কিশোরগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন।
‘দশম গ্রেড আমাদের দাবি নয়, আমাদের অধিকার’ এই স্লোগানে ১২তম গ্রেড প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করে কিশোরগঞ্জের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পিটিআই এর সামনের সড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনের আয়োজন করেন কিশোরগঞ্জ জেলার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকরা। মানববন্ধনে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড নিয়ে এক দফা, এক দাবি জানিয়ে অংশ নেয় শিক্ষকরা।
এ সময় সহকারী শিক্ষকরা বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষকরা সকল ক্ষেত্রে অবহেলিত। শিক্ষা ক্ষেত্রে ভিত্তি স্থাপনে কাজ করে প্রাথমিকের শিক্ষকরা। অথচ নূন্যতম বেতনে চাকরি করতে হচ্ছে তাদের। যথাযথ মর্যাদায় প্রধান শিক্ষকদের পরের ধাপেই সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ করতে হবে। প্রাথমিক স্তরে মেধাবীদের আনতে হলে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন করা জরুরী। যতদিন পর্যন্ত আমাদের ন্যায্য দাবি না মেনে নেওয়া হবে, ততোদিন আন্দোলন চলবে।
আয়োজিত মানববন্ধনে ১০ম গ্রেড দাবি বাস্তবায়নের পক্ষে বক্তব্য দেন, নিকলী উপজেলার হাবশ্বরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক আজিজুল হক, পাকুন্দিয়া উপজেলার সালুয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মাসুমুর রহমান, পাকুন্দিয়া উপজেলার মিরারটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসলিমা সুলতানা, উত্তর গনেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোবারক হোসেন, অষ্ট্রগ্রাম উপজেলার ইকুরদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উজ্জল হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
পাকুন্দিয়া উপজেলার সালুয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মো. মাসুমুর রহমান বলেন, ‘আমরা বলে থাকি শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, কিন্তু আজকে দেখেন যারা জাতির মেরুদণ্ড তৈরি করে তাদের মেরুদন্ডই যদি ভাঙা থাকে তাহলে কীভাবে জাতি গড়বে? এই মর্যাদা নিয়ে শিক্ষকরা কেমন করে জাতি গড়বে? যেখানে টিফিনের খরচ দেওয়া হয় ছয় টাকা সেখানে আমাদের জীবিকা নির্বাহ কীভাবে করবো? আমরা প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
জেলার পাকুন্দিয়ার মিরারটেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক তাসলিমা সুলতানা বলেন, ‘শিক্ষা শিক্ষা শিক্ষা চাই, শিক্ষা ছাড়া উপায় নাই। শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো। শিক্ষার আলোর মশাল নিয়ে আমরা শিক্ষকরা যারা প্রত্যেকের ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছি অথচ আজ আমরাই বৈষম্যের শিকার। শিক্ষার ভিত্তি প্রস্তর তৈরি হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। আমরা আমাদের প্রাপ্য সম্মান চাই।’
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৩ তম গ্রেড থেকে উন্নিত করে ১২তম গ্রেড বাস্তবায়নের একটি প্রস্তবনা পেশ করা হয়। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকবৃন্দ বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই তাদের জন্য ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবী জানিয়ে আসছিলেন।