বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পর্যায়ে পাঁচ দশকের বেশি সময় পর সরাসরি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পুনরায় শুরু করেছে। এটি ১৯৭১ সালের পর প্রথমবারের মতো, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে সরাসরি পণ্য আমদানি করা হচ্ছে।
এই বাণিজ্যের অংশ হিসেবে পাকিস্তানের পোর্ট কাসিম থেকে প্রথম চালান রওনা হয়েছে, যা আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে পৌঁছাবে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
পোর্ট কাসিম থেকে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এমভি সিবি নামের একটি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ ২৬ হাজার টন চাল নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। এটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে ৪ মার্চ। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ দশক পর সরাসরি বাণিজ্য পুনরায় শুরু হলো।
এছাড়া, চলতি ফেব্রুয়ারির শুরুতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এই চুক্তির আওতায়, ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তান (টিসিপি) থেকে বাংলাদেশ মোট ৫০ হাজার টন চাল কিনছে। চুক্তি অনুযায়ী, চাল দুটি ধাপে বাংলাদেশে আসবে, যার প্রথম চালান ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে এবং দ্বিতীয় চালান আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঠানো হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রতি আরও উষ্ণ হয়েছে। বিশেষ করে গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান, কূটনৈতিক সফর এবং উচ্চপর্যায়ের বৈঠক বাড়ে। পাকিস্তানের ব্যবসায়ী মহল আশাবাদী, আগামী এক বছরে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ তিন বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে, যা বর্তমান সময়ের তুলনায় চার গুণ বেশি।
এছাড়া, উভয় দেশের মধ্যে সম্প্রতি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ গত এক বছরে দুবার বৈঠক করেছেন, যেখানে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।