মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর বাজারের মুক্তিযোদ্ধা চত্বর ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েছেন স্থানীয়রা।
চত্বরের একদিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক, অন্যদিকে ঢাকা অভিমুখী আঞ্চলিক মহাসড়ক। চত্বরের বিভিন্ন স্থানে রাখা ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিবেশদূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাগাড়ের পরিসর বেড়ে ফুটপাত ও মহাসড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় সাধারণ পথচারী ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
গত ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ও কিছু সংখ্যক মাদরাসা শিক্ষকের উদ্যোগে শেরপুর বাজারের আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়। এতে তারা প্রশংসা অর্জন করেন স্থানীয়দের কাছ থেকে।
তবে পরবর্তী সময়ে তা আবার আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। শিক্ষার্থীদের শ্রম পণ্ড করে ওই এলাকায় আবারও গড়ে তোলা হয়েছে ময়লার স্তূপ।
জনসাধারণের চলাচলের দিক দিয়ে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর বাজারের মুক্তিযোদ্ধা চত্বর বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। তবে পরিবেশগত দিক দিয়ে এ এলাকার মানুষ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে এ অঞ্চলের অন্যতম সমরস্থল খ্যাত এ চত্বরের অবমাননাও হচ্ছে এভাবে ময়লা ফেলার কারণে।
মূলত ময়লা ফেলার নির্ধারিত স্থান না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে শেরপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা এই চত্বরের আশপাশের জায়গাকেই ভাগাড়ে পরিণত করেছেন। শেরপুর হাইওয়ে থানা, মৌলভীবাজার সড়কের ট্রাকস্ট্যান্ড এবং স্থানীয় পোস্ট অফিসের সামনে জমেছে বিশাল আবর্জনার স্তূপ।
হামরকোনা গ্রামের অধিবাসী ইয়াসীন সেলিম জানান, শেরপুর বাজারে কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি না থাকায় সমস্যা প্রকট হচ্ছে। পরিবেশদূষণ ও জলাবদ্ধতার কবল থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে ব্যবসায়ীদের সচেতনতার পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে একটি ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা খুব জরুরি।
শেরপুর বাজারের ব্যবসায়ী এমদান মো. সিরাজ জানান, আবর্জনা যত্রতত্র যাতে কেউ ফেলতে না পারে তার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা আবশ্যক। পরে এ আবর্জনা দূরবর্তী নির্ধারিত স্থানে নিয়ে ফেলা হলে এমন অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিমল চন্দ্র দেব জানান, হাইওয়ে ও ফুটপাতজুড়ে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারে কিছুদিনের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করা হবে। আবর্জনা ফেলার জন্য মৌলভীবাজার সড়কের একটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল। স্থানটি দূরবর্তী হওয়ার কারণে ভাসমান ব্যবসায়ীরা সেখানে আবর্জনা ফেলছেন না।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন চৌধুরী জানান, খলিলপুর ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে প্রকল্প গ্রহণ করে শেরপুর বাজারের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ডাস্টবিন স্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে।