ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে একটি চুক্তির শর্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য নিজেদের দাবিনামা পেশ করেছে রাশিয়া। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুই ব্যক্তি রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কো তাদের তালিকায় কী কী অন্তর্ভুক্ত করেছে, তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাশিয়া প্রস্তুত কি না, সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সূত্রের বরাত দিয়ে জানানো হয়, রুশ ও মার্কিন কর্মকর্তারা তিন সপ্তাহ ধরে ব্যক্তিগতভাবে ও ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়েছেন এবং এই সময়েই রাশিয়ার শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাশিয়ার নতুন দাবিগুলো মূলত তাদের আগের দাবির পুনরাবৃত্তি, যা তারা ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে উত্থাপন করেছিল।
রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী, ইউক্রেনকে কখনোই ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া যাবে না, ইউক্রেনে কোনো বিদেশি সেনা মোতায়েন করা যাবে না এবং ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের চারটি দখলকৃত অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। পাশাপাশি, ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণ বন্ধ করা এবং রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য আলোচনা করা জরুরি।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্রেমলিনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা শত্রুতা বন্ধের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। তবে এটি এমন হতে হবে, যাতে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সংকটের মূল কারণগুলো দূর করা যায়।”
২০২৪ সালের মাঝামাঝি থেকে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, তিনি ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান চান। গত বুধবার (১৩ মার্চ) হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক বক্তব্যে ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেন যে, ক্রেমলিন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাবে সম্মত হবে। ইউক্রেন ইতোমধ্যে এই প্রস্তাব সমর্থন করেছে। এখন দেখার বিষয়, রাশিয়া তাদের অবস্থান কতটা নমনীয় করে এবং এ সংঘাত সমাধানের জন্য বাস্তব পদক্ষেপ নেয় কি না।