শীতের তীব্রতা একটু একটু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতে কমছে তাপমাত্রা। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে সর্দি-জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ নানান রোগী আক্রান্তরা চিকিৎসা নিতে আসছেন প্রতিদিন। দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্করা। উপজেলার হাসপাতগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি।
সরেজমিনে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় অনেক শিশুকে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন অভিভাবকরা। সকাল থেকেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগের সামনে দীর্ঘ লাইন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে শিশুদের কোলে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন অভিভাবকরা।
অপরদিকে শিশু ওয়ার্ডে রোগী পরিপূর্ণ। কেউ শিশুকে ওষুধ খাওয়াচ্ছেন, কেউবা কোলে নিয়ে বসে আছেন। এমনই দৃশ্য দেখা যায় হাসপাতালে।
কোম্পানিগঞ্জ নগরপাড় এলাকা থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশু সন্তান নাজিফাকে নিয়ে হাসপাতালে আসা মা আছমা আক্তার বলেন, শীতের শুরু থেকেই নাজিফার শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও কাশি ছিল। তিনি সন্তানকে নিয়ে ৪দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
শিশু বাচ্চাকে কোলে নিয়ে হাসপাতালের বেডে বসে থাকা রহিমপুর গ্রামের রত্না আক্তার জানান, বাচ্চার পাতলা পায়খানা হওয়ার পর দুইদিন আগে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ডাক্তার শিশুটিকে ভর্তি দেন। এখন অনেকটা ভালো আছে।
পাশের বেডেই শিশু সন্তান তাবাসসুমকে ওষুধ খাওয়াচ্ছেন মুরাদনগর সদরের আকলিমা আক্তার। তিনি বলেন, হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার বলেছেন নিউমোনিয়া হয়েছে। সেজন্য ভর্তি করেছি। ডাক্তার নিয়মিত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মুরাদনগরে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে হাসপাতালে শীতকালীন রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা এখন বেশি। হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে আসা শিশুদের বেশিরভাগই জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, নিউমোনিয়া এবং কোল্ড ডায়রিয়ায় ভোগছে। জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের পরিস্থিতি বুঝে ভর্তি এবং বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক বলেন, শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। এসব রোগ প্রতিরোধে শিশুদের খুব সাবধানে রাখতে হবে। যতটা পারা যায় সব বয়সের মানুষকে ঘরে থাকতে হবে। ঘরের বাইরে গেলে যথাযথ পোশাক পরতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিহিস্টামিন ও অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো যাবে না। শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে।