পাঁচ বছর ধরে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন এক সহকারি শিক্ষক বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নিয়মবহির্ভূতভাবে শ্রেনিকক্ষে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন ভাতাসহ সকল  সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন আকুবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক ফোরকান মিয়া।

জানা যায়, মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকে মাছের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ওই শিক্ষক। তবে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রতিনিয়ত স্বাক্ষর করছেন হাজিরা খাতায়। বিষয়টি মাদ্রাসার সুপার, অন্যান্য শিক্ষকসহ স্থানয়ীরা অবগত থাকলেও অদৃশ্য কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতেও সাহস পায় না।

ঘটনাটি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসার। অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক ফোরকান মিয়া উপজেলার আকুবপুর গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের ছেলে।

জানা যায়, ১৯৮৮ সালে আকুবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসার মাধ্যমিক শাখার কৃষি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ফোরকান মিয়া। গত ৫ বছর যাবৎ তিনি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকে এলাকায় মাছের ব্যবসা করেন। তার কয়েকটি মাছের পুকুর আছে, তিনি সেখানেই বেশি সময় দেন। স্ত্রী শারমিন আক্তারকে দিয়ে বিধিবহির্ভূত ক্লাস নেন অধ্যক্ষ। সপ্তাহে একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন অনুপস্থিত থাকা শিক্ষক ফোরকান মিয়া।

অভিযুক্ত শিক্ষক ফোরকান মিয়া বলেন, মাঝে মধ্যে ব্যবসার কাজে এদিক সেদিক যাই। তখন ৩/৪ দিন মাদ্রাসায় আসতে পারি না। পরে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করি। ৪ বছর যাবৎ শরীরে ইউরিন সমস্যা আছে। এই বেতনে চলতে পারি না। তাই মাছের ব্যবসাসহ এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কাজে সময় দেই।

আকুবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি ২০১০ সালে মাদ্রাসায় যোগদান করার পর থেকে উনাকে অনিয়মিত পাই। অনেকগুলো নোটিশ করেছি। কিন্তু কোন সুরাহ হয়নি। সে অসুস্থ্যতার কথা বলে মাদ্রাসায় নিয়মিত আসে না। শুনেছি মাছের ব্যবসা করেন। এ ছাড়াও ফোরকান মিয়ার স্ত্রী ক্লাশ নেওয়ার বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির দ্বারা রেজুলেশনকৃত নয়। আসলে সব কিছুই নিয়ম বহির্ভূত হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার জানান, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কোনো নিয়ম নেই। প্রক্সি ক্লাসেরও কোনো বিধান নেই। অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বহী অফিসার সিফাত উদ্দিন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।