বড়লেখার দক্ষিণভাগ এনসিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসুক আহমদ প্রায় ৯ বছর মিথ্যা মামলার হয়রানি ও ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেলেন। প্রধান শিক্ষক পদে নির্বাচিত হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান শিক্ষক প্রার্থী শাহীদুল ইসলামের মিথ্যা মামলায় ইতিপূর্বে তিনি হাজতবাসও করেন।
অবশেষে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মামলার রায়ে তিনিসহ সব আসামিকে বেখসুর খালাস প্রদান করেছেন আদালত। জনাকীর্ণ আদালতে রায় ঘোষণা করেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া।
আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে দক্ষিণভাগ এনসিএম উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ বোর্ডের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আকবর আলী। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলাম নিয়োগ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বোর্ড আসুক আহমদকে নির্বাচিত করে। সচিব আকবর আলী নির্বাচিত প্রধান শিক্ষক আসুক আহমদের নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (প্রধান শিক্ষক পদে অকৃতকার্য) শাহীদুল ইসলাম কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটান।
একপর্যায়ে তিনি নিয়োগ বোর্ডের সচিব আকবর আলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ২৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষুদ্ধ জনতা স্কুলে ঢুকে শাহীদুল ইসলামের উপর হামলা চালায়। এতে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। পরে বিজয়ী প্রধান শিক্ষক আসুক আহমদসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা করেন।
প্রধান শিক্ষক আসুক আহমদ জানান, মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সময় তিনি প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে পূর্ববর্তী কর্মস্থলে ছিলেন। মামলার বাদী আমার সাথে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে টিকতে পারেননি। আমি যাতে তার স্কুলে যোগদান না করি এরজন্যই শাহীদুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। পুলিশের একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনেও আমিসহ অন্যান্য আসামিদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তবুও তিনি বারবার আদালতে না-রাজি পিটিশন দিয়ে বিচারকার্য দীর্ঘায়িত করেছেন, যা চরম হয়রানি করেছেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত মিথ্যা মামলার প্রমাণ পাওয়ায় আমিসহ সব আসামিকে বেখসুর খালাসের রায় দিয়েছেন।
মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট আবু নছর মোহাম্মদ মাসহুদ বড়লেখার দক্ষিণভাগ এনসিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহীদুল ইসলামের মামলার রায়ে প্রধান শিক্ষক আসক আহমদসহ সকল আসামিকে খালাস প্রদানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।