কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের সরারচর আঞ্চলিক সড়কের দুই পাশে গাছের গুঁড়ি স্তূপ করে রাখায় যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স’মিল ব্যবসায়ীরা সড়কের ওপর গাছের গুঁড়ি রেখে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় সরারচর মঙ্গলবাড়িয়া বাজার এলাকায় সড়কের ওপর রাখা গাছের গুঁড়ির সঙ্গে একটি সিএনজির ধাক্কা লাগলে সরারচর ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার প্রভাষক আফরোজা আক্তারসহ ৬ জন গুরুতর আহত হন। আহতদের স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা স’মিল মালিকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এবং ময়মনসিংহ থেকে আসা চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনটি আটকিয়ে রাখেন। পরে উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে।
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে প্রশাসন মহিউদ্দিন আহমেদ, ঝন্টু ও সালাউদ্দিনের মালিকানাধীন ৫টি স’মিল বন্ধ করে দেয়। স’মিলগুলোর বৈধ কাগজপত্র না পাওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে রাস্তার ওপর থাকা সমস্ত গাছের গুঁড়ি দ্রুত সরানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে এক কাঠ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সড়কের দুই পাশ ছাড়া গাছ রাখার জায়গা নেই, আর ট্রাক সব স্থানে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে সড়কের পাশে গাছ রেখেই ট্রাকে তোলা হয়।”
সরারচর ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি শফি উদ্দিন বলেন, “সড়কের উপর গাছ রাখা এবং ট্রাকে তোলার কারণে যানবাহন চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। গাছ সরানোর জন্য একাধিকবার পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কোনো কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায়নি। বিষয়টি বন্ধে প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলবাড়িয়া বাজার ও ফুটবল খেলার মাঠ সংলগ্ন সাতটি স্থানে বিশাল বিশাল গাছ ফেলে রাখা হয়, যা পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। গাছ ব্যবসায়ীরা স্থানীয়দের অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বাজিতপুরে ২৯টি করাত কলের মধ্যে ২৪টিরই বৈধ লাইসেন্স নেই।