বড়লেখায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ২য় পর্যায়ে ২৫ জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার গৃহ নির্মাণ কাজের বর্ধিত মেয়াদ প্রায় ২ বছর পাড় হলেও আওয়ামী লীগ দলীয় তিনজন ঠিকাদার ৭ ঘরের নির্মাণ কাজ শুরুই করেননি। আংশিক কাজ করে ঝুলানো রয়েছে ১০টি ঘর। এছাড়াও ভূমি জটিলতায় আরো তিনটি ঘরের কাজ শূন্যের কোটায়। এতে অসচ্ছল জীবিত ১৫ মুক্তিযোদ্ধা জীবদ্দশায় সরকারের উপহারের ঘর দেখে যাওয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণে সরকারি বরাদ্দ রয়েছে ১৪ লাখ টাকা করে।
সরেজমিনে উপজেলার কাঠালতলী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছমির উদ্দিনের বীর নিবাস নির্মাণের নির্ধারিত ভূমি ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দক্ষিণভাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ঠিকাদার সনজিৎ দাস গৃহ নির্মাণের মাপযোগ করেই যেন দায় সেরেছেন। বর্ধিত মেয়াদের প্রায় দুই বছর পার হলেও তিনি এই গৃহের কাজ শুরুই করেননি। এই আওয়ামী লীগ নেতা আরো চারটি বীর নিবাস নির্মাণের টেন্ডার পেলেও সেগুলোর কাজ সম্পন্ন করেছেন মাত্র ৫০ থেকে ৬০ ভাগ।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ পাঁচটি বীর নির্মাণের কার্যাদেশ পেলেও বর্ধিত মেয়াদের দুই বছর পাড় হলেও একটির কাজও শুরু করেননি। উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাকের আহমদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আঁখি এন্ড মনি এন্টারপ্রাইজ একটি গৃহের কাজ শুরুই করেননি। তিনটি ঘরের কাজ সম্পন্ন করেছেন মাত্র ২৫ ভাগ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে দ্বিতীয় পর্যায়ে বড়লেখা উপজেলার অসচ্ছল ২৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার আবাসনের জন্য বীর নিবাস নির্মাণের উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বীর নিবাস নির্মাণের টেন্ডার পায়। ৯০ দিনে গৃহ নির্মাণ সম্পন্নের শর্তে ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর ঠিকাদারদের কার্যাদেশ দেয় উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদাররা বীর নিবাসগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু না করায় ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বর্ধিত করা হয়। বর্ধিত সময়ে পাঁচটি বীর নিবাস নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত হোমায়ারা এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যরা একটি গৃহেরও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মিজানুর রহমান জানান, ২৫ বীর নিবাসের পাঁচটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছেন একজন ঠিকাদার। বাকি ৪ ঠিকাদারের কেউই শতভাগ কাজ সম্পন্ন করেননি। বারবার লিখিত নোটিশ সত্ত্বেও অনেকের কাজের অগ্রগতি শূন্য। আওয়ামী লীগ দলীয় তিন ঠিকাদার পলাতক রয়েছেন। এ ব্যাপারে নির্দেশনা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে।