বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়ীজ লীগ চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান উপদেষ্টা, সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, রেলওয়ে দেশের অন্যতম প্রধান সম্পদ। কিন্তু দুর্নীতি, ঘুষ এবং বহুমুখী অনিয়মের কারণে আজও রেলওয়ে সেক্টর একটি ভর্তুকি খাত হয়ে আছে। রেলওয়েকে যথাযথ সংস্কার করতে পারলে এটি দেশের অন্যতম লাভজনক খাতে পরিণত হবে। অতএব, দুর্নীতি ও অনিয়মের মূলোচ্ছেদ করে রেল খাতকে ঢেলে সাজাতে হবে। সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক জনবলের মাধ্যমে রেলকে আগামীর বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অন্যতম সহায়ক শক্তিতে পরিণত করতে হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগ (রেজি. নং : বি-১৭০৩) চট্টগ্রাম অঞ্চলের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন ও শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী উপর্যুক্ত কথা বলেন।
বাংলাদেশ বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি সেলিম পাটওয়ারির সভাপতিত্বে এবং দপ্তর সম্পাদক আসাদুল্লাহ শিশিরের সঞ্চালনায় সিআরবিতে ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সুবর্ণজয়ন্তী উৎযাপন ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন বিআরইএল-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আক্তারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, বিআরইএল-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবদুল আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম মজুমদার।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে আক্তারুজ্জামান বলেন, রেলওয়ের কর্মচারী ও শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেকোনো নিয়মতান্ত্রিক প্রাপ্য আদায় করতেও শ্রমিক-কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রত্যেক অফিসে হয়রানি করা হয়। এই হয়রানি বন্ধ করতে হবে। নিয়োগবিধি-২০২০ সংশোধন করে দ্রুত পদোন্নতি ও শূন্য পদের বিপরীতে লোকবল নিয়োগ করতে হবে। ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের এমপ্লয়িদের উচ্চতর গ্রেড দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এস এম লুৎফুর রহমান বলেন, রেলওয়ের পারচেজ বিভাগকে পরিপূর্ণ সংস্কারের আওতায় আনতে হবে। দুর্নীতি ও অনিয়মের সিংহভাগ এই বিভাগেই হয়ে থাকে। অতএব, কেনাকাটায় দুর্নীতি রোধে টেকনিক্যাল নিরীক্ষা কমিটি গঠন করতে হবে। অসৎ ও দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তারাই রেলের সকল সংকটের মূল কারণ। আমরা আহ্বান জানাই, আপনারা দ্রুত সংশোধন হোন। দুর্নীতির পথ পরিহার করে সততা ও নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় দায়িত্ব পালন করুন। পেশাগত দক্ষতা ও নৈতিক অবস্থানের মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রায় শরিক হোন।
সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান ও শ্রমিক সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিআরইএল-এর কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক জনাব মাহমুদুল হাসান, প্রচার সম্পাদক মোঃ এমরান হোসাইন, এস এম আকরাম, নাজমুল আমিন মতিন, আবদুল খালেকসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
শ্রমিক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ও বক্তারা শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে বলেন, রেলওয়ের শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আগের মতো রেশনিং ভাতা দিতে হবে। রেলওয়ের শ্রমিক-কর্মচারীদের মাঝে ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠার পক্ষে জনমত গঠন করতে হবে। ঋণগ্রস্ত শ্রমিকদের বাঁচাতে দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে হবে এবং মহার্ঘ্য ভাতা দিতে হবে। নবম পে স্কেল ঘোষণা করে বেতন বৈষম্য দূর করে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক বেতনকাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে।