ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ইহুদি শাসকরা মনে করছে, তারা সিরিয়ার মাধ্যমে হিজবুল্লাহকে কোণঠাসা করে ফেলবে ও নিশ্চিহ্ন করবে। তবে, খামেনি জানিয়েছেন, তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তব হবে না। তিনি আরও বলেন, “হিজবুল্লাহ নয়, ইসরায়েলই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) তেহরানে নারীদের এক সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার সময় খামেনি সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, কিছু মানুষ মনে করছেন সিরিয়ায় সরকার পতনের পর তেহরানের নেতৃত্বাধীন ‘প্রতিরোধ অক্ষ’ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, কিন্তু তাদের এই ধারণা ভুল। তিনি সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ ও সিনওয়ারের শহীদ হওয়া নেতাদের স্মরণ করেন এবং বলেন, “শহীদরা কখনো মরে না, তাদের আত্মা জীবিত থাকে।”
এই সময় তেহরানে উপস্থিত জনতা ‘আমেরিকার মৃত্যু হোক’ এবং ‘ইসরায়েলের মৃত্যু হোক’ স্লোগান দিতে থাকে। খামেনি এই স্লোগানগুলোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “আমাদের যোদ্ধাদের দেহ চলে গেছে, কিন্তু তাদের বিশ্বাস ও আদর্শ রয়ে গেছে, এবং এই আদর্শ অব্যাহত থাকবে।”
ইসরায়েলি হামলা নিয়ে খামেনি বলেন, “ইসরায়েল এখনও গাজায় প্রতিদিন হামলা চালাচ্ছে, মানুষকে শহীদ করছে। কিন্তু গাজার মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, তারা এখনও প্রতিরোধ করছে। একইভাবে, লেবাননও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।”
সিরিয়ায় ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হওয়ার পর, সিরিয়ার দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধ শেষ হয়। বাশার আল-আসাদ পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন, তার ২৪ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে। আসাদ পরিবারের দীর্ঘদিনের মিত্র হিসেবে ইরান এবং রাশিয়া এই সংকটের পরবর্তী অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করে বড় আকারের অভিযান চালায়, এতে এক হাজারেরও বেশি যোদ্ধা নিহত হয়। ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর নভেম্বরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।