ময়মনসিংহে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। একইসাথে ডাকাতির মালামাল রডক্রয়কারী ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ট্রাক জব্দ করেছে পুলিশ।
গত দুইদিন টানা অভিযান চালিয়ে নারায়ণঞ্জ, গাজীপুর ও নেত্রকোনা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত) পুলিশ সুপার শামীম আহমেদ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি বিকালে রাজীব পরিবহনের একটি ট্রাক যাহার রেজিঃ নং- ঢাকা মেট্রো ট ২৪-৮২৫৬ এর ড্রাইভার জুয়েল মিয়া ও হেলপার আলম মিয়াসহ চট্টগ্রামের মীরেশ্বরাই বারুইহাট বাজার হতে ১৫ টন রড, বোঝাই করে শেরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। ট্রাকটি পরদিন ভোরে ময়মনসিংহের ত্রিশাল ১০নং মঠবাড়ী ইউনিয়নের রায়মনি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পৌছা মাত্রই একটি খালি ট্রাক দিয়ে রড বোঝাইকৃত ট্রাকটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ট্রাকটি থামাতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে খালি ট্রাক থেকে ৫ জন অজ্ঞাতনামা ডাকাত ধারালো দা, রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রড বোঝাইকৃত ট্রাকের কাছে এসে ড্রাইভার জুয়েলকে গুরুতর জখম করে এবং হেলপার আলম মিয়াকে ট্রাক থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে রডভর্তি ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়।
উক্ত ডাকাতির ঘটনা বিষয়ে ত্রিশাল থানা অবগত হওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ট্রাকচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাৎক্ষণিক পার্শ্ববর্তী থানাসমূহে বেতার বার্তা প্রদান এবং টহলে নিয়োজিত পেট্রোলসমূহকে ডাকাতির বিষয়টি অবগত করে তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
ব্যাপক পুলিশি তৎপরতায় ভালুকা-গফরগাও রাস্তার ধীতপুর বাওয়ারগ্রাম নামক স্থানে লুণ্ঠিত ট্রাক এবং ট্রাকে থাকা ১৩ টন ৪১৫ কেজি রড রেখে এবং প্রায় দেড় টন রড নিয়ে ডাকাতদল পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় রাজীব পরিবহনের ম্যানেজার লুৎফর রহমান বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলের বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানার মামলা নং-২০ দায়ের করেন।

শামীম আহমেদ আরো জানান, মামলা রুজুর পর ত্রিশাল থানা পুলিশের পাশাপাশি পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করেন। ডিবির ওসি আবুল হোসেনের ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম ও এসআই আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম গত ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারী নারায়ণঞ্জ, গাজীপুর ও নেত্রকোনায় টানা অভিযান পরিচালনা করে ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলো- মো. শরীফ হোসেন, মো. নাঈম আহম্মেদ, মো. ইয়াসিন, মো. রাজন মো. হাসান ও মো. মামুন মিয়া।
পরে ডাকাতদের তথ্য মতে, ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত ট্রাকটি উদ্ধারপূর্বক জব্দ এবং ডাকাতির পণ্য (রড) ক্রয়কারী দোকানদারকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যবসায়ীর নাম ইদ্রিস আলী। পুলিশী জিঞ্জাসাবাদে ডাকাতির মালামাল জেনেও রড ক্রয় করেছেন বলে ঐ ব্যবসায়ী স্বীকার করেছেন। ব্রিফিংকালে ডিবির ওসি আবুল হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মহিদুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।