সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা-২ ও চেলানদী বালুমহালের ইজারা বাগিয়ে নিয়েছেন বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ছাত্রলীগের দলীয় পদ পদবী ব্যবহার করা তালিকাভুক্ত আসামী তৎকালীন ডিবি পুলিশের আস্থাভাজন ও শামসুল আবেদীনের ম্যানেজার মো. রুবেল আহমদ।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন হাইকোর্ট এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রশাসনিক আদেশ অমান্য করে গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) যাদুকাটা-২ ও চেলা নদী বালুমহালের ইজারাদার নির্বাচিত করেছে নিষিদ্ধ সংগঠন সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক মো. রুবেল আহমদকে।
এই রুবেল আহমদ তৎকালীন ডিবি প্রধান হারুনের আস্থাভাজন ও শামসুল আবেদীনের ম্যানেজার কালো টাকা সাদা করতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার কৌশল ব্যবহার করে এবং জেলা প্রশাসনে প্রভাব খাটিয়ে যাদুকাটা-২ ও চেলা নদী বালু মহালের ইজারাদার বনে গেলেন।
জেলা প্রশাসনের আবেদনের ভিত্তিতে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ গত ১৬/০২/২০২৫ তারিখে বালি মিশ্রিত পাথর কোয়ারীর অন্তর্ভুক্ত চালিয়ারঘাট ১৩২ মৌজা ও পুরান লাউড় ১৩৩ মৌজা বাদ দিয়ে বালুমহাল ইজারার জন্য সংশোধিত দরপত্র বিজ্ঞপ্তি পুনঃপ্রকাশের জন্য প্রশাসনিক আদেশ জারি করেন।
অপরদিকে, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রিট পিটিশন নং-২১০৭/২৪ মামলা শুনানী অন্তে গত ১৩/০২/২০২৫ তারিখের আদেশে যাদুকাটা নদীর বালুমহালেল ১৪৩২ বাংলা সনের জন্য প্রকাশিত ট্রেন্ডার বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশ সঠিক সময়ে জেলা প্রশাসক, সুনামগঞ্জ রিসিভ করলেও হাইকোর্টের আদেশ ও প্রশাসনিক আদেশ অমান্য করে নিষিদ্ধ সংগঠন জেলা ছাত্রলীগ নেতা রুবেল আহমদকে বিধি বর্হিভূতভাবে ইজারা প্রদান করা হয়। গত বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে যতসামান্য টাকায় অবৈধভাবে এই বালুমহালগুলো ইজারা নিয়ে প্রশাসনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলের রুবেল মিয়া। পাশাপাশি বর্তমানে আন্ডারওয়ার্ল্ডে থাকা কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতার কালো টাকা সাদা করার চেস্টা চালাচ্ছেন ঐসব নেতারা।
আরো জানা যায়, তৎকালীন ছাত্রলীগের পরিচিত মুখ রুবেল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে পুলিশের সাথে সহযোগী হয়ে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা চালান। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার ৪০ নম্বর আসামী এই নতুন ইজারাদার রুবেল আহমদ।
৫ আগস্টের পর তার অবৈধ বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে সুনামগঞ্জের সদ্য বিদায়ী পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছিলেন এই নিষিদ্ধ সংগঠনের এই নেতা। সম্প্রতি, এই দু’টি বালুমহালের ইজারা এবং হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারনের।