সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগের পাশাপাশি ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে যে কোনো অনিয়ম তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এই তদন্ত কমিটিতে নেতৃত্ব দেবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, এবং তার সঙ্গে থাকবেন আইনজীবী জসিম উদ্দিন সরকার ও প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন। হাইকোর্ট এই কমিটিকে ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবকে এই প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
২০২২ সালে অভিযোগ ওঠে যে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ হাসিনা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার দুই সন্তানের নামে ১০ কাঠা আয়তনের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। অভিযোগে বলা হয়, ১৩/এ ধারার ক্ষমতাবলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এই প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিষয়টি দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা হিসেবে রাখা হয়, যার ফলে রাজউকের অনেকেই এ বিষয়ে কিছু জানতেন না।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবী গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি রিট আবেদন করেন, যাতে এই প্লট বরাদ্দের অনিয়ম তদন্ত এবং সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
হাইকোর্ট তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে তদন্ত শেষে ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন, এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী শুনানি করেন।
এই তদন্ত কেবল শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের প্লট বরাদ্দ নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজউকের অন্যান্য প্লট বরাদ্দেও যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে, তা খতিয়ে দেখবে কমিটি।