ঢাকা ০১:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
শ্রীমঙ্গল উপজেলা, পৌর ও সদর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বেনাপোলে দরিদ্র ও পথচারীদের ইফতার বিতরণ মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লোকসান, ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত কৃষক ফিলিস্তিনে নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্জিত জ্ঞান শিক্ষাজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ইফতার সামগ্রী বিতরণ করল এপেক্স ক্লাব অব লামা কমলগঞ্জে যুবদলের ইফতার বিতরণ মৌলভীবাজারের রাজনগরে ডিবি পুলিশকে মারধর করে চেয়ারম্যাকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়: প্রশাসনের নীরব ভূমিকা ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলমানদের হত্যার প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলে বিক্ষোভ মিছিল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে হাসনাতের সাথেই আমরা ঢাকা ওয়াসার সাবেক এমডি তাকসিম এ খানের অনুসারীদের নেতৃত্বে ছিল সাংকেতিক নাম

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বৈষম্যবিরোধী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উত্তেজনায় একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

  • ময়মনসিংহ ব্যুরো
  • আপডেট সময় ০৮:২১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫৩৭ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের উত্তেজনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে কলেজ প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ছেড়ে যেতে বলা হলেও বেলা ২টার দিকেও হল ছাড়তে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

সকালে কলেজের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভা করে ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নগরের রহমতপুর বাইপাস এলাকায় ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিনটি বিভাগে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। কলেজে গত সময়ে ছাত্রলীগের দু’টি পক্ষ বিদ্যমান ছিল। ৫ আগস্টের পর কলেজে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে কলেজ প্রশাসন। তবে কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কারেন্ট স্টুডেন্ট অব ম্যাক’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কম্বল বিতরণের একটি পোস্ট ‘অ্যাপ্রুভ’ (অনুমোদন) না করাকে ঘিরে সমস্যার সূত্রপাত হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজটি এখনো ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এমন অভিযোগ তোলে মহানগর ও জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

কলেজের কিছু শিক্ষার্থীকে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর কমিটির নেতারা সোমবার বিকেলে অধ্যক্ষের কাছে গিয়ে জানান, কলেজের আবাসিক হলে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের মজুত করা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে অমর একুশে হল ও মুক্তিযোদ্ধা হলে তল্লাশি চালায় কলেজের ক্যাম্পাস প্রশাসনের নিরাপত্তা কমিটি। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা হল থেকে কিছু রামদা, হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা জব্দ করা হয়। ওই হলের সব কক্ষের ছাত্র ও সাধারণ ছাত্রদের একটি পক্ষ তল্লাশি কার্যক্রমে বাধা দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিছু শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে উত্তেজনা তৈরি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কলেজে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন খবরে সংগঠনের অন্যরা কলেজের সামনের সড়কে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলতে থাকে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাতেই কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয় কলেজ প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল ৯টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

নোটিশে আরও বলা হয়, কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সিএসই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

সোমবার রাতে কলেজ প্রশাসন ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কলেজের সামনে থেকে সরে যান। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভায় পুরো ঘটনা ও অভিযোগের বিষয় তদন্তে জেনারেল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার কলেজের সামনে গিয়ে দেখা যায়, জিনিসপত্র নিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কারেন্ট স্টুডেন্ট অব ম্যাক’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপে বৈষম্যবিরোধীদের কম্বল বিতরণের একটি পোস্ট ‘অ্যাপ্রুভ’ (অনুমোদন) না করাকে ঘিরে সমস্যার সূত্রপাত হয়।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ফেসবুক গ্রুপে একটি পোস্ট ‘অ্যাপ্রুভ’ না করা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন ছিল। রাত ১টার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমঙ্গল উপজেলা, পৌর ও সদর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

Verified by MonsterInsights

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বৈষম্যবিরোধী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উত্তেজনায় একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

আপডেট সময় ০৮:২১:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের উত্তেজনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে কলেজ প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ছেড়ে যেতে বলা হলেও বেলা ২টার দিকেও হল ছাড়তে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

সকালে কলেজের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভা করে ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নগরের রহমতপুর বাইপাস এলাকায় ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিনটি বিভাগে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। কলেজে গত সময়ে ছাত্রলীগের দু’টি পক্ষ বিদ্যমান ছিল। ৫ আগস্টের পর কলেজে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে কলেজ প্রশাসন। তবে কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কারেন্ট স্টুডেন্ট অব ম্যাক’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কম্বল বিতরণের একটি পোস্ট ‘অ্যাপ্রুভ’ (অনুমোদন) না করাকে ঘিরে সমস্যার সূত্রপাত হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজটি এখনো ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এমন অভিযোগ তোলে মহানগর ও জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

কলেজের কিছু শিক্ষার্থীকে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর কমিটির নেতারা সোমবার বিকেলে অধ্যক্ষের কাছে গিয়ে জানান, কলেজের আবাসিক হলে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের মজুত করা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে অমর একুশে হল ও মুক্তিযোদ্ধা হলে তল্লাশি চালায় কলেজের ক্যাম্পাস প্রশাসনের নিরাপত্তা কমিটি। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা হল থেকে কিছু রামদা, হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা জব্দ করা হয়। ওই হলের সব কক্ষের ছাত্র ও সাধারণ ছাত্রদের একটি পক্ষ তল্লাশি কার্যক্রমে বাধা দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিছু শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে উত্তেজনা তৈরি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কলেজে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন খবরে সংগঠনের অন্যরা কলেজের সামনের সড়কে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলতে থাকে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাতেই কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয় কলেজ প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল ৯টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

নোটিশে আরও বলা হয়, কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সিএসই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

সোমবার রাতে কলেজ প্রশাসন ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কলেজের সামনে থেকে সরে যান। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভায় পুরো ঘটনা ও অভিযোগের বিষয় তদন্তে জেনারেল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার কলেজের সামনে গিয়ে দেখা যায়, জিনিসপত্র নিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কারেন্ট স্টুডেন্ট অব ম্যাক’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপে বৈষম্যবিরোধীদের কম্বল বিতরণের একটি পোস্ট ‘অ্যাপ্রুভ’ (অনুমোদন) না করাকে ঘিরে সমস্যার সূত্রপাত হয়।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ফেসবুক গ্রুপে একটি পোস্ট ‘অ্যাপ্রুভ’ না করা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন ছিল। রাত ১টার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।