সরকারে থাকার চেয়ে এখন রাজপথে থাকা বেশি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য পদত্যাগ করা অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম তাঁর পদত্যাগের পেছনে গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “৮ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর তিনজন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা ছিল না। তখন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করা আমাদের কাছে যৌক্তিক মনে হয়।”
গত সাড়ে ৬ মাস ধরে সরকার কার্যকর হলেও তিনি মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের বাইরে থেকে রাজপথে কাজ করার ভূমিকা আমার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নাহিদ ইসলামের মতে, ছাত্র-জনতার কাতারে থাকা ও গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে জীবন্ত রাখতে আমার নেতৃত্ব অপরিহার্য। তাঁর মতে, সরকারের বাইরে থেকে কাজ করলে দেশের বহিরাগত সহযোগী যোদ্ধাদেরও আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
গত কয়েকদিন ধরে নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের গুঞ্জন চলছিল। পূর্বেই তিনি বেশ কয়েকবার জানিয়েছিলেন, পদত্যাগের মাধ্যমে তিনি নতুন দলের সাথে যুক্ত হবেন। আজ তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া ও রাজনৈতিক দলের নতুন সূচনার পথ সুগম হওয়ার ইঙ্গিত স্বরূপ।
নাহিদ ইসলামের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনের পরিচয়ও কিছুটা বিশেষ। ১৯৯৮ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণকারী নাহিদ, যাঁর ডাকনাম ‘ফাহিম’, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন ও ইতিমধ্যে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তাঁর পরিবারের মধ্যে তাঁর বাবা একজন শিক্ষক এবং তাঁর একটি ছোট ভাই রয়েছে; পাশাপাশি তিনি ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত।
জুলাই মাসে অপহরণের ঘটনায় নাহিদ তখন ততটা পরিচিত ছিলেন না, তবে কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দু’বার আটক ও অকথ্য নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর দেশব্যাপী তাঁর পরিচিতি বৃদ্ধি পায়। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং তিন দিনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।