ঢাকা ০৫:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
সোনারগাঁয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর ৪৪ শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় নবীনগরে রিপন মুন্সির হস্তক্ষেপে দীর্ঘদিনের বিরোধের অবসান ঝুঁকির মুখে কালনী এক্সপ্রেস, চালকের দক্ষতায় রক্ষা নবীনগরে ফসলি জমির মাটি কাটায় এলাকাবাসীর প্রতিবাদ, প্রশাসনের হস্তক্ষেপের আশ্বাস ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রশাসকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন শ্রম অধিদপ্তরের নতুন ডিজি এ কে এম তারিকুল আলম ডুয়েট প্রাক্তন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এসোসিয়েশন (ডেজা)’র উদ্যোগে মরহুম প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম খানের স্মরণে শোকসভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত কোরবানির উপলক্ষে – বাবুগঞ্জে কামাররা ব্যস্ততা সময় পার করছে বারবার ভূল চিকিৎসায় নবজাতক ও প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ; ক্লিনিক বন্ধের দাবি সাতক্ষীরায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ইজিবাইক যাত্রী শিশুর মৃত্যু, চালকসহ আহত ৬ পাবিপ্রবি’র প্রথম জাতীয় কনফারেন্সের মাধ্যমে গবেষণার দ্বার উম্মোচিত হয়েছে: ফারুক হোসেন চৌধুরী ভুরুঙ্গামারী সীমান্তে বিএসএফের পুশইনকৃত ১২ বাংলাদেশী আটক

১৬ বছর ধরে বরই চাষে সফল আজাদুর

১৬ বছর ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে বরই চাষে এলাকার মডেল হলেন আজাদুর রহমান। তার বাগানে আছে কাশ্মীরি আপেল কুল, বাউকুল, জাম্বুকুল ও ঢাকা-৯০ কুল। প্রতিদিন বিক্রি করছেন বাগানের বরই। কোনো ধরনের কেমিক্যাল ছাড়া উৎপাদিত এ বরইয়ের বেশ চাহিদা। তিনি উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য নয়াগাঁও গ্রামের মো. আব্দুল জব্বার এর ছেলে। তিনি মাষ্টার্স পাস করার পর কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।

এলাকার চাহিদা পূরণের পর ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ হচ্ছে এ বরই।

কৃষি বিভাগ জানায়, আবহাওয়া ও মাটির বৈশিষ্ট্য অনুকূলে থাকায় মৌলভীবাজারে চলতি মৌসুমে মিষ্টি বরই আবাদ হয়েছে। আজাদের বাগানে ভালো বরই চাষ হওয়ায় এলাকার যেমন চাহিদা মিটছে; তেমনি বরই চাষ করে তিনি এলাকার অনেকের কাছে মডেল হয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই এখন বরই চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

সরেজমিনে জানা যায়, ৭ একর জমিতে লাগানো বাগানের প্রতিটি গাছে ঢাকা-৯০ কুলে ছেয়ে আছে। ফলের ভারে গাছসহ ডালগুলো নিচের দিকে নুয়ে পড়েছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে আগলে রাখা হয়েছে প্রতিটি গাছ। পাখির হাত থেকে বরই রক্ষায় পুরো বাগান জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। বিক্রির জন্য মুসলিমসহ ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক বরই বাগানে কাজ করছেন।

আজাদুর রহমান প্রতি বছর বরই ও ফুলগাছের চারায় ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৬ লাখ টাকা আয় করেন। তার সফলতা দেখে এলাকার লোকজন অবাক হয়ে যান। চলতি মৌসুমে আজাদুর রহমান ঢাকা-৯০ ও জাম্বু কুল জাতের বরই চাষ করে বেশি লাভবান হচ্ছেন।

আজাদুর বলেন, ‘প্রতি বছর বাগান থেকে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় হয়। অল্প দিনে বরই চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। বিক্রির পাশাপাশি কলম চারা তৈরি করছি। বিভিন্ন ফল-ফুলের চারাও বিক্রি করি। কাশ্মীরি আপেল কুল, বাউকুল, জাম্বুকুল বিক্রি হচ্ছে। এ মৌসুমে টক-মিষ্টি সমৃদ্ধ রসালো ঢাকা-৯০ জাতের বরই প্রতি কেজি ১০০, বাউকুল ৮০ ও জাম্বু কুল ১০০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ কেজি বরই বাগান থেকে সংগ্রহ করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ৮ একর জমিতে বরই চাষ করতে প্রায় ৭ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এই পর্যন্ত ২ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছি। আমার বাগানে আর ৮ লাখ টাকার বরই আছে।

বাগান দেখতে আসা কমলগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘আমার মতো আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন লোকজন বরই বাগানটি দেখতে আসছেন। আমরা ১০ কেজি বরই নিয়েছি। পরিবার ও আত্মীয়দের দেওয়ার জন্য। খুব সুস্বাদু বরইগুলো। আজাদুর রহমান ভাই এ বাগান করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।’

বরই কিনতে থেকে আসা আখিঁ বলেন, ‘শমশেরনগর বিমান ঘাঁটি এলাকার বরই খুব মজাদার। তাই অনেক দূর থেকে বরই কিনতে এলাম। প্রায় ৫ কেজির মতো বরই নিয়েছি।’

মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জেলায় ২০৬ হেক্টর জমিতে বরই আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া ও মাটির গুণাবলি ভালো থাকায় বরই’র ফলন ভালো হয়েছে। জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে আজাদুর রহমানের বাগানের বরইগুলো খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি। তার বাগান দেখে অনেক বেকার যুবক বরই বাগান করতে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। ভালো ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

তিরি আরও বলেন, এখন কৃষকরা ভালো ফলনের জন্য নিজেরাই ভালো জাত খুঁজে রোপন করছেন। তাদের ফলনও ভালো হয়। গবেষনা থেকে নতুন জাত দরকার। দেশের বাইরে থেকে জাত গুলো না এনে দেশে যদি উৎপাদিত হতো তাহলে দীর্ঘস্থায়ী হতো।

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনারগাঁয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর ৪৪ শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়

Verified by MonsterInsights

১৬ বছর ধরে বরই চাষে সফল আজাদুর

আপডেট সময় ০৮:২৭:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

১৬ বছর ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে বরই চাষে এলাকার মডেল হলেন আজাদুর রহমান। তার বাগানে আছে কাশ্মীরি আপেল কুল, বাউকুল, জাম্বুকুল ও ঢাকা-৯০ কুল। প্রতিদিন বিক্রি করছেন বাগানের বরই। কোনো ধরনের কেমিক্যাল ছাড়া উৎপাদিত এ বরইয়ের বেশ চাহিদা। তিনি উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য নয়াগাঁও গ্রামের মো. আব্দুল জব্বার এর ছেলে। তিনি মাষ্টার্স পাস করার পর কৃষিকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।

এলাকার চাহিদা পূরণের পর ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ হচ্ছে এ বরই।

কৃষি বিভাগ জানায়, আবহাওয়া ও মাটির বৈশিষ্ট্য অনুকূলে থাকায় মৌলভীবাজারে চলতি মৌসুমে মিষ্টি বরই আবাদ হয়েছে। আজাদের বাগানে ভালো বরই চাষ হওয়ায় এলাকার যেমন চাহিদা মিটছে; তেমনি বরই চাষ করে তিনি এলাকার অনেকের কাছে মডেল হয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই এখন বরই চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

সরেজমিনে জানা যায়, ৭ একর জমিতে লাগানো বাগানের প্রতিটি গাছে ঢাকা-৯০ কুলে ছেয়ে আছে। ফলের ভারে গাছসহ ডালগুলো নিচের দিকে নুয়ে পড়েছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে আগলে রাখা হয়েছে প্রতিটি গাছ। পাখির হাত থেকে বরই রক্ষায় পুরো বাগান জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। বিক্রির জন্য মুসলিমসহ ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক বরই বাগানে কাজ করছেন।

আজাদুর রহমান প্রতি বছর বরই ও ফুলগাছের চারায় ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৬ লাখ টাকা আয় করেন। তার সফলতা দেখে এলাকার লোকজন অবাক হয়ে যান। চলতি মৌসুমে আজাদুর রহমান ঢাকা-৯০ ও জাম্বু কুল জাতের বরই চাষ করে বেশি লাভবান হচ্ছেন।

আজাদুর বলেন, ‘প্রতি বছর বাগান থেকে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় হয়। অল্প দিনে বরই চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। বিক্রির পাশাপাশি কলম চারা তৈরি করছি। বিভিন্ন ফল-ফুলের চারাও বিক্রি করি। কাশ্মীরি আপেল কুল, বাউকুল, জাম্বুকুল বিক্রি হচ্ছে। এ মৌসুমে টক-মিষ্টি সমৃদ্ধ রসালো ঢাকা-৯০ জাতের বরই প্রতি কেজি ১০০, বাউকুল ৮০ ও জাম্বু কুল ১০০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ কেজি বরই বাগান থেকে সংগ্রহ করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ৮ একর জমিতে বরই চাষ করতে প্রায় ৭ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এই পর্যন্ত ২ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছি। আমার বাগানে আর ৮ লাখ টাকার বরই আছে।

বাগান দেখতে আসা কমলগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা পারভেজ আহমেদ বলেন, ‘আমার মতো আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন লোকজন বরই বাগানটি দেখতে আসছেন। আমরা ১০ কেজি বরই নিয়েছি। পরিবার ও আত্মীয়দের দেওয়ার জন্য। খুব সুস্বাদু বরইগুলো। আজাদুর রহমান ভাই এ বাগান করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।’

বরই কিনতে থেকে আসা আখিঁ বলেন, ‘শমশেরনগর বিমান ঘাঁটি এলাকার বরই খুব মজাদার। তাই অনেক দূর থেকে বরই কিনতে এলাম। প্রায় ৫ কেজির মতো বরই নিয়েছি।’

মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জেলায় ২০৬ হেক্টর জমিতে বরই আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া ও মাটির গুণাবলি ভালো থাকায় বরই’র ফলন ভালো হয়েছে। জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে আজাদুর রহমানের বাগানের বরইগুলো খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি। তার বাগান দেখে অনেক বেকার যুবক বরই বাগান করতে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। ভালো ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

তিরি আরও বলেন, এখন কৃষকরা ভালো ফলনের জন্য নিজেরাই ভালো জাত খুঁজে রোপন করছেন। তাদের ফলনও ভালো হয়। গবেষনা থেকে নতুন জাত দরকার। দেশের বাইরে থেকে জাত গুলো না এনে দেশে যদি উৎপাদিত হতো তাহলে দীর্ঘস্থায়ী হতো।