ঢাকা ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
পদত্যাগ করলেন মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সের সচিব খুরশেদ আলম সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান আটক অবশেষে দুর্নীতিপরায়ন স্থানীয় সরকার সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান ওএসডি প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অর্ধ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ কমলগঞ্জে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালন ক্ষেতলালে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত মনিটরিং টিম গঠন করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান ঢাবিতে বিশেষ ক্লাস নিলেন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বাংলাদেশি উপাচার্য যশোরে পশুর হাটে চলছে লুটপাট, ইউএনও-র নামে মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্রুত গণতন্ত্র রক্ষায় নির্বাচন দিন: রিজভী
সংবাদ শিরোনামঃ
অবশেষে দুর্নীতিপরায়ন স্থানীয় সরকার সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান ওএসডি যশোরে পশুর হাটে চলছে লুটপাট, ইউএনও-র নামে মিথ্যা বিজ্ঞাপন তাকসিম সিন্ডিকেটের সুবিধাভোগীরা এখনো বহাল তবিয়তে শ্রীমঙ্গলে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাবনায় সাবেক ২ মেয়র ও কাউন্সিলরসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার মেয়র আতিকের এপিএস ফরিদের দুর্নীতির শত শত কোটি টাকা তার মালিকানা নগদ ডিস্ট্রিবিউশন এফ আর ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে কারাগার থেকে পালানো যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

নেশায় ভাগ না দেওয়ায় সৎ ভাইয়ের হাতে খুন

গাজীপুর সদরে আবু বক্কর (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ মহাসড়কের ডিভাইডারের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার সৎ ভাই হালিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হালিম নেশায় ভাগ না পেয়ে ক্ষোভে কাঁচের বোতল ভেঙে ছোট ভাইকে হত্যা করেছেন বলে জানায় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় জয়দেবপুর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। এ সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ওসি বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে জয়দেবপুর থানার বাঘের বাজার এলাকায় মন্ডল গার্মেন্টসের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভাজকের মধ্যে আবু বক্করের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানতে পারে, নিহত আবু বক্কর ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার গরজা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি বাঘের বাজার এলাকায় তার সৎ ভাই হালিমের সঙ্গে থাকত। হালিম ভিক্ষাবৃত্তি করত ও আবু বক্কর টোকাই ছিল। রাতে দুই ভাই মহাসড়কের ফুটওভার ব্রিজের ওপর ঘুমাতো।

ওসি আরও জানান, আবু বক্করের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে জয়দেবপুর থানার পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ শুরু করে। পুলিশ প্রথমে বাঘের বাজার এলাকায় সমস্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ দেখতে পায়, ঘটনার দিন রাত ৩টা ২২মিনিটের দিকে মন্ডল গার্মেন্টসের সামনে আইল্যান্ডের ভেতরে এক ব্যক্তি প্রবেশ করে সে রাত ৩টা ৩৩ মিনিটের দিকে বের হয়ে ফুটওভার ব্রিজের দিকে চলে যায়।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফের মন্ডল গার্মেন্টসের সামনে ঘটনাস্থলে কিছু সময় অবস্থান করে। পুলিশ সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবু বক্করকে হত্যার ঘটনায় তার ভাই হালিমকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে বাঘের বাজার এলাকা থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে হালিমকে গ্রেপ্তার করে। হালিম পুলিশের কাছে অপরাধ স্বীকার করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে হালিম জানান, তার সৎ ভাই আবু বক্কর বোতল বিক্রি করতো। আবু বক্কর জুয়া ও নেশায় আসক্ত ছিল। মাঝে মধ্যে হালিমের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যেতো।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর তারা দুই ভাই ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর আসে। ওই দিন রাত ৮টার দিকে হালিম বাঘের বাজার ওভারব্রিজের ওপরে ভিক্ষা করার সময় আবু বক্কর মাদক কেনার জন্য তার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে চলে যায়। দীর্ঘসময় পরেও আবু বক্কর ফিরে না আসায় হালিম ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে তাকে খুঁজতে বের হয়ে দেখে, আবু বক্কর মন্ডল ইন্টিমিটস লিমিটেড নামের কারখানার সামনে মহাসড়কের আইল্যান্ডের ওপর বসে জুতার আঠা দিয়ে নেশা করছে। হালিম কাছে এগিয়ে গেলে তার কাছে আরও টাকা চায় আবু বক্কর। টাকা দিতে না চাইলে হালিমকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারে। এর একটু পরেই আবু বক্কর নেশার ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে হালিম পাশে পড়ে থাকা কাঁচের বোতল আইল্যান্ডের লোহার রেলিংয়ে ভেঙে ধারালো অংশ দিয়ে আবু বক্করের বুকের বাম পাশে ও বুকের ডান পাশে এলোপাথারি আঘাত করে।

এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে বাঘেরবাজারের ফুটওভার ব্রিজের ওপরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৬টায় ঘটনাস্থলে দিকে আবু বক্করের মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।

ওসি বলেন, মামলার তদন্তকালে পুলিশ জানতে পারে আসামি হালিম নেশার জন্য কেনা ট্যাবলেটের ভাগ না পেয়ে রাগে ক্ষোভে পাশে থাকা কাঁচের ধারালো বোতল দিয়ে আঘাত করে আবু বক্করকে হত্যা করে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পদত্যাগ করলেন মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সের সচিব খুরশেদ আলম

নেশায় ভাগ না দেওয়ায় সৎ ভাইয়ের হাতে খুন

আপডেট সময় ০৪:১৪:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজীপুর সদরে আবু বক্কর (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ মহাসড়কের ডিভাইডারের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার সৎ ভাই হালিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হালিম নেশায় ভাগ না পেয়ে ক্ষোভে কাঁচের বোতল ভেঙে ছোট ভাইকে হত্যা করেছেন বলে জানায় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় জয়দেবপুর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। এ সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ওসি বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে জয়দেবপুর থানার বাঘের বাজার এলাকায় মন্ডল গার্মেন্টসের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভাজকের মধ্যে আবু বক্করের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানতে পারে, নিহত আবু বক্কর ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার গরজা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি বাঘের বাজার এলাকায় তার সৎ ভাই হালিমের সঙ্গে থাকত। হালিম ভিক্ষাবৃত্তি করত ও আবু বক্কর টোকাই ছিল। রাতে দুই ভাই মহাসড়কের ফুটওভার ব্রিজের ওপর ঘুমাতো।

ওসি আরও জানান, আবু বক্করের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে জয়দেবপুর থানার পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ শুরু করে। পুলিশ প্রথমে বাঘের বাজার এলাকায় সমস্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ দেখতে পায়, ঘটনার দিন রাত ৩টা ২২মিনিটের দিকে মন্ডল গার্মেন্টসের সামনে আইল্যান্ডের ভেতরে এক ব্যক্তি প্রবেশ করে সে রাত ৩টা ৩৩ মিনিটের দিকে বের হয়ে ফুটওভার ব্রিজের দিকে চলে যায়।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফের মন্ডল গার্মেন্টসের সামনে ঘটনাস্থলে কিছু সময় অবস্থান করে। পুলিশ সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবু বক্করকে হত্যার ঘটনায় তার ভাই হালিমকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে বাঘের বাজার এলাকা থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে হালিমকে গ্রেপ্তার করে। হালিম পুলিশের কাছে অপরাধ স্বীকার করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে হালিম জানান, তার সৎ ভাই আবু বক্কর বোতল বিক্রি করতো। আবু বক্কর জুয়া ও নেশায় আসক্ত ছিল। মাঝে মধ্যে হালিমের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যেতো।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর তারা দুই ভাই ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর আসে। ওই দিন রাত ৮টার দিকে হালিম বাঘের বাজার ওভারব্রিজের ওপরে ভিক্ষা করার সময় আবু বক্কর মাদক কেনার জন্য তার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে চলে যায়। দীর্ঘসময় পরেও আবু বক্কর ফিরে না আসায় হালিম ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে তাকে খুঁজতে বের হয়ে দেখে, আবু বক্কর মন্ডল ইন্টিমিটস লিমিটেড নামের কারখানার সামনে মহাসড়কের আইল্যান্ডের ওপর বসে জুতার আঠা দিয়ে নেশা করছে। হালিম কাছে এগিয়ে গেলে তার কাছে আরও টাকা চায় আবু বক্কর। টাকা দিতে না চাইলে হালিমকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারে। এর একটু পরেই আবু বক্কর নেশার ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে হালিম পাশে পড়ে থাকা কাঁচের বোতল আইল্যান্ডের লোহার রেলিংয়ে ভেঙে ধারালো অংশ দিয়ে আবু বক্করের বুকের বাম পাশে ও বুকের ডান পাশে এলোপাথারি আঘাত করে।

এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে বাঘেরবাজারের ফুটওভার ব্রিজের ওপরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৬টায় ঘটনাস্থলে দিকে আবু বক্করের মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।

ওসি বলেন, মামলার তদন্তকালে পুলিশ জানতে পারে আসামি হালিম নেশার জন্য কেনা ট্যাবলেটের ভাগ না পেয়ে রাগে ক্ষোভে পাশে থাকা কাঁচের ধারালো বোতল দিয়ে আঘাত করে আবু বক্করকে হত্যা করে।