মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতা ও মামলার আসামি প্রার্থী হওয়ার প্রতিবাদে জেলা বারের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। নির্বাচনে প্রার্থীতা থেকে তাকে অপসারণের দাবিতে এক ঘন্টার আল্টিমেটামও দিয়েছেন উপস্থিত ছাত্র-জনতা। এ ঘটনায় জরুরী সভার পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে আইজীবী সমিতির নির্বাচন পরিচালনার দ্বায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পরপরই আওয়ামীলীগ নেতা আজাদুর রহমান সভাপতি পদে প্রার্থী হচ্ছেন এমন খবর সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশের পর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে অবস্থান করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীরা। এ সময় জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট জি.পি মামুনুর রশীদকে একঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় ছাত্র-জনতা।
আন্দোলনকারী শাহাব উদ্দিন বাবলু বলেন, এখানে আগামীকাল আইনজীবী সমিতির নির্বাচন হবে, এখানে আওয়ামী লীগের এজেন্ট, আওয়ামী লীগের দোসর, কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এএসএম আজাদুর রহমান, তিনি একজন পদধারী আওয়ামীলীগের নেতা। বিগত আন্দোলনে তিনি আমাদের বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্থ করেছেন। উনি সভাপতি প্রার্থী। সুতরাং আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ সাধারণ জনতা এসেছি উনাকে এই নির্বাচন থেকে অপসারণ করার জন্য। নির্বাচন কমিশন আমাদের কাছ থেকে একঘন্টা সময় নিয়েছেন। উনার সিদ্ধান্তের জন্য আমরা অবস্থানরত আছি।
জি.পি এডভোকেট মামুনুর রশীদ বলেন, ছাত্রদের মূল সমস্যা আওয়ামী দোসর ফ্যাসিস্টের লিস্টেড লোক তিনি আওয়ামী লীগ হিসেবে পরিচিত, তিনি এখানে কেনো নির্বাচন করবে। তাদের কথা আমাদের লোকজনকে যেভাবে হামলা করেছে, ওই ফ্যাসিস্টের লোকজন কেন নির্বাচনে আসবে? তিনি একটি মামলার আসামি। তবে বৈষম্যবিরোধী কোনো মামলার আসামি তিনি নন। আমরা বারের লোকজনকে ডেকেছি। তাদের প্রশ্ন ছিল, যদি তাকে নিয়ে আপনারা এভাবে নির্বাচন করেন, আর আগামীকাল কোনো কিছু ঘটে। এটার দায়-দায়িত্ব আপনারা নিবেন, আমরা নিতে পারবো না। আমি তখন বললাম, আমরা দায়-দায়িত্ব নিতে পারবো না। আমি কেন দায়-দায়িত্ব নিবো? আমি নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য সদস্যদের ডেকেছি। তাদের সাথে বসে আমরা সিদ্ধান্ত জানাবো। আমরা চাচ্ছি না এটাকে কেন্দ্র করে কোনো হট্টগোল হোক। প্রয়োজনে নির্বাচন স্থগিত করবো। আমরা এখনই আলোচনায় বসে নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ওই নির্বাচনে সভাপতি পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন এএসএম আজাদুর রহমান ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা এডভোকেট মিজানুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপির দেলোয়ার হোসেন ও এডভোকেট জয়নুল হক। সহ-সাধারণ সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন, জুনিয়র সদস্য পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সিনিয়র সদস্য ২ জন হলেন মহিউদ্দিন মানিক ও কমিউনিস্ট পার্টির ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস, সহ-সভাপতি দুইজন এডভোকেট গিয়াসউদ্দিন আহমেদ মজনু ও বিএনপির শাহ আখলাকুল আম্বিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।