সার্বিয়ায় সরকারের দুর্নীতি ও অদক্ষতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এখন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। গত নভেম্বরে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে এবার জনসাধারণও যোগ দিয়েছে। ছাত্রদের আহ্বানে শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় সংসদের সামনে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তবে তার আগেই, শুক্রবার সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী একত্রিত হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকা তাদের দখলে চলে গেছে। প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিচের বিরুদ্ধে বিশাল সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অঘোষিতভাবেই শুরু হয়ে গেছে।
অবরোধকারী ছাত্র আন্দোলন ইনস্টাগ্রামে ঘোষণা দিয়েছে যে, শহরজুড়ে তাদের মার্চের বিস্তারিত সময়সূচি পরে প্রকাশ করা হবে। তাদের পোস্টে সংসদ ভবনের একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে, কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় সার্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নোভি সাদে একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জনের মৃত্যুর পর। আন্দোলনকারীদের দাবি, এই দুর্ঘটনার জন্য সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাই দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভে চাপে পড়েছে প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুসিচের সরকার।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, বিগত কয়েক মাস ধরে শিক্ষার্থীরা সড়ক ও সেতু অবরোধ করে রেখেছে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ করেছে। তারা শুধু দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি চায় না, বরং সার্বিয়ার সরকারি দপ্তরগুলোতে দুর্নীতি ও অদক্ষতার অবসানও দাবি করছে।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে কৃষকরাও সমর্থন জানিয়েছে এবং ট্রাক্টর নিয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে। শহরের প্রধান সড়ক ও সেতু অবরোধের ফলে স্থানীয়দের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, তারা তাদের দাবিতে অটল থাকবে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পিছু হটবে না।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে জনতার অংশগ্রহণ বাড়তে থাকায় আন্দোলনকারীরা আশা করছেন, শনিবারের সমাবেশে গণবিস্ফোরণ ঘটবে।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোসি ভুকেভিক পদত্যাগ করেন। গত ২৮ জানুয়ারি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে তিনি জানান, দেশে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, ‘আবেগ শান্ত করে সংলাপে ফিরে আসুন।’