ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আদালতের রায়ে জয়ী ঘোষণার পর বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এসব সমালোচনার জবাবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন জানিয়েছেন, ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি হারেননি, বরং তাকে পরিকল্পিতভাবে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে রিকশা, ভ্যান ও অটোচালকদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়।
ইশরাক হোসেন বলেন, “ভোটের পরপরই আমি আইন অনুযায়ী মামলা করেছিলাম। কিন্তু সেই মামলাকে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ পাঁচ বছর আইনি লড়াই চালানোর পর আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে কেউ কেউ এই রায় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তারা হয়তো জানেন না, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইন অনুযায়ী, নির্বাচন শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ জানাতে হয়। আমি সেই সময়ের মধ্যেই মামলা করেছিলাম। ১৮০ দিনের মধ্যে এই মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার কথা থাকলেও তৎকালীন সরকার প্রভাব খাটিয়ে তা আটকে রেখেছিল।”
ইশরাকের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম জানান, “২০২০ সালের নির্বাচনে ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলা করা হয়, ইভিএমে জালিয়াতি করা হয় এবং ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়। এত অনিয়মের পরেও নির্বাচন কমিশন শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র ঘোষণা করেছিল। সেই ফল চ্যালেঞ্জ করে ইশরাক হোসেন আদালতে মামলা করেন, যা দীর্ঘদিন পরে নিষ্পত্তি হলো।”
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইশরাক হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে নির্বাচনের আগের ফল ও সরকারের জারি করা গেজেট বাতিল করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম উত্তরের এবং ফজলে নূর তাপস দক্ষিণের মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন পরদিনই গেজেট প্রকাশ করে। পরে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাদের মেয়র পদ বাতিল করা হয়।