আমরা একটি নির্বাচন প্রত্যাশা করছি। যে নির্বাচন পরবর্তী রাষ্ট্র মেরামতের অংশ হিসেবে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে দেশ ও জনগণের সুফল পৌঁছে দিতে চায়। নির্বাচন ব্যবস্থা না থাকলে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায় না।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) মাগুরা নোমানী ময়দান অডিটরিয়ামে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষযয়ক কমিটি এই আয়োজনটি করে।
দিনব্যাপী চলা এই প্রশিক্ষণে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এই প্রশিক্ষণ বিষয়ক কর্মশালায় মাগুরাসহ কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর যুক্ত ছিল।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জনগণ সম্পৃক্ত আছে এমন যেকোনো পর্যায়ে নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে। যার মধ্য দিয়ে জনসম্পৃক্ত এবং যোগ্য নেতা তৈরি হবে। তারাই সমাজের সমস্যা সমাধান করতে পারবে। বিগত সরকার বিগত ১৬ বছরে দেশের সর্বত্রই ভেঙেচুরে গুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সেই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভেঙেচুরে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামত করতে চাই।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনের সংস্কার কমিটি যে সংস্কার ম‚লক প্রস্তাব জমা দিয়েছেন তার অধিকাংশই আমাদের ৩১ দফার সাথে মিল আছে। আমরা এই সংস্কার প্রস্তাব বিগত দুই বছর আগে থেকেই বলে আসছিলাম।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও গত ১৬ বছর গুম-খুনের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে শহীদ হয়েছেন, তাদেরকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হবে। তালিকা করে শহীদ ও আহতদের খোঁজখবর নেওয়া হবে। আমরা বিগত দিনগুলোতে দলীয়ভাবে এসব পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রীয়ভাবে কাজ করার চেষ্টা করবো।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে ১৬ বছরে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা খুন-গুম, হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে প্রতিটি পরিবারে একটি করে ফ্যামিলি কার্ড দেবো, যে কার্ডের মাধ্যমে দেশে উৎপাদিত পণ্য প্রতিটি পরিবারের মাঝে যেন পৌঁছে দিতে পারি। আমাদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ নারী। নারীদের সুরক্ষার জন্য দলীয়ভাবে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেওয়া হবে। নারী শিক্ষা অবৈতনিক করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। আমাদের নারীরা এখন সচেতন। এখন নারীদের দৃঢ়ভাবে দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।
আপনাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াবো। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো। নিজেদেরকে জনগণের আস্থায় নিয়ে যেতে হবে। নিজেদেরকে শুধরাতে হবে। আগামীতে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ ফিরতে পারবে না।
বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির আয়োজনে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী। মাগুরা জেলা বিএনপির আহবায়ক আলী আহমেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ক্যাপ্টেন (অব.), কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন, খুলনা বিভাগীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মাগুরা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান, বিএনপির যুগ্ম আহ্ববায়ক আখতার হোসেন, জেলা আহ্ববায়ক কমিটির সদস্য আহসান হাবিব কিশোর, জেলা যুবদলের আহ্ববায়ক মুশফিকুর রহমান কল্লোলসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।