ঢাকা ০১:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কর্মস্থল ত্যাগ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে: আব্দুর রশীদ মিয়া ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল বোয়ালখালী শাকপুরা প্রবর্ত্তক পাইলট কন্যা বিদ্যাপীঠের এডহক কমিটির সভাপতি হলেন পেয়ার মোহাম্মদ কুশুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত মণিপুরী ললিতকলায় ৭ দিনব্যাপী বিভিন্ন প্রশিক্ষণের উদ্বোধন জয়পুরহাটে ছাত্রদল নেতা ছুরিকাঘাতে জখম শিবগঞ্জে ২ ইটভাটা বন্ধ ঘোষণা, দেড় লাখ টাকা অর্থদন্ড নীলফামারীতে ১৫ মার্চ ৩ লাখ শিশুকে খাওয়ানো হবে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল বাংলাদেশে খুনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার কখনো ফিরে আসার সুযোগ নেই: আমানউল্লাহ আমান শ্যামনগরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পাঁচ সফল প্রতিবন্ধী নারীকে সম্মাননা প্রদান রাজশাহীতে স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার রায়পুরে জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নারীসহ আহত ৬

কমলগঞ্জে আধুনিক চাষাবাদের বিস্তারে হারিয়ে যাচ্ছে আখ চাষ

আধুনিক চাষাবাদের বিস্তারে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ জনপদের এক সময়ের জনপ্রিয় কৃষি আখ চাষ। ১০-১৫ বছর আগেও আখ চাষের বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। শীতের সকালে গ্রামে গ্রামে ঘুরে আখের রস বিক্রি করতেন রস ফেরিওয়ালারা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও আখের রস খাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠতেন। এসব যেন এখন শুধুই স্মৃতি। কালের বিবর্তনে তা যেন এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।

এক সময় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় প্রচুর আখ চাষ হতো। নদীর চড়, হাওড় ও সমতল ভূমিতে প্রচুর আখ চাষ করতেন এখানকার কৃষকরা। গ্রামে গ্রামে গরু-মহিষ দিয়ে চড়কির মাধ্যমে আখের রস সংগ্রহ করা হতো। আধুনিক চাষাবাদের বিস্তারে কৃষকরা সহজলব্য ফসল উৎপাদনে মনোনিবেশ করেছেন। এতে আখ চাষের পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে দেখা মিলে মেশিন দিয়ে আখের রস সংগ্রহের দৃশ্য। গ্রামীণ জনপদের এক সময়ের জনপ্রিয় কৃষি আখ চাষ এখনও ধরে রেখেছেন কৃষক মনসুর আলী। তিনি ট্রাটকারের মাধ্যমে মেশিন দিয়ে আখ থেকে রস সংগ্রহ করে তা আগুনে জ্বাল দিয়ে লালী ও গুড় তৈরি করে বিক্রি করেন।

উপজেলার ভানুগাছ বাজার থেকে রস, লালী, গুড় নিতে আসা আহমেদুজ্জামান আলম ও জাহেদ আহমদ জানান, এই রস লালী, গুড় এগুলো এখন আর গ্রামে নিয়ে কেউ যায় না। এগুলো এখন বিলুপ্তের পথে। আমরা সাধারণত বাজারগুলো থেকে গুড় কিনে খাই। আসলে সেটা কতটুকু স্বাস্থের জন্য ভালো তা জানি না।

তারা আরো বলেন, আমরা ফেইসবুকে দেখতে পাই, এ এলাকায় এই ধরনের চাষ ও বিক্রি হচ্ছে। তাই ১৩ কিলোমিটার পাহারী পথ পাড়ি দিয়ে এসে রস, লালী ও গুড় নিতে আসলাম। তারা আমাদের কাছ থেকে রসের দাম রাখল কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, লালী কেজিপ্রতি ১৫০-১৮০ টাকা ও গুড় ১৮০ টাকা। আসলে দাম কেমন তা দেখে কিনতে আসা হয়নি আমাদের। মূলত এগুলো একদম ফ্রেশ তাই পরিবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছি। এখন প্রচুর শীত। তাই বাসা থেকে পরিবারের সদস্যরা বলেছে বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানিয়ে খাবে। তাই নিতে হচ্ছে।

আলাপকালে আখ চাষী কৃষক মনসুর আলী বলেন, ‌‘গত ৫-৬ বছর ধরে আখ চাষ করে আসছি। সাড়ে দুই কিয়ার (৬০) শতক জায়গায় আমি নিজে এই আখ ক্ষেতের চাষ করি। ৮মাসে এই আখ মারাই করে বিক্রির উপযোগি হয়। আমার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। খরচের টাকার পরেও ১লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ আয় হবে।’

তিনি আরো জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন আসছেন আমার এই কৃষি ক্ষেতে আখ মাড়াই করে রস, লালী ও গুড় তৈরি করা দেখতে ও নিয়ে যাইতে। আমি রস ৬০ টাকা, লালী ১৫০-১৮০টাকা গুড় ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।’

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কর্মস্থল ত্যাগ করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে: আব্দুর রশীদ মিয়া

Verified by MonsterInsights

কমলগঞ্জে আধুনিক চাষাবাদের বিস্তারে হারিয়ে যাচ্ছে আখ চাষ

আপডেট সময় ০৭:৪৪:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

আধুনিক চাষাবাদের বিস্তারে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ জনপদের এক সময়ের জনপ্রিয় কৃষি আখ চাষ। ১০-১৫ বছর আগেও আখ চাষের বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। শীতের সকালে গ্রামে গ্রামে ঘুরে আখের রস বিক্রি করতেন রস ফেরিওয়ালারা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও আখের রস খাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠতেন। এসব যেন এখন শুধুই স্মৃতি। কালের বিবর্তনে তা যেন এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।

এক সময় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় প্রচুর আখ চাষ হতো। নদীর চড়, হাওড় ও সমতল ভূমিতে প্রচুর আখ চাষ করতেন এখানকার কৃষকরা। গ্রামে গ্রামে গরু-মহিষ দিয়ে চড়কির মাধ্যমে আখের রস সংগ্রহ করা হতো। আধুনিক চাষাবাদের বিস্তারে কৃষকরা সহজলব্য ফসল উৎপাদনে মনোনিবেশ করেছেন। এতে আখ চাষের পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে দেখা মিলে মেশিন দিয়ে আখের রস সংগ্রহের দৃশ্য। গ্রামীণ জনপদের এক সময়ের জনপ্রিয় কৃষি আখ চাষ এখনও ধরে রেখেছেন কৃষক মনসুর আলী। তিনি ট্রাটকারের মাধ্যমে মেশিন দিয়ে আখ থেকে রস সংগ্রহ করে তা আগুনে জ্বাল দিয়ে লালী ও গুড় তৈরি করে বিক্রি করেন।

উপজেলার ভানুগাছ বাজার থেকে রস, লালী, গুড় নিতে আসা আহমেদুজ্জামান আলম ও জাহেদ আহমদ জানান, এই রস লালী, গুড় এগুলো এখন আর গ্রামে নিয়ে কেউ যায় না। এগুলো এখন বিলুপ্তের পথে। আমরা সাধারণত বাজারগুলো থেকে গুড় কিনে খাই। আসলে সেটা কতটুকু স্বাস্থের জন্য ভালো তা জানি না।

তারা আরো বলেন, আমরা ফেইসবুকে দেখতে পাই, এ এলাকায় এই ধরনের চাষ ও বিক্রি হচ্ছে। তাই ১৩ কিলোমিটার পাহারী পথ পাড়ি দিয়ে এসে রস, লালী ও গুড় নিতে আসলাম। তারা আমাদের কাছ থেকে রসের দাম রাখল কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, লালী কেজিপ্রতি ১৫০-১৮০ টাকা ও গুড় ১৮০ টাকা। আসলে দাম কেমন তা দেখে কিনতে আসা হয়নি আমাদের। মূলত এগুলো একদম ফ্রেশ তাই পরিবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছি। এখন প্রচুর শীত। তাই বাসা থেকে পরিবারের সদস্যরা বলেছে বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানিয়ে খাবে। তাই নিতে হচ্ছে।

আলাপকালে আখ চাষী কৃষক মনসুর আলী বলেন, ‌‘গত ৫-৬ বছর ধরে আখ চাষ করে আসছি। সাড়ে দুই কিয়ার (৬০) শতক জায়গায় আমি নিজে এই আখ ক্ষেতের চাষ করি। ৮মাসে এই আখ মারাই করে বিক্রির উপযোগি হয়। আমার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। খরচের টাকার পরেও ১লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ আয় হবে।’

তিনি আরো জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন আসছেন আমার এই কৃষি ক্ষেতে আখ মাড়াই করে রস, লালী ও গুড় তৈরি করা দেখতে ও নিয়ে যাইতে। আমি রস ৬০ টাকা, লালী ১৫০-১৮০টাকা গুড় ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।’