ঢাকা ১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র নিখোঁজের নয়দিন পর পরিত্যক্ত ডোবায় লাশ উদ্ধার লালপুরে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ৪ নারীসহ আহত ১০, আশঙ্কাজনক ১ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯৯টি ককটেল ও ৪০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার বগুড়ায় করতোয়া নদীর ধারে মুখ ঝলসানো অর্ধগলিত লাশ পিরিজপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকি: অভিযুক্ত বিএনপি নেতার ছেলে লালপুরে আইনজীবীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, ৩জন আহত বগুড়ায় ‘লাশ উত্তোলনের নামে’ প্রতারণা, তিন ভাই গ্রেপ্তার সিংড়ায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা সুনামগঞ্জের বিঞ্জান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা শহরের কাছাকাছি স্থাপনের জন্য ৬দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন পাংশায় বসত ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে যুবকের আত্মহত্যা কাবিখা প্রকল্পে কাগজে কলমে উন্নয়ন, মাঠে দুর্নীতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা সেমিনার ও ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

সামাজিক রাজনৈতিকভাবে যিনি গ্রহণযোগ্য নয় তাকে দলে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না: তারেক রহমান

  • যশোর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় ০৭:৪২:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৬০২ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যশোর জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দয়া করে সকলকে বলে দেবেন বিএনপি তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। বিএনপি একমাত্র দল যারা কোনো বিনা আইনে থাকে না। অর্থাৎ, আমাদের ভেতরে কেউ যদি অন্যায় করে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। সামাজিক, রাজনৈতিকভাবে যিনি গ্রহণযোগ্য নয় তাকে কোনোভাবেই দলে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে যশোর ঈদগাহ ময়দানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম। সকাল ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানুল্লাহ আমান।

নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএসআইয়ুব, কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নি, কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, যশোর কোতোয়ালী বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনজারুল হক খোকন, যশোর নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারাজি মতিয়ার রহমান, ঝিকরগাছা পৌর বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন সুজন, মনিরামপুর থানা বিএনপির সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান মিন্টু, বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি তানিয়ার রহমান, চৌগাছা পৌর বিএনপির সেক্রেটারি আব্দুল হালিম চঞ্চল, বেনাপোল পৌর বিএনপির সভাপতি নাজিমুদ্দিন, শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন, যুবদলের যশোর জেলা সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা, জেলা মহিলাদের সভাপতি রাশিদা রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তফা আমির ফয়সাল, ও ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান বাপ্পি।

প্রধান অতিথি সম্মেলনে পথে প্রান্তরে মানুষের কাছে কোন কথাগুলো পৌঁছে দেবেন প্রশ্ন করে তার বক্তৃতায় বলেন, বিগত ১৬ থেকে ১৭ বছর যে স্বৈরাচার ছিল সেই স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে ছাত্র জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। খুনি লুটেরা স্বৈরাচার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। অস্ত্রের জোরে তারা জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। কিভাবে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছে, অত্যাচারিত হয়েছে এই কথাগুলো আমরা যেমন অতীতে তুলে ধরেছি আগামীতেও আমরা এসব কথা জনগণের কাছে তুলে ধরব। এর পাশাপাশি আমরা তুলে ধরব বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এদেশের কৃষককে নিয়ে কি ভাবে এবং কৃষকদের নিয়ে কি পরিকল্পনা করে সে কথাগুলোও আমরা তুলে ধরব। বাংলাদেশের নারী সমাজের উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নের জন্য বিএনপির কি পরিকল্পনা সে কথাগুলোও তিনি জনগণের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথি বলেন, অতীতে বিএনপি জনগণের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছে। সে সময় বিএনপি চেষ্টা করেছে দেশের মানুষের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তার সমাধান করার। যতটুকু আশা ছিল তা হয়তো কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়নি। সেজন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা বিএনপি গ্রহণ করেছে। দলের পক্ষ থেকে আড়াই বছর আগে ৩১ দফা জাতির সামনে তুলে ধরা হয়েছে। রাষ্ট্র পুনর্গঠনের জন্য কেন এই ৩১ দফা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সকল গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করেছিল। এজন্য বিএনপি এসব ভেবেই সে সময় রাষ্ট্র গঠন করার জন্য স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংস্কারের কথা বলেছিল।

তারেক রহমান বলেন, এখন অনেকে সংস্কারের কথা বলেন। যারা মানুষের অধিকার নিয়ে, রাষ্ট্র নিয়ে, দেশ নিয়ে চিন্তা করেন তারা অবশ্যই বলবেন। সংস্কারের কথা যে কেউ বলতে পারেন, কারণ এটি প্রত্যেকেরই অধিকার আছে। কিন্তু এখানেই বিএনপির সাথে তাদের পার্থক্য রয়েছে। যখন স্বৈরাচার খুন গুমের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রেখেছিল, অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, তখন বিএনপি স্বৈরাচারের চোখে চোখ রেখে বলেছিল রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে হবে।

প্রধান অতিথি আরো বলেন, সে সময় বিএনপির সাথে আরো কিছু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল একতাবদ্ধ হয়েছিল। ঐক্যবদ্ধভাবে তারা আন্দোলন করেছিল বিএনপির সাথে। তাদের সাথে আলোচনা করেই জনগণের সামনে একত্রিশ দফা উপস্থাপন করা হয়েছিল। আজকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, সভা সমাবেশের মাধ্যমে যারা সংস্কারের কথা বলছেন বিগত দিনে তাদের কাছ থেকে সেরকম কোনো সংস্কারের কথা শোনা যায়নি।

প্রধান অতিথি বলেন, সারাদেশে আজ লক্ষ লক্ষ লোক বেকার। এই বেকারত্বের সমাধান করতে হবে। শহীদ রাষ্ট্রপতির জিয়াউর রহমান দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে খাল কাটা কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। সেই খাল কাটা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। যেসব খালের পানির প্রবাহ নাই, সেসব খালের পানির প্রবাহ আনার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশে উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো যায়, সে লক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে।

দেশের স্বাস্থ্য সেবার কথা উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, এদেশের মানুষের স্বাস্থ্যের কিভাবে উন্নতি করা যায় সেই লক্ষ্য অর্জনে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যাতে মানুষ দেশে বসেই তার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারে এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রাজনীতিতে অবশ্যই গুণগত পরিবর্তন করতে হবে। একমাত্র বিএনপিই সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বিএনপির অনুষ্ঠিত সম্মেলনের কথা উল্লেখ করেন।

সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। সম্মেলনে আওয়ামী স্বৈরাচার আমলে বিএনপি এর অঙ্গ সংগঠনের যে সকল নেতৃবৃন্দ নিহত হয়েছেন এবং ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মুফতি আমানুল্লাহ কাসেমী। যারা শহীদ হয়েছে তাদের নাম পড়ে শোনানো হয় এবং প্রত্যেক শহীদ পরিবারের কাছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে উপহার প্রদান করা হয়।

সম্মেলন উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে প্রকাশিত স্যুভেনুরের মোড়ক উন্মোচন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান।

এদিকে দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১হাজার ৬শ’ ১০ জন কাউন্সিলর যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের নেতা নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র নিখোঁজের নয়দিন পর পরিত্যক্ত ডোবায় লাশ উদ্ধার

Verified by MonsterInsights

সামাজিক রাজনৈতিকভাবে যিনি গ্রহণযোগ্য নয় তাকে দলে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না: তারেক রহমান

আপডেট সময় ০৭:৪২:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যশোর জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দয়া করে সকলকে বলে দেবেন বিএনপি তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। বিএনপি একমাত্র দল যারা কোনো বিনা আইনে থাকে না। অর্থাৎ, আমাদের ভেতরে কেউ যদি অন্যায় করে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। সামাজিক, রাজনৈতিকভাবে যিনি গ্রহণযোগ্য নয় তাকে কোনোভাবেই দলে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে যশোর ঈদগাহ ময়দানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম। সকাল ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানুল্লাহ আমান।

নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএসআইয়ুব, কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নি, কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, যশোর কোতোয়ালী বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনজারুল হক খোকন, যশোর নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, অভয়নগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারাজি মতিয়ার রহমান, ঝিকরগাছা পৌর বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন সুজন, মনিরামপুর থানা বিএনপির সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান মিন্টু, বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি তানিয়ার রহমান, চৌগাছা পৌর বিএনপির সেক্রেটারি আব্দুল হালিম চঞ্চল, বেনাপোল পৌর বিএনপির সভাপতি নাজিমুদ্দিন, শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন, যুবদলের যশোর জেলা সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা, জেলা মহিলাদের সভাপতি রাশিদা রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তফা আমির ফয়সাল, ও ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান বাপ্পি।

প্রধান অতিথি সম্মেলনে পথে প্রান্তরে মানুষের কাছে কোন কথাগুলো পৌঁছে দেবেন প্রশ্ন করে তার বক্তৃতায় বলেন, বিগত ১৬ থেকে ১৭ বছর যে স্বৈরাচার ছিল সেই স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে ছাত্র জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। খুনি লুটেরা স্বৈরাচার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। অস্ত্রের জোরে তারা জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। কিভাবে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নির্যাতিত হয়েছে, অত্যাচারিত হয়েছে এই কথাগুলো আমরা যেমন অতীতে তুলে ধরেছি আগামীতেও আমরা এসব কথা জনগণের কাছে তুলে ধরব। এর পাশাপাশি আমরা তুলে ধরব বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এদেশের কৃষককে নিয়ে কি ভাবে এবং কৃষকদের নিয়ে কি পরিকল্পনা করে সে কথাগুলোও আমরা তুলে ধরব। বাংলাদেশের নারী সমাজের উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নের জন্য বিএনপির কি পরিকল্পনা সে কথাগুলোও তিনি জনগণের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথি বলেন, অতীতে বিএনপি জনগণের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছে। সে সময় বিএনপি চেষ্টা করেছে দেশের মানুষের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তার সমাধান করার। যতটুকু আশা ছিল তা হয়তো কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়নি। সেজন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা বিএনপি গ্রহণ করেছে। দলের পক্ষ থেকে আড়াই বছর আগে ৩১ দফা জাতির সামনে তুলে ধরা হয়েছে। রাষ্ট্র পুনর্গঠনের জন্য কেন এই ৩১ দফা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সকল গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করেছিল। এজন্য বিএনপি এসব ভেবেই সে সময় রাষ্ট্র গঠন করার জন্য স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংস্কারের কথা বলেছিল।

তারেক রহমান বলেন, এখন অনেকে সংস্কারের কথা বলেন। যারা মানুষের অধিকার নিয়ে, রাষ্ট্র নিয়ে, দেশ নিয়ে চিন্তা করেন তারা অবশ্যই বলবেন। সংস্কারের কথা যে কেউ বলতে পারেন, কারণ এটি প্রত্যেকেরই অধিকার আছে। কিন্তু এখানেই বিএনপির সাথে তাদের পার্থক্য রয়েছে। যখন স্বৈরাচার খুন গুমের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রেখেছিল, অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, তখন বিএনপি স্বৈরাচারের চোখে চোখ রেখে বলেছিল রাষ্ট্র পুনর্গঠন করতে হবে।

প্রধান অতিথি আরো বলেন, সে সময় বিএনপির সাথে আরো কিছু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল একতাবদ্ধ হয়েছিল। ঐক্যবদ্ধভাবে তারা আন্দোলন করেছিল বিএনপির সাথে। তাদের সাথে আলোচনা করেই জনগণের সামনে একত্রিশ দফা উপস্থাপন করা হয়েছিল। আজকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, সভা সমাবেশের মাধ্যমে যারা সংস্কারের কথা বলছেন বিগত দিনে তাদের কাছ থেকে সেরকম কোনো সংস্কারের কথা শোনা যায়নি।

প্রধান অতিথি বলেন, সারাদেশে আজ লক্ষ লক্ষ লোক বেকার। এই বেকারত্বের সমাধান করতে হবে। শহীদ রাষ্ট্রপতির জিয়াউর রহমান দেশের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে খাল কাটা কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। সেই খাল কাটা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। যেসব খালের পানির প্রবাহ নাই, সেসব খালের পানির প্রবাহ আনার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশে উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো যায়, সে লক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে।

দেশের স্বাস্থ্য সেবার কথা উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, এদেশের মানুষের স্বাস্থ্যের কিভাবে উন্নতি করা যায় সেই লক্ষ্য অর্জনে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। যাতে মানুষ দেশে বসেই তার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারে এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রাজনীতিতে অবশ্যই গুণগত পরিবর্তন করতে হবে। একমাত্র বিএনপিই সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বিএনপির অনুষ্ঠিত সম্মেলনের কথা উল্লেখ করেন।

সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। সম্মেলনে আওয়ামী স্বৈরাচার আমলে বিএনপি এর অঙ্গ সংগঠনের যে সকল নেতৃবৃন্দ নিহত হয়েছেন এবং ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মুফতি আমানুল্লাহ কাসেমী। যারা শহীদ হয়েছে তাদের নাম পড়ে শোনানো হয় এবং প্রত্যেক শহীদ পরিবারের কাছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে উপহার প্রদান করা হয়।

সম্মেলন উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে প্রকাশিত স্যুভেনুরের মোড়ক উন্মোচন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান।

এদিকে দুপুর ২ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১হাজার ৬শ’ ১০ জন কাউন্সিলর যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদের নেতা নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন।