ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে প্রকাশিত স্মারক গ্রন্থ ‘জুলাই ২০২৪ বিপ্লবের শহীদ: ২য় স্বাধীনতায় শহীদ যারা’- এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
তিনি শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, আল্লাহর পথে যারা শহীদ হন, দেশের জন্য যারা জীবন দেন, দেশের মানুষকে অন্যায় অসত্য, মিথ্যার অপশাসন থেকে মুক্ত করার জন্য যারা জীবন দেন তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা কালামে হাকীমে শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হচ্ছে পবিত্র কুরআন। এই কুরআনে মর্যাদার দিক থেকে দু’টো শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। একটি হচ্ছে নবুয়ত আর একটি হচ্ছে শাহাদাত। নবুয়তের দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর কোনো নবী আসবেন না কিয়ামত পর্যন্ত। কিন্তু শাহাদাতের দরজা খোলা রাখা হয়েছে। কারণ শহীদ যদি না হন তাহলে অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম সে সংগ্রাম চলবে না। আর শহীদদের মর্যাদা আল্লাহ তায়ালা নবীদের পরেই রেখেছেন। অনেক নবীর মৃত্যুকে আল্লাহ তায়ালা মৃত্যু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। হযরত ইয়াকুব (আ.) এর মৃত্যুকে মৃত্যু হিসেবে বলা হয়েছে। আবার শহীদদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে যারা আল্লাহর পথে জীবন দেয় তাদেরকে তোমরা মৃত বলো না। তাহলে নবীর মৃত্যু কিন্তু শহীদদের মৃত্যু। আল্লাহ তায়ালা মৃত্যু বলতে নিষেধ করেছেন, তারা জীবিত। একজন জীবন্ত মানুষ যেভাবে সবকিছু দেখে রিযিক পায়, হঁটাচালার সুযোগ পায়, আর শহীদরা সেটাই পায়। কিন্তু তোমরা সেটা উপলব্ধি করতে পারো না।
মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা কামরুল আহসান এমরুলের সভাপতিত্বে মহানগর সেক্রেটারী অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সারের সঞ্চালনায় চব্বিশের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তথ্য সম্বলিত “২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা” শীর্ষক স্মারক এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আজকে আমরা খুব গর্বিত যে আপনারা কলিজার টুকরা সন্তানকে হারিয়েছেন, কেউ স্বামীকে হারিয়েছেন, কেউ পুত্রকে পারিয়েছেন। কিন্তু বিনিময়ে এই দেশ একটি অপশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। কেউ কল্পনা করতে পারেনি গত সাড়ে ১৫ বছরের জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা শাসন থেকে মুক্তি পাবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই সন্তানদের রক্তের বিনিময়ে দেশকে মুক্ত করেছেন। আল্লাহ তায়ালা এদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশের আকাশ, বাতাস, জমিনে কুরআনের আওয়াজ উচ্চারণ করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ময়মনসিংহের ছাত্র-জনতা। শহীদের স্মৃতি বিজড়িত এই ময়মনসিংহ সদর আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের ছাত্রজনতাকে সাথে নিয়ে প্রাণান্তকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও ময়মনসিংহ অঞ্চল পরিচালক ড. সামীউল হক ফারুকী বলেন, ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতের আমীর ও ময়মনসিংহ অঞ্চল টিম সদস্য মো. আবদুল করিম, জেলা জামায়াতের নায়েবের আমীর অধ্যক্ষ মু. কামরুল হাসান মিলন, মহানগর নায়েবে আমীর আসাদুজ্জামান সোহেল।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি মাহবুবুল হাসান শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আল হেলাল তালুকদার, বায়তুলমাল সম্পাদক গোলাম মহসীন খান, কর্মপরিষদ সদস্য খন্দকার আবু হানিফ, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারীসহ মহানগরের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।