যশোরের শার্শার গোগা ইউনিয়ন জনপদে চলছে ত্রাসের রাজত্ব। জবর দখল, চাঁদা আদায় ও ইট ভাটা দখল করে নিয়েছে আদালতে ৫টি মাদক মামলার আসামী ও মাদক সিন্ডিকেট বাহিনীর প্রধান কুখ্যাত সন্ত্রাসী হামিদ সর্দার। তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বিচার কার্য বসিয়ে নিরীহ মানুষদের কাছ থেকে আদায় করছে মোটা অংকের টাকা। কেউ টাকা দিতে না চাইলে সেই পরিবারের উপর চালানো হচ্ছে নির্যাতন।
সেই সব পরিবারের সদস্যদের বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বাজার ঘাটে যাওয়া। বিঘ্ন ঘটছে জনজীবনে।
শার্শার গোগা ইউনিয়নের অগ্রভুলাট গ্রামের সিরালী মোড়লের ছেলে বাদশা মিয়া জানান, আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু পারিবারিক গোলযোগে তার তালাক হয়। এ ব্যাপারে হামিদ বাহিনীর প্রধান বিএনপির নেতা হামিদ সর্দার আমার কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে এবং একটি সিলিপ দিয়ে বলে গেছে আরো দশ লাখ টাকা না দিলে তোর পরিবারের কাউকে গ্রাম থেকে বেরুতে দেবো না।
সেই থেকে জীবনের ভয়ে আমরা এখন ঘর বন্দী হয়ে রয়েছি। আমার ছেলে গোগা বাজারে গেলে তাকে ভয়ভীতি দেখালে সে আর ভয়ে বাজারে যায় না। চাঁদাবাজ হামিদ সর্দার গোগা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে দলীয় ক্ষমতা পেয়ে সে আরো বেপরোয়া হয়ে মানুষের উপর অত্যাচার করছে।
গোগা বাজারের পুর্ব পাশে বাড়ী গোলাম রসুলের ছেলে ফারুক হোসেন জানান, হামিদ বাহিনীর ভয়ে আমি আজ গ্রাম ছাড়া হয়েছি। এখন আত্বগোপন করে আছি ঢাকাতে। হামিদ বাহিনীর প্রধান হামিদসহ তার ত্রাস বাহিনীর সদস্যরা আমার কাছে মোটা অংকের চাঁদাদাবি করলে তা দিতে না পারায় তারা আমার ইট ভাটা এ আরবি ব্রিকস্ (গাগা কলেজ রোডে) দখল করে নিয়েছে হামিদ বাহিনী। আমার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাদের ভয়ে আইনের আশ্রয়ও নিতে পারছি না।
কালিয়ানী গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে আয়ুব হোসেন জানান, সন্ত্রাসী হামিদ সর্দার আমাদের পরিবারর কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে তার চাঁদার টাকা না দিতে পারায় তার নের্তৃত্বে তার বাহিনীর সদস্য জুলফিকার, ফারুক, আরিফসহ একটি সন্ত্রাসীদল আমাদের পরিবারের উপর হামলা চালায়। মারপিট করে পরিবারের সকল সদস্যকে। এ ব্যাপারে শার্শা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম আমাদের অভিযোগ না নিয়ে মাদক সিন্ডিকেট প্রধান ত্রাস হামিদ সর্দারের পক্ষ নিয়ে আমাদের পরিবারের ৩ জন সদস্যকে আটক করেন।
এ ব্যাপারে ত্রাস হামিদ সর্দার ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জোরদাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এ ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। দ্রুত তাকে দল থেকে বহিস্কারের জোর দাবি জানিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এ ব্যাপারে হামিদ সর্দারের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, হামিদ সর্দারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী আয়ুব হোসেনের অভিযোগ না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওসি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. সাবেরুল হক সাবু জানান, যেহেতু হামিদ সর্দারের দখল-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থ গ্রহণ করা হবে।