খালিস্তান আন্দোলনের নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুর হত্যা চেষ্টা মামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ভারত সরকারকে তলব করেছে। ভারত সরকারের পাশাপাশি তলব করা হয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’–এর সাবেক প্রধান সামন্ত গোয়েল, এজেন্ট বিক্রম যাদব এবং ব্যবসায়ী নিখিলক গুপ্তাকে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
গত বছরের নভেম্বরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক খালিস্তান আন্দোলনের এক নেতাকে হত্যায় ভারতের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এরপর খালিস্তানপন্থী আরেক নেতাকে হত্যাচেষ্টায় ভারতের জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ হাজির করে যুক্তরাষ্ট্র।
ওই সময় যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার দ্বৈত নাগরিকত্ব ধারণকারী পান্নুনকে হত্যার একটি চক্রান্ত ব্যর্থ করেছে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অজিত ডোভালের সঙ্গে তলব করা হয়েছে ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল উইংয়ের (র) সাবেক প্রধান সামন্ত গোয়েল, ওই সংস্থার এজেন্ট বিক্রম যাদব ও ভারতীয় ব্যবসায়ী নিখিল গুপ্তকে। ২১ দিনের মধ্যে তাদের এই সমনের জবাব পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ নিউইয়র্ক জেলা আদালত।
জানা গেছে, পান্নুনের আইনজীবী অ্যাটর্নির মাধ্যমে মামলাটি দায়ের করেছেন মার্কিন ফেডারেল কোর্টে। মামলার মাধ্যমে পান্নুন ক্ষতিপূরণ চেয়েছে ভারত সরকারের থেকে। গতবছর পান্নুনের বিরুদ্ধে হত্যার ছক কষেছিল ভারত। এমন অভিযোগে এই ক্ষতিপূরণের দাবি করেছে এই খলিস্তানি নেতা।
পান্নুন হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত ভারতীয় নাগরিক নিখিল গুপ্তকে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে ফেরত এনেছে নিউইয়র্ক পুলিশ। গত বছর নিখিলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল চেক প্রজাতন্ত্রে। প্রায় একবছর পর চেক পুলিশ তাকে তুলে দিল মার্কিন বিচার বিভাগের কাছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এত প্রতিবেদনে সম্প্রতি দাবি করা হয়েছে, পান্নুন হত্যার জন্য দল ভাড়া করেছিলেন বিক্রম যাদব নামে এক ভারতীয় গোয়েন্দা এজেন্ট। এমনকি প্রতিবেদনে এও দাবি করা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছিলেন তৎকালীন (র) প্রধান সামন্ত গোয়েল। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল বিষয়টি জানতেন। তবে ওয়াশিংটন পোস্টের এই প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে ভারত।
চলতি মাসের শেষ দিকে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মোদির দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তার সফরের ঠিক আগে মার্কিন আদালতের এমন সিদ্ধান্ত অস্বস্তি বাড়তে পারে দিল্লির।