প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিখ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে, অর্থদাতা হিসেবে প্যারিস চুক্তি থেকে তারা নিজেদের নাম প্রত্যাহার করছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে চুক্তির কার্যকারিতা শেষ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্যারিসে প্রায় ২০০টি দেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি রোধ করতে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চুক্তি কার্যকর না হলে পৃথিবী মারাত্মক জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
এদিকে, গত ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস চুক্তি থেকে বের করে দেওয়ার আদেশ দেন। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন প্রথমবারের মতো তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি ত্যাগের কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছেন। তার মতে, প্যারিস চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের পরিপন্থি, যা দেশের শিল্পক্ষেত্র এবং কর্মসংস্থানে বাধা সৃষ্টি করবে।
তবে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করছেন। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ কার্বন নিঃসরণকারী একটি দেশ যদি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে, তা হবে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা।