কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের ১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা ষড়যন্ত্র ও হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদ এবং নিঃশর্তে এই মামলা প্রত্যাহার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় কলেজের বিজ্ঞান ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে কলেজ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা।
কলেজ প্রশাসন বলছেন, কে বা কারা এই জঘন্য ষড়যন্ত্রে জড়িত তাদের খোঁজা হচ্ছে। সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেলে কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষক রাজনীতির হীন চক্রান্তে একটি কুচক্রী মহল পুলিশের সাথে যোগসাজসে মামলাবাজির ব্যবসা করতেই এই মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করেছে। এতে আমাদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যহত করা হচ্ছে। তারা কলেজ ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে শিক্ষার মনোরম পরিবেশ ধ্বংসের কাজে লিপ্ত রয়েছে। অবিলম্বে ষড়যন্ত্র ও হয়রানিমূলক মামলার এজাহার নামীয় ১৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা মামলার নিঃশর্ত প্রত্যাহার করতে হবে। নচেৎ এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং দাবি আদায়ের জন্য লাগাতার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি, কুষ্টিয়া শহরের কুঠিপাড়া এলাকার বাসিন্দা জান মোহাম্মদ জানু শেখের ছেলে শেখ সবুজ রহমান (৪০) নামের ব্যক্তি গত ৫ আগস্ট সাড়ে ৩টার সময় শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শরীরের ৩০টি স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়। হত্যার উদ্দেশ্যে ছোড়া এই গুলিবর্ষণের হুকুমদাতা হিসেবে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষসহ ১৩ জন কলেজ শিক্ষকসহ মোট ২১ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে বাদি সবুজ রহমান কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জেরিনের অভিযোগ, “কোথাকার কোন হোটেল বয় এই মামলার বাদি, যার সাথে আমাদের বা আমাদের স্যারদের কোনো পরিচয় বা চেনা-জানা নাই, অথচ তাকে কি করে স্যারেরা হত্যার হুকুম দিল? মামলার এজাহার দেখলেই বোঝা যায় যে এটা একটা হাস্যকর মামলা। উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্যারদের সম্মানহানি ও হয়রানির জন্যই এই মামলা করানো হয়েছে।”
কুষ্টিয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোল্লা মো. রুহুল আমীন বলেন, “মামলাটির মোটিভ থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এখানে একটি মহলের প্রত্যক্ষ ইন্ধন রয়েছে। একটি কুচক্রী মহলের হীণ স্বার্থে এই নিন্দনীয় কাজটি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার কান্ডজ্ঞানহীন অদূরদর্শীতার কারণে হয়েছে। কলেজের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার মনোরম পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে এর একটা সুরাহার দাবি কলেজ কর্তৃপক্ষের। একইসাথে এ জাতীয় নিন্দনীয় কাজে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন কলেজ অধ্যক্ষ।
মামলাটি দায়েরের বিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত জানিয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মিজানুর হরমান বলছেন, “যে কেউ যে কারও বিরুদ্ধে কগনিজেবল অভিযোগ নিয়ে আসলে মামলা হতেই পারে। আমরা তদন্ত করে দেখবো ঘটনার সত্যতা আছে কি না। সত্যতা না পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশীট হবে না।”