বাংলাদেশের বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘গ্রন্থ আড্ডা’তে তিনি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বিভিন্ন সমালোচনা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো ছাত্র-ছাত্রী সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু বাকিরা কি করবে? এমনকি হাইস্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়। একদিকে, ঠাকুরগাঁও জেলার ছাত্ররা পরীক্ষা দিয়েছে, কিন্তু তাদেরকে যেতে হচ্ছে গাইবান্ধা স্কুলে। এটা কোন ব্যবস্থা?”
তিনি আরও বলেন, “এটি নিয়ে কোনো চিন্তা বা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেই। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এখন একেবারে শেষ হয়ে গেছে। প্রাথমিক স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত, কোথাও মানের কোনো অবশিষ্ট নেই।”
ফখরুল আরও বলেন, “এখন ক্যাডেট কলেজে সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে, কিন্তু কুড়িগ্রামের রৌমারি চরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কি ধরনের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, তা কেউ জানে না। এমপিওভুক্ত অনেক স্কুল ও কলেজে শিক্ষক নেই, অথচ সেখানে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে।”
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, “দিনাজপুর গভর্নমেন্ট কলেজের এক বিভাগের কথা উল্লেখ করে বলেন, যেখানে একজন শিক্ষক রয়েছে, অথচ সেখানে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। এরকম শিক্ষাব্যবস্থার উদ্দেশ্য কি?”
তিনি আরও বলেন, “আজকে দেশে হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার রয়েছে, যার মধ্যে অনেকেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেছে, কিন্তু চাকরি পায় না। এই পরিস্থিতি দেশের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, “এই সরকার শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, তবে শিক্ষা সম্পর্কিত কোনো সংস্কার কমিশন গঠন হয়নি, যা খুবই প্রয়োজন ছিল।”
এছাড়া, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আবদুস সালাম, সাবেক ছাত্র নেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, পলিসি গবেষক মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আফরোজা খানম রীতা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়িদ আবদুল্লাহ এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।