গতকাল রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকা ওয়াসা জাতীয়তাবাদী এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের নেতৃত্বে আওয়ামী দোসরদের চক্রান্তের বিপক্ষে ঢাকা ওয়াসা ভবনে এক প্রতিবাদ সভা হয়। এই সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা ওয়াসা জাতীয়তাবাদী এমপ্লিয়য়ীজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, ১৯৯২ সালের ২রা মার্চ ঢাকা ওয়াসা জাতীয়তাবাদী এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন আমাদেরকে কোথাও বসতে দেয়নি। জাতীয়তাবাদী বিশ্বাসী হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীকে মামলা, হামলা ও চাকরিচ্যুত করেছিল তাকসিম প্রশাসন। এখনো তাকসিম ভূত ঢাকা ওয়াসা প্রশাসনে ঘাপটি মেরে বসে আছে। ইদানিং সেই আওয়ামী দোসররা আবারও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে সংঘটিত হচ্ছে।দুর্নীতির দায়ে চাকুরীচ্যুত আনিসুজ্জামান খান এবং ঢাকা ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় প্রদানকারী আনোয়ার হোসেন খান লাবু ঢাকা ওয়াসার প্রশাসনের কিছু আওয়ামী তাকসিম সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্রকারী কর্মকর্তাসহ জোটবদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন বঞ্চিত, হামলা, মিথ্যা মামলার ও বৈষম্যের স্বীকার শ্রমিক কর্মচাসহ ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
মনির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, বঞ্চিত শ্রমিক-কর্মচারীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। আমরা ৫ আগষ্ট আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানের পর মাঠ পর্যায়ে নজর দিয়েছি। ইতিমধ্যে তাকসিমের রোষানলের স্বীকার ১৪৮ জনকে মূল্যায়ন করেছি ৫১ জন পাম্প চালককে পদন্নোতির ব্যবস্থা করেছি। মাষ্টার রোলের ১৯ জন বহিষ্কৃত শ্রমিককে পুনর্বহাল করেছি। পাম্প চালকদের পদন্নোতির কাজ চলছে। আমাদের ঢাকা ওয়াসার বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় পর্যায়ক্রমে সকল যৌক্তিক দাবী পুরণ করার আশ্বাস আমাদেরকে দিয়েছেন।
প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি ঢাকা ওয়াসা জাতীয়তাবাদী এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম খান বলেন, আমরা যখন বঞ্চিত, বৈষম্যের স্বীকার, শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষে বিভিন্ন ন্যায্য দাবী আদায়ের লক্ষ কাজ করে যাচ্ছি এবং আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৭ বছরে যে সকল সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের বিতাড়িত করার জন্য প্রতিবাদ করি, ঠিক তখনই ঢাকা ওয়াসা ভবনের প্রশাসনে থাকা ঐ সকল কর্মকর্তাদের সাথে শাহীন-লাবু জোট বেঁধে ঢাকা ওয়াসাকে অশান্ত করার লক্ষে বিভিন্ন মিডিয়াতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঢাকা ওয়াসার সাধারণ বঞ্চিত ও বৈষম্যের স্বীকার শ্রমিক-কর্মচারীদের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। শাহীন-লাবু ঢাকা ওয়াসার কেউ নয়, তারা এখানে চাকুরী করে না। অথচ ঢাকা ওয়াসার কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার পৃষ্ঠপোষকতায় তারা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
আজিজুল আলম খান বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয়ের নিকট আমরা বিনয়ের সহিত অনুরোধ জানাই, আওয়ামী দোষর আনিসুজ্জামান খান শাহীন, আনোয়ার হোসেন লাবুসহ ঢাকা ওয়াসার চিহ্নিত আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই চক্র যেকোনো সময় ঢাকা ওয়াসা ভবনে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পূর্বে শাহীন-লাবু গংরা কাওরান বাজারে ছাত্র-জনতার উপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সাথে জোট বেঁধে হামলা চালিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার প্রেতাত্মাদের সুবিধাজনক স্থানে বসিয়ে রেখে সরকারী কোনো সংস্থাতেই শৃঙ্খলা ফেরানো অসম্ভব।
আজিজুল আলম খান বলেন, এপিও পদে থেকে দীর্ঘ ২৫ বছর কোনো পদন্নোতি পায়নি। দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ মাস্টার রোলের শ্রমিক-কর্মচারীদের স্থানীয়করণ করা হয়নি। ঢাকা ওয়াসাতে আউটসোর্সিংসহ সর্বস্তরের শ্রমিক-কর্মচারী বৈষম্যের স্বীকার। চক্রান্তকারীরা যত অপপ্রচার করুক আমরা ঢাকা ওয়াসা জাতীয়তাবাদী এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন বৈষম্যের স্বীকার শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবী আদায়ে কাজ করে যাব।
প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা ওয়াসা জাতীয়তাবাদী এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ফজলুর রহমান বাদল, আব্দুল মন্নান, সাইদুল ইসলাম, হাফিজ উদ্দিন, শামীম হোসেন, আলতাফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম লিটন, একেএম শাকিল প্রমূখ।