জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বিপুল অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানের আওতায় এসেছেন। তার বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, লন্ডন, সিডনিতে অর্থ পাচার এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, “জিএম কাদের ১৯৯৬ সাল থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ২০০৯-২০১৪ সালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।”
দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি মনোনয়নের ক্ষেত্রে তিনি ১৮.১০ কোটি টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। এই অর্থ লেনদেনের প্রধান সুবিধাভোগী ছিলেন জিএম কাদের। চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ না করায় তৎকালীন এমপি প্রফেসর মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে জিএম কাদেরের স্ত্রী শরিফা কাদের সংসদ সদস্য হন।
এছাড়া, দুদকের তথ্য অনুযায়ী, জিএম কাদের দলীয় পদবাণিজ্য ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন, যা পরে বিদেশে পাচার করা হয়। দলীয় কেন্দ্রীয় কমিটির নির্ধারিত সদস্য সংখ্যা ৩০১ হলেও বর্তমানে তা ৬০০-৬৫০ জনে উন্নীত করা হয়েছে, যা পদবাণিজ্যের প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দুদকের গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, জিএম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হয়েছেন এবং বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধানে তথ্যের সত্যতা পাওয়ায় দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে অনুসন্ধান শুরু করেছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।