কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের বোড়ারচর বাজার এলাকায় প্রায় এক একর আয়তনের পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। কয়েক শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যপূর্ণ এই পুকুর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গোসল, কাপড় ধোয়া, নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র পরিষ্কার, হিন্দুদের প্রতিমা বিসর্জন করা ছাড়াও জলাবদ্ধতা নিরসনের উত্তস ছিল।
স্থানীয় একটি প্রভাবশালী ভূমি খেকো চক্র কাছাকাছি দূরত্বে থাকা সুবিলাচর এলাকার গোমতী নদীর চরের মাটি কেটে এনে হিন্দু সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন পুকুরটির জোর করে ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় গত ২৮ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও অদৃশ্য কারণে নেওয়া হচ্ছে না কোন ব্যবস্থা। এতে করে ওই প্রভাবশালী ভূমি খেকো চক্রটির বিরুদ্ধে বর্তমানে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছে না। আর এভাবেই শত বছরের পুরনো ঐতিহাসিক এ জনগুরুত্বপূর্ণ পুকুরটি হারিয়ে যাচ্ছে মুরাদনগরের মানচিত্র থেকে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার বোড়ারচর মৌজার দাগ নাম্বার ২৩ ও ২৪ এর প্রায় এক একর পরিমাণের শত বছরের পুরনো পুকুরটি মালিকানা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের। সুবিলারচর গ্রামের মৃত চরু মিয়ার ছেলে মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী ভূমি খেকো চক্র প্রভাব খাটিয়ে কয়েকজন মালিকের কাছ থেকে কৌশলে নাম মাত্র মূল্য দেখিয়ে পুকুরটির কিছু অংশ ক্রয় করে। কিছুদিন পূর্বে পুকুরপাড়ের অনেক পুরানো মেহাগুনি, করাই ও বিভিন্ন ফলজ গাছ কেটে ফেলে এবং বর্তমানে ট্রাক দিয়ে গোমতী নদীর চরের মাটি কেটে এনে সম্পূর্ণ পুকুরটিতে ভরাট কাজ চালাচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী ভূমি খেকো চক্র পুকুরের সকল অংশীদারদের না জানিয়ে জোরপূর্বক পুকুরটি ভরাট করছে। পুকুরটি শুধুমাত্র যে এলাকার পরিবেশকে নির্মল রাখছে তাই নয়, গোটা অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের গোসল ও অন্যান্য গৃহস্থলী কাজেও প্রত্যক্ষ সহায়তা দিয়ে আসছে। পুকুরটি আমাদের গোটা এলাকাবাসীর অস্তিত্বের স্বার্থেই টিকিয়ে রাখতে হবে।
তারা আরো বলেন, ঐতিহ্যময় এই পুকুরটি জোরপূর্বক ভরাটের মাধ্যমে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী ভূমি খেকো চক্র আত্মসাতের অশুভ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে যা এলাকাবাসীকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মজিবুর রহমান বলেন, পুকুরটি আমি ভরাট করছি না। পুকুরপাড়ে গাছ লাগানোর জন্য মাটি ফালানো হচ্ছে। আমি গোমতি নদী থেকে মাটি কাটি না। কন্ট্রাক্টার গোমতী নদী থেকে মাটি কেটে আমার ইট ভাটায় ও পুকুরে মাটি দিয়ে থাকে। এতে আমার কি করার আছে?
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাছান খাঁন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ডিসি অফিসের চিঠির সাপেক্ষে বিষয়টি আমি দেখব।