মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল রাজঘাট ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল আত্মসাতের অভিযোগ।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাজঘাট ইউপির ২নং ওয়ার্ডে অতি দরিদ্রদের জন্য সরকারের ভর্তুকির ১৫ টাকা কেজির “খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর” চাল বিতরণ না করে ইউপি সদস্য দীর্ঘদিন ধরে নিজেই করছেন আত্মসাৎ এমন অভিযোগ উঠেছে রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম হকের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার ( ১৯ সেপ্টেম্বর ) শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন রাজঘাট ইউনিয়নের ৪ জন নারী ভুক্তভোগী চা শ্রমিক।
অভিযোগে জানা যায়, ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তাদের নাম তালিকায় থাকা সত্ত্বেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর এই চাল না দিয়ে তিনি নিজেই আত্মসাৎ করছেন। এমনকি চালের কার্ড পর্যন্ত তিনিই তাদেরকে দেন। অতি দরিদ্রদের এসব চাল তার মনগড়া আত্মীয় স্বজনদের নাম তালিকায় দেখিয়ে তিনি নিজেই করছেন দীর্ঘদিন ধরে মোটা অংকে টাকায় দোকানে বিক্রি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৭নং রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ২ং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম হক আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে খাদ্যবান্ধব চালের ডিলারশিপ এনেছেন তার আপন বড় ভাইয়ের ছেলে ফয়েজের নাম ব্যবহার করে। আর পরিচালনার ভার গ্রহণ করছেন তিনি নিজেই। আর এসব চাল তার বাসার ভিতর নিয়মিত গেইট আটকিয়ে কিছু সংখ্যক মানুষের মাঝে বিতরণ করে সিংহভাগ চালের বস্তাগুলো করছেন উধাও। যার ফলে ১৫ টাকার কেজির চাল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত দরিদ্ররা। আর সুবিধা পাচ্ছে ইউপি সদস্য নিজে।
অথচ দেশের অতি দরিদ্র পরিবারের খাদ্য সমস্যার কথা চিন্তা করে এই ১৫ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি শুরু হয়। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য মহৎ হলেও দুর্নীতির কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান এলাকার ভুক্তভোগী মানুষ। এছাড়াও এলাকার ৪জন নারী চা শ্রমিক- মঙ্গলা তাঁতী, বিনতা তাঁতী, সত্য তাঁতী ও হাসিনা বেগম জানান, তাদের নামে রয়েছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর কার্ড, তালিকায় রয়েছে তাদের নাম। নিয়মিত চাল উঠানো হলেও আমরা চালের দেখা পাইনি। আমাদের চালের কার্ডটি পর্যন্ত সেলিম মেম্বার দেন। কার্ডের জন্য তার বাড়ীতে গেলে নানান অজুহাত দেখিয়ে আমাদেরকে বিদায় করে দেন। গরীবদের হক নিয়ে যারা নয় ছয় করে, দুর্নীতি করে, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। অচিরেই যেনো সুষ্টু তদন্ত করে ইউপি সদস্যের এই অবৈধ বেনামী খাদ্যবান্ধব ডিলারশিপ বাতিলসহ উনাকে আইনের আওতায় নেওয়া হয় এমন দাবী তাদের।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু তালেব বলেন, ‘আমি অভিযোগ পেয়েছি রাজঘাট ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার সেলিম হকের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দিবো না। আমি রাজঘাটের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে তদন্ত কমিটি গঠন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।’