ঢাকা ০৫:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
ইসরায়েলি নেতাদের ট্রাম্পের গাজা উপত্যকা দখলের প্রস্তাবে সমর্থন মিয়ানমারের জান্তা সরকার নারীকে বাধ্যতামূলক সামরিক চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত করছে ভারতের পার্লামেন্টে শেখ হাসিনাকে ফেরতের বিষয়ে আলোচনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ‘ধানমন্ডি ৩২’ মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত ৪ পুলিশ সদস্য ধানমন্ডি ৩২ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব শেখ মুজিবকে নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক্সে পোস্টের সত্যতা! অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন আটক ক্ষেতলালে ইউএনওর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ময়মনসিংহে শিশুকে অপহরণ করে লাশ গুমের ঘটনায় যুবকের আমৃত্যু কারাদন্ড মৌলভীবাজারে শেখ মুজিবুর রহমানের দু’টি পৃথক ম্যুরাল ভাংচুর করেছে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা

মৌলভীবাজারে ৩ দফা দাবীতে চা-শ্রমিকদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

৩ দফা দাবীতে চা-শ্রমিকদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নগদ মজুরী ৫০০টাকা নির্ধারণসহ ৩দফা দাবীতে চা-শ্রমিকদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় চা শ্রমিক আন্দোলনে ক্রীয়াশীল সংগঠনসমূহের আয়োজনে উক্ত সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

এতে নিম্নতম মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করে নগদ মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা, অবিলম্বে বন্ধ বাগানসমূহ চালু করে দুর্গাপূজার আগেই সকল বকেয়া ও বোনাস পরিশোধ করা এবং চা শ্রমিক ইউনিয়নের মেয়াদোতীর্ণ নেতৃত্ব-কে অবিলম্বে অপসারণ করে নির্বাচন দেওয়ার দাবী তুলেন চা শ্রমিকরা। এছাড়া আগামী বুধবার মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শ্রম উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে বলে সমাবেশে জানানো হয়।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজী পাশীর সভাপতিত্বে এবং ছাত্র নেতা ও চা-শ্রমিক সন্তান মিখা পিরেগু এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আবুল হাসান, ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কিরণ শুক্লবৈদ্য, বাংলাদেশ চা শ্রমিকের দশ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক সবুজ তাঁতী, ছাত্রনেতা ও চা শ্রমিকের দশ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক মনিষা ওয়াহিদ, সিপিবি শ্রীমঙ্গল উপজেলা সভাপতি প্রভাষক জলি পাল, সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মো. মোসাদ্দেক বেলা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মৌলভীবাজার শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব সূত্রধর, করিমপুর চা বাগানের ইউপি সদস্য কাজল রায়, মদনমোহনপুর চা বাগানের মথুর চন্দ্র চাষা, মাথিউড়া চা বাগানের ময়না রাজভর, কালিটি চা বাগানের কৃষ্ণ দাস অলমিক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিগত ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে চা শ্রমিকদের দৈনিক নগদ মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়। উক্ত গেজেটের তফসিল (ঙ) এর ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের এক বছর পর থেকে প্রতিবছর ৫% হারে মজুরি বৃদ্ধির বিধান রয়েছে। সে মোতাবেক চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ মূলমজুরি ১৭০ টাকার ৫% হারে মাত্র ৮.৫০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে সার্কুলার জারি করে। মূলত এর পর থেকেই চা শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের এর সঞ্চার হয়।
আজকের কর্মসূচি থেকে চা শ্রমিকরা মালিকপক্ষ ও পতিত স্বৈরাচারের যোগসাজশে একতরফা অগণতান্ত্রিকভাবে ঘোষিত গেজেট প্রত্যাখ্যান করেন। একই সাথে মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করে বর্তমান বাজারদরের সাথে সঙ্গতি রেখে চা শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণের দাবী জানানো হয়।

বক্তারা আরোও বলেন, ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১২ টি চা বাগান, দেওন্দি টি কোম্পানির ৪টি চা বাগান, মাথউরা, মুমিনছড়া, ফুলতলা, কালগুল প্রভৃতি চা বাগান গুলো মালিপক্ষের দুর্নীতি অবহেলায় অব্যবস্থাপনা শিকার হয়ে ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উক্ত বাগানগুলোর শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবত মজুরি বঞ্চিত হয়েও চা বাগানের উৎপাদন কার্যক্রম চালু রেখেছেন। শ্রমিকদের বৃহত্তর উৎসব দুর্গাপূজার আগেই বকেয়া মজুরি ও বোনাস পাওয়ার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

১৬৭ টি চা বাগান, ৭টি ভ্যালি, ১ লাখের উপর স্থায়ী শ্রমিক, ৫০ হাজারের বেশি অস্থায়ী শ্রমিক আর ১০ লাখের বেশি চা জনগোষ্ঠীর মানুষ নিয়ে চা শিল্প৷ পাতা তোলার সুবিধার জন্য চা গাছকে ছেঁটে যেমন ২৬ বা ২৮ ইঞ্চি করে রাখা হয়, তেমনি চাষ শ্রমিকদের জীবনের স্বপ্নকেও বড় হতে দেয়া হয় না বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা। চা শিল্পের বয়স প্রায় ২০০ বছর হলেও চা শ্রমিকদের নগদ মজুরি এখনো ১৭০ টাকা। এই অন্যায্য মজুরির মাধ্যমে বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এমতাবস্থায় আন্দোলনে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সংগঠন চা শ্রমিকদের শত বছরের বৈষম্য বঞ্চনার নিরসন ঘটিয়ে মানবিক জীবন প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবী জানান।

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
Verified by MonsterInsights

মৌলভীবাজারে ৩ দফা দাবীতে চা-শ্রমিকদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

আপডেট সময় ০৬:০১:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নগদ মজুরী ৫০০টাকা নির্ধারণসহ ৩দফা দাবীতে চা-শ্রমিকদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গল চৌমুহনায় চা শ্রমিক আন্দোলনে ক্রীয়াশীল সংগঠনসমূহের আয়োজনে উক্ত সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

এতে নিম্নতম মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করে নগদ মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা, অবিলম্বে বন্ধ বাগানসমূহ চালু করে দুর্গাপূজার আগেই সকল বকেয়া ও বোনাস পরিশোধ করা এবং চা শ্রমিক ইউনিয়নের মেয়াদোতীর্ণ নেতৃত্ব-কে অবিলম্বে অপসারণ করে নির্বাচন দেওয়ার দাবী তুলেন চা শ্রমিকরা। এছাড়া আগামী বুধবার মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শ্রম উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে বলে সমাবেশে জানানো হয়।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজী পাশীর সভাপতিত্বে এবং ছাত্র নেতা ও চা-শ্রমিক সন্তান মিখা পিরেগু এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আবুল হাসান, ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কিরণ শুক্লবৈদ্য, বাংলাদেশ চা শ্রমিকের দশ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক সবুজ তাঁতী, ছাত্রনেতা ও চা শ্রমিকের দশ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক মনিষা ওয়াহিদ, সিপিবি শ্রীমঙ্গল উপজেলা সভাপতি প্রভাষক জলি পাল, সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মো. মোসাদ্দেক বেলা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মৌলভীবাজার শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব সূত্রধর, করিমপুর চা বাগানের ইউপি সদস্য কাজল রায়, মদনমোহনপুর চা বাগানের মথুর চন্দ্র চাষা, মাথিউড়া চা বাগানের ময়না রাজভর, কালিটি চা বাগানের কৃষ্ণ দাস অলমিক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিগত ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে চা শ্রমিকদের দৈনিক নগদ মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়। উক্ত গেজেটের তফসিল (ঙ) এর ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের এক বছর পর থেকে প্রতিবছর ৫% হারে মজুরি বৃদ্ধির বিধান রয়েছে। সে মোতাবেক চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ মূলমজুরি ১৭০ টাকার ৫% হারে মাত্র ৮.৫০ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে সার্কুলার জারি করে। মূলত এর পর থেকেই চা শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের এর সঞ্চার হয়।
আজকের কর্মসূচি থেকে চা শ্রমিকরা মালিকপক্ষ ও পতিত স্বৈরাচারের যোগসাজশে একতরফা অগণতান্ত্রিকভাবে ঘোষিত গেজেট প্রত্যাখ্যান করেন। একই সাথে মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করে বর্তমান বাজারদরের সাথে সঙ্গতি রেখে চা শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণের দাবী জানানো হয়।

বক্তারা আরোও বলেন, ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১২ টি চা বাগান, দেওন্দি টি কোম্পানির ৪টি চা বাগান, মাথউরা, মুমিনছড়া, ফুলতলা, কালগুল প্রভৃতি চা বাগান গুলো মালিপক্ষের দুর্নীতি অবহেলায় অব্যবস্থাপনা শিকার হয়ে ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উক্ত বাগানগুলোর শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবত মজুরি বঞ্চিত হয়েও চা বাগানের উৎপাদন কার্যক্রম চালু রেখেছেন। শ্রমিকদের বৃহত্তর উৎসব দুর্গাপূজার আগেই বকেয়া মজুরি ও বোনাস পাওয়ার অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

১৬৭ টি চা বাগান, ৭টি ভ্যালি, ১ লাখের উপর স্থায়ী শ্রমিক, ৫০ হাজারের বেশি অস্থায়ী শ্রমিক আর ১০ লাখের বেশি চা জনগোষ্ঠীর মানুষ নিয়ে চা শিল্প৷ পাতা তোলার সুবিধার জন্য চা গাছকে ছেঁটে যেমন ২৬ বা ২৮ ইঞ্চি করে রাখা হয়, তেমনি চাষ শ্রমিকদের জীবনের স্বপ্নকেও বড় হতে দেয়া হয় না বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা। চা শিল্পের বয়স প্রায় ২০০ বছর হলেও চা শ্রমিকদের নগদ মজুরি এখনো ১৭০ টাকা। এই অন্যায্য মজুরির মাধ্যমে বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এমতাবস্থায় আন্দোলনে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সংগঠন চা শ্রমিকদের শত বছরের বৈষম্য বঞ্চনার নিরসন ঘটিয়ে মানবিক জীবন প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবী জানান।