিষয়টি বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়।
হৃদয় কর্মকার শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ এলাকার বিকাশ কর্মকারের ছেলে। তিনি বগুড়ায় একটি ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে সুদীপ্তা দাস কেকা শাহজাদপুর পৌরসভার সাহাপাড়া মহল্লার অতল কৃষ্ণ দাসের মেয়ে। তিনি শাহজাদপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও সংগীত শিল্পী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় প্রেমিক হৃদয় কর্মকারের মৃত্যুর খবর শুনে নিজ বাড়িতে গ্যাস ট্যাবলেট খান সংগীত শিল্পী সুদীপ্তা দাস কেকা। পরে পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে তাকে দ্রুত স্থানীয় পিপিডি হাসপাতালে নিলে তারা কেকাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাতে বলেন। পরবর্তীতে সেখানে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে বিকালে তিনি মারা যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হৃদয় কর্মকার বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও সুদীপ্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তবে সুদীপ্তাকে বুঝতে দেননি যে তিনি বিবাহিত। হৃদয়ের কর্মস্থল বগুড়ায় হওয়ায় সুদীপ্তা মাঝে মধ্যেই সেখানে গিয়ে দেখা করতেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় দু’জনেই প্রাণ দিয়ে থাকতে পারেন।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম আলী বলেন, বগুড়ায় প্রেমিকের মৃত্যুর খবর শুনে প্রেমিকা বাড়িতে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলেই আমরা জানতে পেরেছি। পরে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুদীপ্তা দাস কেকা মারা যান। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান বাংলাদেশ সময়কে বলেন, আমরাও জানতে পেরেছি যে ত্রিভুজ সম্পর্কের জেরে কেকা আত্মহত্যা করেছেন। তবে তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি স্বীকার করছে না। তারা বলছেন, কেকা দেরীতে ঘুম থেকে ওঠায় আমরা তাকে বকাবকি করতাম। এই কারণে কেকা তার পরিবারের ওপর অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।