আজ শহীদ আসাদ দিবস। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ স্থান অধিকার করে রয়েছে। ২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদ সেদিন রাজপথে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন, যা পরবর্তীতে দেশের গণঅভ্যুত্থানকে ত্বরান্বিত করে। তার আত্মত্যাগ স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতন ত্বরান্বিত করেছিল এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আজকের এই দিনে শহীদ আসাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে শহীদ আসাদের কবর জিয়ারত এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠন। এছাড়া নরসিংদীর শিবপুরে তার নিজ বাড়িতে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হবে।
শহীদ আসাদের পুরো নাম আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ১৯৪২ সালের ১০ জুন হাতিরদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সমাবেশে অংশ নিয়ে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০ জানুয়ারি হরতাল ঘোষণার পর পুলিশি গুলিতে আসাদ শহীদ হন। তার মৃত্যুর পর আন্দোলনের অগ্নিশিখা আরও জ্বলে ওঠে এবং শহীদ আসাদকে স্মরণ করে শহরজুড়ে বিশাল মিছিল এবং প্রতিবাদে রক্তে ভেসে যায় ঢাকা।
শহীদ আসাদের মৃত্যুর পর ‘আসাদ গেট’ নামক একটি স্থান মোহাম্মদপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা প্রতিবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন হয়ে ওঠে। কবি শামসুর রাহমান তার বিখ্যাত কবিতা ‘আসাদের শার্ট’ লিখে তার আত্মত্যাগ স্মরণ করেন।
শহীদ আসাদের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য নরসিংদীর শিবপুরে শহীদ আসাদ কলেজ, শহীদ আসাদ কলেজিয়েট গার্লস হাইস্কুল এবং শহীদ আসাদ সড়ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শহীদ আসাদের ইতিহাস রাষ্ট্রীয়ভাবে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত না করায় বর্তমান প্রজন্ম তার সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারছে না বলে তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা অভিযোগ করেছেন।