ঢাকা ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
আমার বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিয়েছে: জেফার সাংবাদিকরা যদি হুমকি বা হয়রানির শিকার হলে আমরা এক হয়ে লড়ব: সারজিস আলম সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: জ্যেষ্ঠ সচিবের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মারা গেছেন কুলাউড়ায় চুরির অপবাদ সইতে না পেরে মুজাহিদুর নামে আত্মহত্যা কুলাউড়ায় নিষিদ্ধ পলিথিন মজুত রাখার অপরাধে দুইটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা পাংশা রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিকায়নের কাজ শুরু সংসদ নির্বাচন হতে হবে আনুপাতিক হারে: জামায়াত আমির যশোরে আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ সুনামগঞ্জে বিএনপি নেতার নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে সন্ত্রাসীদের হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন রাজবাড়ীতে খাদ্য ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণ প্রদান যশোরে জামায়াতের আমীরের সমাবেশ আগামীকাল

মৌলভীবাজারে মনু নদীর খনন কাজের বালু ফেলে কৃষকের সবজি ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগ

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার খাস প্রেমনগর এলাকায় মনু নদীর খনন কাজ করতে গিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা বালু ফেলে কৃষকের ২ শতাধিক বিঘা সবজি ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের উপর।

সবজি ক্ষেতের মাচা ভেংঙ্গে দিয়ে ও সবজি বালু দিয়ে ঢেকে ফেলায় অর্ধ শতাধিক কৃষক লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তারা সবজি উৎপাদন করতে চড়া সুদে ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পড়ছেন বিপাকে। দিশাহারা কৃষকের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ। এলাকায় বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। এখানকার উৎপাদিত সবজি রাজনগর ও মৌলভীবাজার উপজেলার সবজির চাহিদা পুরণ করে বাহিরের জেলা গুলোতে যায়। এখানের বিষ ও ফরমালিন মুক্ত সবজির যেমন রয়েছে চাহিদার একি সাথে কৃষক ভালো মূল্য পেয়ে থাকেন। তাই মনু নদীর পাড়ে এখানকার কৃষকরা সবজি উৎপদনে ঝুকে পড়েছেন।

গত বন্যায় সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা খাসপ্রেম নগরের মানুষ। বন্যা ধাক্কা সামাল দিতে সবজি চাষ করেছিলেন। কিন্তু মনু নদীর খনন কাজ করতে গিয়ে বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে তাদের সবজি ক্ষেত।

খাস প্রেমনগর গ্রামের কৃষক আকবর মিয়া, জিল্রুর রহমান, সাইফুর মিয়া, ফজর মিয়া, করিম মিয়া, হান্নান মিয়া, গোরাম হোসেন, সিকন্দর মিয়া, কলন্দর মিয়া, সুয়েব মিয়া, সোনাবর মিয়া, ইসকন্দর মিয়া, নোমান মিয়া, সোনাওর মিয়া, জামাল মিয়া, ইছুব মিয়া, আনুর মিয়া, বাহার আলী, মছব্বির মিয়া, মজমিল মিয়া, ওয়াছির মিয়া, সজ্জাদ মিয়া, শফিক মিয়া, রফিক মিয়া, হিরন মিয়া, সুন্দর মিয়ি, বাচ্চু মিয়া, রেনু মিয়া, গনি মিয়া, আনর মিয়া, জুয়েল মিয়া, শামসেদ মিয়া, ফটিক আহসদ, নাজির মিয়া, মছই মিয়া, মাসুক মিয়া, আলী মিয়া, আমজদ মিয়া, মামজদ মিয়া, জিতু মিয়া, বাচ্চু মিয়া, নীলু মিয়া, নুরু মিয়া, মিলন মিয়া, আকলু মিয়া, মতিন মিয়া, আনছার, জাবেদ, হারুন, সানচু, মানচু, মছদ্দর, কবির, সিরাজ, জাকির, মোস্তফা, আজাদ, সায়েদ মিয়া বলেন, মনু নদী খননে উত্তোলন করা বালু মাটি দিয়ে আমাদের ফসল চাপা দেওয়া হচ্ছে। ফুল কই আসা সবজি খেত মাটি চাপা পড়ছে। আমরা সুদ ও এনজিও এর কিস্তি নিয়ে সবজি চাষ করেছি। এখন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যওয়ায় আমরা ঋণ দেবো কোথায় থেকে? আর পরিবার পরিজন নিয়ে কি খাবো? গত ১৮ ও ২৪ সালের বন্যার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এর মধ্যে আবার চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেল।

এই কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদেরে বালু রাখার জন্য এলাকা পরিদর্শনে এসে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী নদীর পাড় দেখিয়ে দিয়েছেন। এমনকি মাটিগুলো নদী পাড়ে বড় বড় গর্তে ফেলতে নিষেধ করেছেন। আমরা আদেশ মোতাবেক কাজ করছি। এতে কৃষকের ফসলের ক্ষতি হলেও আমাদের করার কিছু নেই।

এ ব্যাপার মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, বালু রাখার জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ডর। জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে জরিপ করে সীমানা আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। আর গর্তগুলোতে বালু ফেলার বিষয় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। ওগুলো বিক্রি করা হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ঠিকাদারকে অনুরুধ করেছি কৃষকদের যথা সম্ভব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। আমি কৃষকদের ব্যাপারে পজেটিভ। আর এ মৌসুমে কাজ না করলে আর কাজ করা যাবে না।

মৌলভীবাজার মনু নদীর খনন কাজের বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনের
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে রিসিভ করেননি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আমার বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিয়েছে: জেফার

মৌলভীবাজারে মনু নদীর খনন কাজের বালু ফেলে কৃষকের সবজি ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগ

আপডেট সময় ০৯:৪৭:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার খাস প্রেমনগর এলাকায় মনু নদীর খনন কাজ করতে গিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা বালু ফেলে কৃষকের ২ শতাধিক বিঘা সবজি ক্ষেত নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের উপর।

সবজি ক্ষেতের মাচা ভেংঙ্গে দিয়ে ও সবজি বালু দিয়ে ঢেকে ফেলায় অর্ধ শতাধিক কৃষক লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তারা সবজি উৎপাদন করতে চড়া সুদে ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পড়ছেন বিপাকে। দিশাহারা কৃষকের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ। এলাকায় বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। এখানকার উৎপাদিত সবজি রাজনগর ও মৌলভীবাজার উপজেলার সবজির চাহিদা পুরণ করে বাহিরের জেলা গুলোতে যায়। এখানের বিষ ও ফরমালিন মুক্ত সবজির যেমন রয়েছে চাহিদার একি সাথে কৃষক ভালো মূল্য পেয়ে থাকেন। তাই মনু নদীর পাড়ে এখানকার কৃষকরা সবজি উৎপদনে ঝুকে পড়েছেন।

গত বন্যায় সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা খাসপ্রেম নগরের মানুষ। বন্যা ধাক্কা সামাল দিতে সবজি চাষ করেছিলেন। কিন্তু মনু নদীর খনন কাজ করতে গিয়ে বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে তাদের সবজি ক্ষেত।

খাস প্রেমনগর গ্রামের কৃষক আকবর মিয়া, জিল্রুর রহমান, সাইফুর মিয়া, ফজর মিয়া, করিম মিয়া, হান্নান মিয়া, গোরাম হোসেন, সিকন্দর মিয়া, কলন্দর মিয়া, সুয়েব মিয়া, সোনাবর মিয়া, ইসকন্দর মিয়া, নোমান মিয়া, সোনাওর মিয়া, জামাল মিয়া, ইছুব মিয়া, আনুর মিয়া, বাহার আলী, মছব্বির মিয়া, মজমিল মিয়া, ওয়াছির মিয়া, সজ্জাদ মিয়া, শফিক মিয়া, রফিক মিয়া, হিরন মিয়া, সুন্দর মিয়ি, বাচ্চু মিয়া, রেনু মিয়া, গনি মিয়া, আনর মিয়া, জুয়েল মিয়া, শামসেদ মিয়া, ফটিক আহসদ, নাজির মিয়া, মছই মিয়া, মাসুক মিয়া, আলী মিয়া, আমজদ মিয়া, মামজদ মিয়া, জিতু মিয়া, বাচ্চু মিয়া, নীলু মিয়া, নুরু মিয়া, মিলন মিয়া, আকলু মিয়া, মতিন মিয়া, আনছার, জাবেদ, হারুন, সানচু, মানচু, মছদ্দর, কবির, সিরাজ, জাকির, মোস্তফা, আজাদ, সায়েদ মিয়া বলেন, মনু নদী খননে উত্তোলন করা বালু মাটি দিয়ে আমাদের ফসল চাপা দেওয়া হচ্ছে। ফুল কই আসা সবজি খেত মাটি চাপা পড়ছে। আমরা সুদ ও এনজিও এর কিস্তি নিয়ে সবজি চাষ করেছি। এখন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যওয়ায় আমরা ঋণ দেবো কোথায় থেকে? আর পরিবার পরিজন নিয়ে কি খাবো? গত ১৮ ও ২৪ সালের বন্যার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এর মধ্যে আবার চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেল।

এই কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাদেরে বালু রাখার জন্য এলাকা পরিদর্শনে এসে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী নদীর পাড় দেখিয়ে দিয়েছেন। এমনকি মাটিগুলো নদী পাড়ে বড় বড় গর্তে ফেলতে নিষেধ করেছেন। আমরা আদেশ মোতাবেক কাজ করছি। এতে কৃষকের ফসলের ক্ষতি হলেও আমাদের করার কিছু নেই।

এ ব্যাপার মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, বালু রাখার জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ডর। জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে জরিপ করে সীমানা আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। আর গর্তগুলোতে বালু ফেলার বিষয় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। ওগুলো বিক্রি করা হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ঠিকাদারকে অনুরুধ করেছি কৃষকদের যথা সম্ভব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। আমি কৃষকদের ব্যাপারে পজেটিভ। আর এ মৌসুমে কাজ না করলে আর কাজ করা যাবে না।

মৌলভীবাজার মনু নদীর খনন কাজের বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনের
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে রিসিভ করেননি।