মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে লোকবল ও চিকিৎসক সংকট। এর মধ্যে আবার জুনিয়র কনসালটেন্টসহ ১০ জন দীর্ঘদিন ধরে ডেপুটেশনে (প্রেষণ) অন্যত্র থাকায় ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা। বছরের পর বছর তারা মূল কর্মস্থল ফাঁকা রেখে অন্যত্র কাজ করে মাস শেষে শুধু বেতন-ভাতা নিতে আসেন কুলাউড়ার কর্মস্থলে।
জানা যায়, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় সরকারি হিসাবে প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। স্বাস্থ্যসেবার জন্য তারা ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওপরই নির্ভরশীল। বর্তমানে বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। জরুরি বিভাগেও রোগী আসেন শতাধিক। আবার গড়ে প্রতিদিন ৭০ জনের মতো রোগী ভর্তি থাকেন এখানে।
হাসপাতালে চিকিৎসকের ২১টি পদ থাকলেও রয়েছেন ১৩ জন। এই অবস্থার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ৩ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট, ১ জন ইউনিয়ন মেডিকেল অফিসার, ১ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স, ক্যাশিয়ার, কম্পাউন্ডার, ওটি বয় ও ২ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ মোট ১০ জন প্রেষণে রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেওয়ার পর থেকেই জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. সাদেকুল আলম (অর্থো: সার্জারি), ডা. মাসউদুর রহমান, সিনিয়র স্টাফ নার্স মেডিকেল বারে, ওটি বয় সনজিত চন্দ্র পাল, পরিচ্ছন্নতাকর্মী রেশমা বেগম ও রীতা রানী এবং পৃথিমপাশা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. খাদিজা আক্তার প্রেষণে কর্মরত রয়েছেন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে।
আর জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেসিয়া) ডা. আমিনুল ইসলাম প্রেষণে কর্মরত রয়েছেন সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে। ক্যাশিয়ার পাপিয়া আক্তার প্রেষণে কর্মরত রয়েছেন কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কম্পাউন্ডার রতেশ্বর শীল প্রেষণে কর্মরত রয়েছেন রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। নিজেদের সুবিধার জন্য যোগদানের পর থেকে দীর্ঘদিন প্রেষণে থেকে নিজ নিজ পদের বিপরীতে কাজ করছেন।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান বলেন, চিকিৎসক প্রেষণে চলে যাওয়া হাসপাতালের জন্য বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করে। নতুন লোকবলও দেওয়া যায় না। আমি এ জেলায় নতুন এসেছি। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য অথবা পদগুলো শূন্য করে নতুন নিয়োগ দেওয়ার জন্য দ্রুত মন্ত্রণালয় এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেবো।