ঢাকা ১০:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
হাসান আরিফের মৃত্যুতে শোক জানালেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার গভীর শোক দেড় মাসে দেশে ৫০ হাজার কেজি পলিথিন জব্দ: পরিবেশ মন্ত্রণালয় বড়লেখায় এক মাস পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি, অবশেষে র‍্যাব হাতে গ্রেফতার ঘাতক ছেলে লাউয়াছড়া বন থেকে মূল্যবান সেগুন গাছ চুরি করিমগঞ্জে ২৬০ পিস ইয়াবাসহ একজন গ্রেফতার কুড়িগ্রামে ফুল শিক্ষাবৃত্তি পরিদর্শন করলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমীন নারী অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত তিন খাতের উন্নয়নে ১১৬ কোটি ডলারের অর্থায়ন অনুমোদন করলো বিশ্বব্যাংক উপদেষ্টা হাসান আরিফ মারা গেছেন কিশোরগঞ্জে ছাত্র আন্দোলনে হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা বোরহান গ্রেফতার হোসেনপুরে পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত অর্ধশতাধিক; আতঙ্কে স্থানীয়রা

শ্রীমঙ্গলে মজুমদার নার্সিং হোমে গাফিলতির কারণে নবজাতকের মৃত্যুবরণ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মজুমদার নার্সিং হোমে চিকিৎসা অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রেগন্যান্সির ৯ মাসে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য এই ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিলেন এক প্রসূতি। চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে তার সন্তান শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে।

জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর ভাড়াউড়া মো. আলী ফরহাদের স্ত্রী জুলেখা আক্তার লিজা (২৮) গর্ভাবস্থায় ডা. নিশীত নন্দী মজুমদারের কাছে সিজার অপারেশনের বিষয়ে পরামর্শ নিতে যান। স্বাস্থ্য ও ওজন বেশি হওয়ায় সিজার করাতে সক্ষম কিনা, তা জানতে চাইলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় টেস্ট ও আলট্রাসোনোগ্রামের পর ১২ ডিসেম্বর সিজারের তারিখ নির্ধারণ করেন।

১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চূড়ান্ত চেকআপের পর ১২ তারিখ সকালে প্রসূতিকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অপারেশনের প্রস্তুতির সময় প্রস্রাবের নল বসানোর জন্য সুইপার পাঠানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, সুইপারের মাধ্যমে এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করানো চিকিৎসা অবহেলার নজির। এরপর নার্স শিল্পী এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়ার পর প্রসূতির শরীরে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

প্রসূতির অভিযোগ, সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতককে বের করতে ডাক্তার ও নার্সরা অতিরিক্ত ফান্ডাল প্রেসার প্রয়োগ করেন এবং পেটের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে নবজাতককে বের করেন। অভিযোগ, চিকিৎসক দল যথাযথ নিয়ম না মেনে অপারেশন করেন। অপারেশনের পর দেখা যায় নবজাতক কোনো সাড়া দিচ্ছে না। তাকে মৌলভীবাজার সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায়, নবজাতক শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছে।

মজুমদার নার্সিং হোমের চিকিৎসক ও নার্সদের অদক্ষতা এবং দায়িত্বহীন আচরণ প্রসূতির পরিবারের ক্ষোভের প্রধান কারণ। প্রসূতির স্বামী ডাক্তারের কাছে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি এড়িয়ে যান এবং রোগীর স্থূলতাকে দোষারোপ করেন।

নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সুইপার দিয়ে প্রস্রাবের নল বসানো, অপারেশনে ত্রুটি এবং পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় গাফিলতির কারণে মজুমদার নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।

ডা. নিশীত নন্দী মজুমদার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বাচ্চা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়নি। অন্য কোনো সমস্যার কারণে মারা যেতে পারে। আমরা তো সবসময়ই সিজার করি। আমরাই কি সবসময় ভুল চিকিৎসা করি? ডা. রাফি ওটিতে আমার সাথে ছিলো। আপনি উনার সাথে কথা বলেন।

উল্লেখ্য, গত  ৯ অক্টোবর প্রসূতি সাবিনা (২৩) উপজেলার আশীদ্রোন ইউনিয়নের রামনগর এলাকার পরিবহন শ্রমিক মো. নুর হোসেনের স্ত্রী এই প্রতিষ্ঠানের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন।

স্থানীয়রা মনে করছেন, এমন দুঃখজনক ঘটনা আরও ঘটতে পারে, তাই মৌলভীবাজার জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের উচিত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা। স্বাস্থ্যসেবায় গাফিলতি ও চিকিৎসকদের অদক্ষতার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত তদারকি ও কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানাচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার।

জনপ্রিয় সংবাদ

হাসান আরিফের মৃত্যুতে শোক জানালেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল

শ্রীমঙ্গলে মজুমদার নার্সিং হোমে গাফিলতির কারণে নবজাতকের মৃত্যুবরণ

আপডেট সময় ০৩:২৬:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মজুমদার নার্সিং হোমে চিকিৎসা অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রেগন্যান্সির ৯ মাসে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য এই ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিলেন এক প্রসূতি। চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে তার সন্তান শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে।

জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর ভাড়াউড়া মো. আলী ফরহাদের স্ত্রী জুলেখা আক্তার লিজা (২৮) গর্ভাবস্থায় ডা. নিশীত নন্দী মজুমদারের কাছে সিজার অপারেশনের বিষয়ে পরামর্শ নিতে যান। স্বাস্থ্য ও ওজন বেশি হওয়ায় সিজার করাতে সক্ষম কিনা, তা জানতে চাইলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় টেস্ট ও আলট্রাসোনোগ্রামের পর ১২ ডিসেম্বর সিজারের তারিখ নির্ধারণ করেন।

১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চূড়ান্ত চেকআপের পর ১২ তারিখ সকালে প্রসূতিকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। অপারেশনের প্রস্তুতির সময় প্রস্রাবের নল বসানোর জন্য সুইপার পাঠানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, সুইপারের মাধ্যমে এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করানো চিকিৎসা অবহেলার নজির। এরপর নার্স শিল্পী এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়ার পর প্রসূতির শরীরে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

প্রসূতির অভিযোগ, সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতককে বের করতে ডাক্তার ও নার্সরা অতিরিক্ত ফান্ডাল প্রেসার প্রয়োগ করেন এবং পেটের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে নবজাতককে বের করেন। অভিযোগ, চিকিৎসক দল যথাযথ নিয়ম না মেনে অপারেশন করেন। অপারেশনের পর দেখা যায় নবজাতক কোনো সাড়া দিচ্ছে না। তাকে মৌলভীবাজার সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায়, নবজাতক শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছে।

মজুমদার নার্সিং হোমের চিকিৎসক ও নার্সদের অদক্ষতা এবং দায়িত্বহীন আচরণ প্রসূতির পরিবারের ক্ষোভের প্রধান কারণ। প্রসূতির স্বামী ডাক্তারের কাছে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি এড়িয়ে যান এবং রোগীর স্থূলতাকে দোষারোপ করেন।

নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সুইপার দিয়ে প্রস্রাবের নল বসানো, অপারেশনে ত্রুটি এবং পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় গাফিলতির কারণে মজুমদার নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।

ডা. নিশীত নন্দী মজুমদার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বাচ্চা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়নি। অন্য কোনো সমস্যার কারণে মারা যেতে পারে। আমরা তো সবসময়ই সিজার করি। আমরাই কি সবসময় ভুল চিকিৎসা করি? ডা. রাফি ওটিতে আমার সাথে ছিলো। আপনি উনার সাথে কথা বলেন।

উল্লেখ্য, গত  ৯ অক্টোবর প্রসূতি সাবিনা (২৩) উপজেলার আশীদ্রোন ইউনিয়নের রামনগর এলাকার পরিবহন শ্রমিক মো. নুর হোসেনের স্ত্রী এই প্রতিষ্ঠানের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন।

স্থানীয়রা মনে করছেন, এমন দুঃখজনক ঘটনা আরও ঘটতে পারে, তাই মৌলভীবাজার জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের উচিত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা। স্বাস্থ্যসেবায় গাফিলতি ও চিকিৎসকদের অদক্ষতার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত তদারকি ও কঠোর আইন প্রয়োগের দাবি জানাচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার।