ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
IRIDP-3 প্রকল্পে সহকারী প্রকৌশলী মো: জাকির হোসেনের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান প্রকাশিত সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ এলজিইডি সংশ্লিষ্ট কেউ অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ,প্রধান প্রকৌশলী রুটিন দায়িত্ব ,এলজিইডি সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের পল্লীতে বন্দুক যুদ্ধে ১১জন গুলিবিদ্ধসহ আহত ২৫ বকশিগঞ্জে ৩ কেজি গাজা সহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি- ২ ইসকন নেতা চিন্ময়ের জামিন শুনানির তারিখ পরিবর্তন: আন্দোলন ও বিক্ষোভ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপি’র কর্মীসভা অনুষ্ঠিত নবীনগরে টিকটক করতে গিয়ে কলেজ ছাত্র নিহত আত্মগোপনে থেকেও সাবেক এমপি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের ক্ষমতার দাপটে অনুমতি ছাড়াই কাটা হচ্ছে মাটি-বালু আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে অনুষ্ঠিত গাজীপুর কাপাসিয়ায় চাঁদা না দেওয়ায় বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট, বাড়ি ছাড়া পরিবার গাজীপুরে বিকাশ এজেন্টকে কুপিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই হাইকমিশনে হামলা ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ-মানববন্ধন মাগুরায় কৃষি প্রণোদনার আওতায় বোরো ধানের বীজ বিতরণ মানিকগঞ্জে ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার প্রতিবাদে ক্যাব এর মানববন্ধন

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত-অন্য দলের যত হিসাব

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা স্পষ্ট নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে সে বিষয়ে কোনো দিনক্ষণ ঠিক করে দেয়া হয়নি। এর মধ্যেই রাজনীতিতে একটা আলোচনা উঠেছে নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবি, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদের মতো বিভিন্ন দল একে সমর্থন করছে। অন্যদিকে শুরু থেকেই এর বিরোধিতায় আছে বিএনপি।

আনুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষে দলগুলোর যে অবস্থান সেখানে রাজনীতি তো বটেই, ভোটের নানা সমীকরণও মেলাচ্ছেন অনেকে। আলোচনা আছে, নতুন পদ্ধতিতে যদি নির্বাচন হয় তাহলে সেটা কোনো দলকে লাভবান করবে, আর কোনো দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাংলাদেশে এখন যে প্রচলিত নির্বাচন সেখানে ৩০০ আসনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী থাকে। ভোটারদের ভোটে তারা সরাসরি নির্বাচিত হন। কিন্তু এই ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে এখন মতামত দেয়া হচ্ছে আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করার। যেখানে সারাদেশে একটা দল যতো ভোট পাবে, তার আনুপাতিক হারেই নির্ধারিত হবে সংসদে ঐ দলটি কত আসন পাবে।

অর্থাৎ, এখানে সরাসরি জনগণের ভোটে কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হবেন না। কোনো একটি দল যদি শতকরা ৪০ শতাংশ ভোট পায় তাহলে সংসদে তার আসন হবে ১০০ আসনের মধ্যে ৪০টি। বাংলাদেশে অতীতে প্রচলিত সংসদীয় পদ্ধতির নির্বাচনে এর সুফল পেয়েছে প্রধানত বড় দুটি দল বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ। নির্বাচনগুলোতে জয়-পরাজয়ের ভিত্তিতে আসন ভাগাভাগি হওয়ায় যে দল বিজয়ী হয়েছে, তারাই সংসদের বেশিরভাগ আসন পেয়েছে। কিন্তু অনেক আসনেই দেখা যায় জয়ী আর পরাজিত প্রার্থীর ব্যবধান খুবই কম।

বাংলাদেশে নব্বইয়ের দশক থেকে সংসদীয় পদ্ধতি চালুর পর ২০০৮ পর্যন্ত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রধান দু’টি বড় দল তাদের ভোটের হারের তুলনায় আসন বেশি পেয়েছে। এটা বেশি ঘটেছে বিজয়ী দলের ঘটে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি যে ভোট পেয়েছিলো তার শতকরা হার হচ্ছে ৩০.৮১ শতাংশ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোটের হারও প্রায় একইরকম ৩০.০৮ শতাংশ। অথচ বিএনপি জয়ী হয় ১৪০ আসনে, আর আওয়ামী লীগ পায় ৯৩ আসন। অর্থাৎ দুই দলের ভোটের হার অনেকটা একইরকম থাকলেও জয়ী দল বিএনপি সংসদে অনেক বেশি আসন পেয়ে যায়।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আবার এর সুফল পায় আওয়ামী লীগ। দলটি ৩৭.৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় ১৪৬ আসন। অন্যদিকে বিএনপি ৩৩.৬১ শতাংশ ভোট পেলেও আসন পায় ১১৬টি। ২০০১ সালের নির্বাচনেও দুই দলের ভোটের হার ছিলো অনেকটা একই রকম। বিএনপি ৪০.৮৬ শতাংশ ভোট, আওয়ামী লীগ ৪০.২১ শতাংশ ভোট। কিন্তু জয়ী দল বিএনপি প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন অর্থাৎ ১৯৩ আসন পেয়ে যায়। আওয়ামী লীগ পায় ৬২টি। কিন্তু আনুপাতিক নির্বাচন হলে কি দল দুটো এতো আসন পেতো? এর উত্তর হচ্ছে নেতিবাচক।

উদাহারণ হিসেবে ২০০১ সালের নির্বাচনকে রাখলে দেখা যাবে, সেখানে ৪০.৮৬ শতাংশ ভোট পাওয়ায় জয়ী দল বিএনপির আসন হতো ১৯৩টির বদলে সর্বোচ্চ ১২৩টি এবং আসন বাড়তো আওয়ামী লীগের। তারা ৪০.২১ শতাংশ ভোট পাওয়ায় তিনশত আসনের মধ্যে তাদের ভাগে আসতো ১২০টি আসন। সেক্ষেত্রে সংসদে দুই দলই থাকতো প্রায় সমান সমান অবস্থায়। ফলে বিশ্বব্যাপী এটা বলা হয় যে, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনে জয়ী দলের আসন কমবে অন্যদিকে ছোট দলগুলো তুলনামূলক বেশি আসন পাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ তিনটি নির্বাচন বাদ দিয়ে এর আগের নির্বাচনগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখায় জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য ইসলামী দলগুলো সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে লাভবান হবে।

ছাত্ররা যদি এখন নতুন কোনো দল তৈরি করে, তারা যদি ভোট পায়, তাহলে আনুপাতিক নির্বাচনে এই দলগুলো ভালো করবে। কারণ এখানে হবে আনুপাতিক নির্বাচন। এক ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হলেই ঐ আসনটি আপনার সেটা আর থাকছে না। ফলে আগের হিসাবে যে দল জয়ী হতো তার আসন কমে যাবে, সেগুলো পাবে অন্য দলগুলো তাদের ভোটের হার অনুযায়ী, বলেন জোবাইদা নাসরীন।

সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আনুপাতিক নির্বাচনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

IRIDP-3 প্রকল্পে সহকারী প্রকৌশলী মো: জাকির হোসেনের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান

প্রকাশিত সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ

এলজিইডি সংশ্লিষ্ট কেউ অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ,প্রধান প্রকৌশলী রুটিন দায়িত্ব ,এলজিইডি

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের পল্লীতে বন্দুক যুদ্ধে ১১জন গুলিবিদ্ধসহ আহত ২৫

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত-অন্য দলের যত হিসাব

আপডেট সময় ১২:৫৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা স্পষ্ট নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে সে বিষয়ে কোনো দিনক্ষণ ঠিক করে দেয়া হয়নি। এর মধ্যেই রাজনীতিতে একটা আলোচনা উঠেছে নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তনের। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবি, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদের মতো বিভিন্ন দল একে সমর্থন করছে। অন্যদিকে শুরু থেকেই এর বিরোধিতায় আছে বিএনপি।

আনুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে-বিপক্ষে দলগুলোর যে অবস্থান সেখানে রাজনীতি তো বটেই, ভোটের নানা সমীকরণও মেলাচ্ছেন অনেকে। আলোচনা আছে, নতুন পদ্ধতিতে যদি নির্বাচন হয় তাহলে সেটা কোনো দলকে লাভবান করবে, আর কোনো দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাংলাদেশে এখন যে প্রচলিত নির্বাচন সেখানে ৩০০ আসনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী থাকে। ভোটারদের ভোটে তারা সরাসরি নির্বাচিত হন। কিন্তু এই ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে এখন মতামত দেয়া হচ্ছে আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করার। যেখানে সারাদেশে একটা দল যতো ভোট পাবে, তার আনুপাতিক হারেই নির্ধারিত হবে সংসদে ঐ দলটি কত আসন পাবে।

অর্থাৎ, এখানে সরাসরি জনগণের ভোটে কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হবেন না। কোনো একটি দল যদি শতকরা ৪০ শতাংশ ভোট পায় তাহলে সংসদে তার আসন হবে ১০০ আসনের মধ্যে ৪০টি। বাংলাদেশে অতীতে প্রচলিত সংসদীয় পদ্ধতির নির্বাচনে এর সুফল পেয়েছে প্রধানত বড় দুটি দল বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ। নির্বাচনগুলোতে জয়-পরাজয়ের ভিত্তিতে আসন ভাগাভাগি হওয়ায় যে দল বিজয়ী হয়েছে, তারাই সংসদের বেশিরভাগ আসন পেয়েছে। কিন্তু অনেক আসনেই দেখা যায় জয়ী আর পরাজিত প্রার্থীর ব্যবধান খুবই কম।

বাংলাদেশে নব্বইয়ের দশক থেকে সংসদীয় পদ্ধতি চালুর পর ২০০৮ পর্যন্ত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রধান দু’টি বড় দল তাদের ভোটের হারের তুলনায় আসন বেশি পেয়েছে। এটা বেশি ঘটেছে বিজয়ী দলের ঘটে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি যে ভোট পেয়েছিলো তার শতকরা হার হচ্ছে ৩০.৮১ শতাংশ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোটের হারও প্রায় একইরকম ৩০.০৮ শতাংশ। অথচ বিএনপি জয়ী হয় ১৪০ আসনে, আর আওয়ামী লীগ পায় ৯৩ আসন। অর্থাৎ দুই দলের ভোটের হার অনেকটা একইরকম থাকলেও জয়ী দল বিএনপি সংসদে অনেক বেশি আসন পেয়ে যায়।

১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আবার এর সুফল পায় আওয়ামী লীগ। দলটি ৩৭.৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন পায় ১৪৬ আসন। অন্যদিকে বিএনপি ৩৩.৬১ শতাংশ ভোট পেলেও আসন পায় ১১৬টি। ২০০১ সালের নির্বাচনেও দুই দলের ভোটের হার ছিলো অনেকটা একই রকম। বিএনপি ৪০.৮৬ শতাংশ ভোট, আওয়ামী লীগ ৪০.২১ শতাংশ ভোট। কিন্তু জয়ী দল বিএনপি প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন অর্থাৎ ১৯৩ আসন পেয়ে যায়। আওয়ামী লীগ পায় ৬২টি। কিন্তু আনুপাতিক নির্বাচন হলে কি দল দুটো এতো আসন পেতো? এর উত্তর হচ্ছে নেতিবাচক।

উদাহারণ হিসেবে ২০০১ সালের নির্বাচনকে রাখলে দেখা যাবে, সেখানে ৪০.৮৬ শতাংশ ভোট পাওয়ায় জয়ী দল বিএনপির আসন হতো ১৯৩টির বদলে সর্বোচ্চ ১২৩টি এবং আসন বাড়তো আওয়ামী লীগের। তারা ৪০.২১ শতাংশ ভোট পাওয়ায় তিনশত আসনের মধ্যে তাদের ভাগে আসতো ১২০টি আসন। সেক্ষেত্রে সংসদে দুই দলই থাকতো প্রায় সমান সমান অবস্থায়। ফলে বিশ্বব্যাপী এটা বলা হয় যে, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনে জয়ী দলের আসন কমবে অন্যদিকে ছোট দলগুলো তুলনামূলক বেশি আসন পাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ তিনটি নির্বাচন বাদ দিয়ে এর আগের নির্বাচনগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখায় জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য ইসলামী দলগুলো সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে লাভবান হবে।

ছাত্ররা যদি এখন নতুন কোনো দল তৈরি করে, তারা যদি ভোট পায়, তাহলে আনুপাতিক নির্বাচনে এই দলগুলো ভালো করবে। কারণ এখানে হবে আনুপাতিক নির্বাচন। এক ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হলেই ঐ আসনটি আপনার সেটা আর থাকছে না। ফলে আগের হিসাবে যে দল জয়ী হতো তার আসন কমে যাবে, সেগুলো পাবে অন্য দলগুলো তাদের ভোটের হার অনুযায়ী, বলেন জোবাইদা নাসরীন।

সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আনুপাতিক নির্বাচনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে।