পুলিশ সংস্কার কমিশন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওপর সরাসরি সব পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা ন্যস্ত করার সুপারিশ করেছে।
কমিশনের মতে, যদি কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা তাদের প্ররোচনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উত্থাপিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধানই এই অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবেন। এর পাশাপাশি, কমিশন প্রস্তাব করেছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে একটি মানবাধিকার সেল গঠন করা হবে।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনটির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। কমিশন প্রধান সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয় এবং কমিশনের ওয়েবসাইটেও এটি প্রকাশিত হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ বাহিনীকে আরও দক্ষ, জনবান্ধব ও আধুনিক করার উদ্দেশ্যে একাধিক সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া, কমিশন জানিয়েছে যে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অসংখ্য ছাত্র-জনতা ও পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার পর পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় পুলিশ বাহিনীকে আরও আধুনিক, জনমুখী ও কার্যকর করে তোলার উদ্দেশ্যে কমিশন এ প্রতিবেদন প্রদান করেছে।
কমিশনের সুপারিশের মধ্যে রয়েছে:
- গ্রেপ্তার, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন।
- অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা দায়ের বন্ধ করা এবং বিচারপ্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী হিসেবে মিডিয়াতে উপস্থাপন না করার সুপারিশ।
- র্যাবের অতীত কার্যক্রম পর্যালোচনা করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পুনর্মূল্যায়ন করা এবং প্রয়োজনে র্যাবের কার্যক্রম পুনর্নির্ধারণ করা।
- জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগে দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ।