খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) কর্তৃপক্ষ ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় ৫টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রাখা।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ অনলাইনে যোগদান করেন, যিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
প্রধান সিদ্ধান্তগুলো হলো:
১. ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের আদেশ বহাল রাখা: বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আগের মতোই বলবৎ থাকবে।
২. হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে।
৩. বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা: বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৪. আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা: আহত সকল শিক্ষার্থীকে কুয়েটের ব্যবস্থাপনায় সুচিকিৎসা দেওয়া হবে।
৫. নিরাপত্তা ব্যবস্থা: বিভাগীয় কমিশনারের তত্ত্বাবধানে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে, শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবিতে কুয়েটের প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, উপাচার্য এখনও অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
এদিকে, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতির কারণে সকাল থেকেই অনেক শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। যারা ক্যাম্পাসের বাইরে ভাড়া বাসায় রয়েছেন, তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।
সংঘর্ষের ঘটনা:
গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি), কুয়েটে ছাত্রদল ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের অধিকাংশের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আহতদের কুয়েটের মেডিকেল সেন্টার এবং আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. ওমর ফারুক কালবেলা বলেছেন:
“সাধারণ শিক্ষার্থীরা কুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত করতে এবং নিজেদের নিরাপত্তার জন্য পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এ পর্যন্ত সব পরীক্ষা ও ক্লাস বন্ধ থাকবে।”