নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাছানাত আলী নতুন বছরের প্রথম থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে চেয়েছিলেন। তিনি দায়িত্বভার গ্রহণের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরিকল্পনা হাতে নেন এবং বেশ কিছু প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন। তবে এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC) থেকে অনুমোদন না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে এক ফেসবুক পোস্টে উপাচার্য জানান, গত অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পর তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন শিক্ষাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শিক্ষাসচিব তাকে পরামর্শ দেন যে, এই শিক্ষাবর্ষেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। সেই পরামর্শ অনুযায়ী, তিনি ১৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য আবেদন করেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি আরো লেখেন, “আমি আশা করেছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদন পেলে এই শিক্ষাবর্ষেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে পারব।” তিনি নওগাঁ শহরে ৭ তলা বিশিষ্ট একটি অস্থায়ী একাডেমিক ভবন, এক হাজার পাঠ্য পুস্তক সম্বলিত একটি লাইব্রেরি, ৫০টি কম্পিউটারসহ একটি কম্পিউটার ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ল্যাপটপ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিগত সহায়তা ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন।
এছাড়া, তিনি একটি স্টাডি সেন্টার এবং আইটি সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করেছেন, যা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলির সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। তিনি আরও জানান যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট গঠন এবং ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজও শুরু করেছেন।
অধ্যাপক হাছানাত আলী তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “গত আড়াই মাস ধরে আমি দিনরাত একাকার করে কাজ করেছি, শুধু শিক্ষক হিসেবে ক্লাসরুমে ফিরে যেতে চেয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “আমি নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ফিরে যেতে চাই এবং এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছি।”
তিনি জানান, গত ১৮ বছর ধরে বগুড়া, নওগাঁ এবং জয়পুরহাট অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল, আর এই সুযোগটি তিনি সবার জন্য নিশ্চিত করতে চান। তার দৃঢ় অঙ্গীকার, “নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করব, মেধাবীরা শিক্ষক হবেন এবং মেধার চর্চা হবে।” তিনি বলেন, “আমি হাল ছাড়িনি, আশাহতও হইনি, এখনও একটি ভালো সংবাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছি।”