ঢাকা ০১:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র নিখোঁজের নয়দিন পর পরিত্যক্ত ডোবায় লাশ উদ্ধার লালপুরে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৪ নারীসহ আহত ১০, আশঙ্কাজনক ১ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯৯টি ককটেল ও ৪০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার বগুড়ায় করতোয়া নদীর ধারে মুখ ঝলসানো অর্ধগলিত লাশ পিরিজপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকি: অভিযুক্ত বিএনপি নেতার ছেলে লালপুরে আইনজীবীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, ৩জন আহত বগুড়ায় ‘লাশ উত্তোলনের নামে’ প্রতারণা, তিন ভাই গ্রেপ্তার সিংড়ায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা সুনামগঞ্জের বিঞ্জান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা শহরের কাছাকাছি স্থাপনের জন্য ৬দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন পাংশায় বসত ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে যুবকের আত্মহত্যা কাবিখা প্রকল্পে কাগজে কলমে উন্নয়ন, মাঠে দুর্নীতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা সেমিনার ও ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

বগুড়ার চিকন সেমাই তৈরিতে স্বয়ংক্রিয় মেশিনের ব্যবহার বাড়ছে: কমছে নারীদের অংশগ্রহণ

সেমাই উৎপাদনের কাজে নারীরা

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী চিকন সেমাই-এর চাহিদা দেশজুড়ে। মূলত রোজার শুরু থেকেই এর চাহিদা বাড়তে শুরু করে। ইফতারিতে অনেকেরই পছন্দ দুধে ভেজানো চিকন সেমাই। আর ঈদ, সে তো চিকন সেমাই ছাড়া যেন একেবারেই অকল্পনীয়। তাই তো শব-ই-বরাতের পর থেকেই বগুড়ার গ্রামাঞ্চলে সেমাই তৈরি শুরু হয়ে যায়।

জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিকন সেমাইয়ের উৎপাদন হয় বগুড়া সদর এবং শাজাহানপুর উপজেলার সাবগ্রাম, কালসিমাটি, শ্যাঁওলাগাতি, শ্যামবাড়িয়া ও বেজোড়া গ্রামে। প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ওই গ্রামগুলোর প্রায় প্রতিটি ঘরে নারীরা চিকন সেমাই তৈরি করে আসছেন। সেমাই তৈরি, রোদে শুকানো এবং মোড়কজাত করার কাজে অন্তত ৪০০ নারী সম্পৃক্ত।

তবে ব্যাপক চাহিদা থাকায় সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় বেকারিগুলোতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাপকহারে চিকন সেমাই তৈরি শুরু হয়েছে। ফলে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কুলিয়ে উঠতে পারছেন না সেমাই পল্লীর নারী কারিগররা।

কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক দশক আগে ২০১৪ সালে পল্লীতে সেমাই উৎপাদনে ব্যাপক ধ্বস নামে। কারণ তখন রমজান শুরু হয়েছিল ভরা বর্ষা মৌসুমে। ফলে ঘরে তৈরি সেমাই রোদে শুকানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।

এমন পরিস্থিতি ২০২১ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। যার সুযোগ নেন বেকারি শিল্প মালিকরা। তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চিকন সেমাই উৎপাদন শুরু করে। বৈরী আবহাওয়া এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকতে না পেরে ওই সময়ের মধ্যে সেমাই পল্লীর প্রায় অর্ধেক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।

অবশ্য ২০২২ সাল থেকে রমজান মাস বর্ষা মৌসুম থেকে বেরিয়ে আসলে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও যারা মৌসুমী এই ব্যবসা ধরে রেখেছিলেন তারা আবার স্বাভাবিক উৎপাদনে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করতে শুরু করেন। কিন্তু বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে এবার পরিস্থিতি পুরোটাই অনুকুলে। সেমাই শুকানোর জন্য যেমন কড়া রোদ আছে তেমনি বিদ্যুতেরও কোন লোড শেডিং নেই। ফলে সেমাই পল্লীর নারীদের অনেকেই তাদের পুরাতন মেশিনে সেমাই উৎপাদন শুরু করে দিয়েছেন।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কালসিমাটি গ্রামে ঢুকতেই সড়কে, জমির আইলে এবং ফাঁকা মাঠ জুড়ে সাদা চিকন সেমাই চোখে পড়ে। পাটের তৈরি বস্তায় নয়তো পলিথিনের ওপর শুকাতে দেওয়া সেমাইগুলো কিছুক্ষণ পর পর নারীরা উল্টে দিচ্ছেন।

মোর্শেদা বেগম নামে নারীকে তার বাড়ির উঠানে ধান শুকানোর মত করে সেমাই শুকাতে দেখা যায়। তার বাড়ির সঙ্গেই একটি টিনের বেড়া দেওয়া মাঝারি সাইজের একটি ঘরের এক কোণে রয়েছে একটি সেমাইয়ের কল। আরেক পাশে রয়েছে স্তূপ করা তিন-চার বস্তা ময়দা।

মোর্শেদা জানান, বহু বছর থেকে তিনি সেমাই উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এবার একজন মাত্র নারী শ্রমিক নিয়ে তিনি সেমাই তৈরি করছেন। তিনি নিজেও ওই শ্রমিকের সঙ্গে কাজ করছেন। রাত ২টায় সেহেরি খাওয়ার পর থেকে কাজ শুরু করেন। সকাল ৮টা-৯টার মধ্যেই সেমাই তৈরি হয়ে যায়। এরপর সেগুলো শুকানোর কাজ শুরু হয়।

মোর্শেদা দিনে ৩ থেকে ৪ বস্তা ময়দার সেমাই উৎপাদন করেন। প্রতি খাঁচি (২৫ কেজি) সেমাই ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করেন।

বেজোড়া গ্রামের আব্দুর রশিদ দীর্ঘ প্রায় ৩ দশক ধরে চিকন সেমাই তৈরি করে আসছিলেন। তার ৫টি সেমাই কল ছিল। কিন্তু গত এক দশক ধরে বর্ষার কারণে চাহিদামত উৎপাদন করতে না পারার পাশাশি বেকারি শিল্পে উৎপাদিত সেমাইয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দু’বছর আগে তিনি ব্যবসা থেকে সরে আসেন। তবে কারখানাটি জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তির কাছে ২০ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছেন।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি মাত্র ২টি মেশিনে ৪ জন নারী শ্রমিক রেখে সেমাই উৎপাদন করছেন। দিনে ৫ থেকে ৬ বস্তা ময়দা দিয়ে ১৫০ কেজি সেমাই তৈরি করছেন।

এবার আবহাওয়া অনুকূলে এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং না থাকলেও উৎপাদন কমে দেওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, আগে ৪/৫টি গ্রামেই চিকন সেমাই তৈরি হতো। কিন্তু এখন শহরের বেকারিগুলোতেও সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। তারা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এজন্য প্রতিযোগিতায় আমরা টিকতে পারছি না। তাই অনেকেই সেমাই উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন এই বেজোড়া গ্রামের মাত্র ৩ থেকে ৪টি পরিবার সেমাই উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাদের উৎপাদিত সেমাই এখন বগুড়া শহরের চেয়ে নওগাঁ, সান্তাহার, দুপচাঁচিয়া, মহাস্থানসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা প্রতি কেজি সেমাই প্রকারভেদে ৪৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। আর বেকারিতে উৎপাদিত সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। আমাদের সেমাইয়ের দাম কম হলেও উৎপাদন ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয় নয় বলেই শহরের অনেক বড় বড় দোকান আর আমাদের তৈরি সেমাই আর নিতে চান না।

বগুড়া আকবরিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান আলী আলাল জানান, সেমাই পল্লীর সেমাই রোদে শুকানোর প্রক্রিয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয়। কারণ সেগুলো মাঠে, বাড়ির উঠানে বা রাস্তার ধারে খোলা জায়গায় শুকানো হয়। যা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। পক্ষান্তরে আমরা যারা বেকারিতে সেমাই তৈরি করি তারা সবাই তন্দুরে অথবা ওভেনে সেমাই শুকাই। এজন্য আমাদের তৈরি সেমাইয়ের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র নিখোঁজের নয়দিন পর পরিত্যক্ত ডোবায় লাশ উদ্ধার

Verified by MonsterInsights

বগুড়ার চিকন সেমাই তৈরিতে স্বয়ংক্রিয় মেশিনের ব্যবহার বাড়ছে: কমছে নারীদের অংশগ্রহণ

আপডেট সময় ০৮:২৬:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী চিকন সেমাই-এর চাহিদা দেশজুড়ে। মূলত রোজার শুরু থেকেই এর চাহিদা বাড়তে শুরু করে। ইফতারিতে অনেকেরই পছন্দ দুধে ভেজানো চিকন সেমাই। আর ঈদ, সে তো চিকন সেমাই ছাড়া যেন একেবারেই অকল্পনীয়। তাই তো শব-ই-বরাতের পর থেকেই বগুড়ার গ্রামাঞ্চলে সেমাই তৈরি শুরু হয়ে যায়।

জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চিকন সেমাইয়ের উৎপাদন হয় বগুড়া সদর এবং শাজাহানপুর উপজেলার সাবগ্রাম, কালসিমাটি, শ্যাঁওলাগাতি, শ্যামবাড়িয়া ও বেজোড়া গ্রামে। প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ওই গ্রামগুলোর প্রায় প্রতিটি ঘরে নারীরা চিকন সেমাই তৈরি করে আসছেন। সেমাই তৈরি, রোদে শুকানো এবং মোড়কজাত করার কাজে অন্তত ৪০০ নারী সম্পৃক্ত।

তবে ব্যাপক চাহিদা থাকায় সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় বেকারিগুলোতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাপকহারে চিকন সেমাই তৈরি শুরু হয়েছে। ফলে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কুলিয়ে উঠতে পারছেন না সেমাই পল্লীর নারী কারিগররা।

কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক দশক আগে ২০১৪ সালে পল্লীতে সেমাই উৎপাদনে ব্যাপক ধ্বস নামে। কারণ তখন রমজান শুরু হয়েছিল ভরা বর্ষা মৌসুমে। ফলে ঘরে তৈরি সেমাই রোদে শুকানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।

এমন পরিস্থিতি ২০২১ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। যার সুযোগ নেন বেকারি শিল্প মালিকরা। তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চিকন সেমাই উৎপাদন শুরু করে। বৈরী আবহাওয়া এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকতে না পেরে ওই সময়ের মধ্যে সেমাই পল্লীর প্রায় অর্ধেক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।

অবশ্য ২০২২ সাল থেকে রমজান মাস বর্ষা মৌসুম থেকে বেরিয়ে আসলে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও যারা মৌসুমী এই ব্যবসা ধরে রেখেছিলেন তারা আবার স্বাভাবিক উৎপাদনে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করতে শুরু করেন। কিন্তু বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে এবার পরিস্থিতি পুরোটাই অনুকুলে। সেমাই শুকানোর জন্য যেমন কড়া রোদ আছে তেমনি বিদ্যুতেরও কোন লোড শেডিং নেই। ফলে সেমাই পল্লীর নারীদের অনেকেই তাদের পুরাতন মেশিনে সেমাই উৎপাদন শুরু করে দিয়েছেন।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কালসিমাটি গ্রামে ঢুকতেই সড়কে, জমির আইলে এবং ফাঁকা মাঠ জুড়ে সাদা চিকন সেমাই চোখে পড়ে। পাটের তৈরি বস্তায় নয়তো পলিথিনের ওপর শুকাতে দেওয়া সেমাইগুলো কিছুক্ষণ পর পর নারীরা উল্টে দিচ্ছেন।

মোর্শেদা বেগম নামে নারীকে তার বাড়ির উঠানে ধান শুকানোর মত করে সেমাই শুকাতে দেখা যায়। তার বাড়ির সঙ্গেই একটি টিনের বেড়া দেওয়া মাঝারি সাইজের একটি ঘরের এক কোণে রয়েছে একটি সেমাইয়ের কল। আরেক পাশে রয়েছে স্তূপ করা তিন-চার বস্তা ময়দা।

মোর্শেদা জানান, বহু বছর থেকে তিনি সেমাই উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এবার একজন মাত্র নারী শ্রমিক নিয়ে তিনি সেমাই তৈরি করছেন। তিনি নিজেও ওই শ্রমিকের সঙ্গে কাজ করছেন। রাত ২টায় সেহেরি খাওয়ার পর থেকে কাজ শুরু করেন। সকাল ৮টা-৯টার মধ্যেই সেমাই তৈরি হয়ে যায়। এরপর সেগুলো শুকানোর কাজ শুরু হয়।

মোর্শেদা দিনে ৩ থেকে ৪ বস্তা ময়দার সেমাই উৎপাদন করেন। প্রতি খাঁচি (২৫ কেজি) সেমাই ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করেন।

বেজোড়া গ্রামের আব্দুর রশিদ দীর্ঘ প্রায় ৩ দশক ধরে চিকন সেমাই তৈরি করে আসছিলেন। তার ৫টি সেমাই কল ছিল। কিন্তু গত এক দশক ধরে বর্ষার কারণে চাহিদামত উৎপাদন করতে না পারার পাশাশি বেকারি শিল্পে উৎপাদিত সেমাইয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দু’বছর আগে তিনি ব্যবসা থেকে সরে আসেন। তবে কারখানাটি জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তির কাছে ২০ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছেন।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি মাত্র ২টি মেশিনে ৪ জন নারী শ্রমিক রেখে সেমাই উৎপাদন করছেন। দিনে ৫ থেকে ৬ বস্তা ময়দা দিয়ে ১৫০ কেজি সেমাই তৈরি করছেন।

এবার আবহাওয়া অনুকূলে এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং না থাকলেও উৎপাদন কমে দেওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, আগে ৪/৫টি গ্রামেই চিকন সেমাই তৈরি হতো। কিন্তু এখন শহরের বেকারিগুলোতেও সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। তারা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এজন্য প্রতিযোগিতায় আমরা টিকতে পারছি না। তাই অনেকেই সেমাই উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন এই বেজোড়া গ্রামের মাত্র ৩ থেকে ৪টি পরিবার সেমাই উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাদের উৎপাদিত সেমাই এখন বগুড়া শহরের চেয়ে নওগাঁ, সান্তাহার, দুপচাঁচিয়া, মহাস্থানসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা প্রতি কেজি সেমাই প্রকারভেদে ৪৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। আর বেকারিতে উৎপাদিত সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। আমাদের সেমাইয়ের দাম কম হলেও উৎপাদন ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয় নয় বলেই শহরের অনেক বড় বড় দোকান আর আমাদের তৈরি সেমাই আর নিতে চান না।

বগুড়া আকবরিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান আলী আলাল জানান, সেমাই পল্লীর সেমাই রোদে শুকানোর প্রক্রিয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয়। কারণ সেগুলো মাঠে, বাড়ির উঠানে বা রাস্তার ধারে খোলা জায়গায় শুকানো হয়। যা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। পক্ষান্তরে আমরা যারা বেকারিতে সেমাই তৈরি করি তারা সবাই তন্দুরে অথবা ওভেনে সেমাই শুকাই। এজন্য আমাদের তৈরি সেমাইয়ের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।