ঢাকা ০৫:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের উপর হামলা মামলায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার ৩৫ কেজি বাঘাইড় মাছ ও ১৫ কেজি মিষ্টিতে পোড়াদহ মেলা আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা যমুনা রেলওয়ে সেতুতে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডি মহাপরিদর্শক পল মার্টিন বরখাস্ত শেখ হাসিনার বক্তব্য ভারতের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করেছে: শশী থারুর বিনামূল্যে ক্যান্সার ওষুধ দেওয়ার ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আগামী অক্টোবরের মধ্যে জুলাই হত্যা মামলার রায়: আসিফ নজরুল পরিবেশ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সহকারী পরিচালক বদরুন্নাহার সীমার সীমাহীন দুর্নীতি পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প: পিডি উজ্জ্বল মল্লিক ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে শত শত কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত প্লট হাতিয়ে নিয়েছে ময়মনসিংহে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ময়মনসিংহ জেলা মটরযান কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচনে নির্বাচিত সভাপতি সম্পাদকসহ সকলের শপদ ও দায়িত্ব গ্রহণ

সড়কের পাশ থেকে ৫২টি সেগুন গাছ কেটে বিক্রি, বন বিভাগের কর্মকর্তার যোগসাজশের অভিযোগ

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের সনজরপুর-নিশ্চিন্তপুর সড়কের পাশ থেকে অবৈধভাবে ৫২টি সেগুন গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। এতে রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার। বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তার যোগসাজশে এলজিইডি সড়কের গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ অফিসের এক রেঞ্জ কর্মকর্তার সাথে সমঝোতা করে কমলগঞ্জের মিলন মিয়া নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী গাছগুলো কেটে নিয়েছেন। তবে গাছ কাটার বিষয়ে এলজিইডি কিছুই জানে না। বন বিভাগও তাদের আয়ত্তের বাইরে ও ব্যক্তি মালিকানার গাছ বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে।

স্থানীয়রা জানান, গাছ কাটার সময়ে বন বিভাগের লোকজনও এখানে এসে গাছ কাটা বন্ধ করে যান। কয়েকদিন পর আবার গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শরীফপুর ইউনিয়নের সনজরপুর-নিশ্চিন্তপুর সড়কের একপাশে সারিবদ্ধ থাকা ৫২টি সেগুন গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। মাঝারি সাইজের সারিবদ্ধ অবস্থায় ছিল গাছগুলো। গাছগুলোর বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। কেটে নেওয়া গাছের বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।

শাহীন আহমেদ নামের এক ব্যক্তি জানান, কুলাউড়া রেঞ্জ অফিসের ফরেস্ট গার্ড আমিনুল ইসলামের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকার রফাদফায় রেঞ্জ কর্মকর্তার সমঝোতায় গাছ বিক্রি করা হয়েছে।

গাছের মালিকানা দাবিদার মনোহরপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা খালিক মিয়া বলেন, আমার জমির উপর লাগানো সেগুন গাছ আমি এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছি। সড়ক আমার জমি কেটে নিয়েছে। কমলগঞ্জের এক ব্যক্তির কাছে গাছ বিক্রি করেছি। সে বন বিভাগের অনুমতি নিয়েছে না কিভাবে গাছ কেটে নিয়েছে সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জের মিলন মিয়া মোবাইল ফোনে গাছ কিনার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো সেগুন গাছ কিনি নাই এবং মনোহরপুর গ্রামও চিনি না। এলজিইডি কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না।

শরীফপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. লাল মিয়া বলেন, সড়কের পাশ থেকে গাছ কাটার বিষয়ে বন বিভাগের লোকজনও সেখানে আসতে শুনেছি। তবে পরে কি হয়েছে আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ মোবাইল ফোনে বলেন, আমার এখান থেকে মনোহরপুর ২৮ কি.মি. দূরে। এগুলো বাড়ির গাছ। জমি আমাদের নয়, গাছও আমাদের নয়। সেখানে গেলে লোকজন মারবে।

এ ব্যাপারে সিলেট বনবিভাগের শ্রীমঙ্গলস্থ সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ নাজমুল আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বাড়ির গাছ কাটতে হলেও বনবিভাগের অনুমতি নিতে হয়। আর সড়কের পাশ থেকে সেগুন গাছ কাটার বিষয়ে অবশ্যই অনুমতি লাগবে। বন বিভাগের কেউ এর দায় এড়াতে পারেন না। আমি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের উপর হামলা মামলায় ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

Verified by MonsterInsights

সড়কের পাশ থেকে ৫২টি সেগুন গাছ কেটে বিক্রি, বন বিভাগের কর্মকর্তার যোগসাজশের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৬:৪৩:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের সনজরপুর-নিশ্চিন্তপুর সড়কের পাশ থেকে অবৈধভাবে ৫২টি সেগুন গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। এতে রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার। বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তার যোগসাজশে এলজিইডি সড়কের গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ অফিসের এক রেঞ্জ কর্মকর্তার সাথে সমঝোতা করে কমলগঞ্জের মিলন মিয়া নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী গাছগুলো কেটে নিয়েছেন। তবে গাছ কাটার বিষয়ে এলজিইডি কিছুই জানে না। বন বিভাগও তাদের আয়ত্তের বাইরে ও ব্যক্তি মালিকানার গাছ বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে।

স্থানীয়রা জানান, গাছ কাটার সময়ে বন বিভাগের লোকজনও এখানে এসে গাছ কাটা বন্ধ করে যান। কয়েকদিন পর আবার গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শরীফপুর ইউনিয়নের সনজরপুর-নিশ্চিন্তপুর সড়কের একপাশে সারিবদ্ধ থাকা ৫২টি সেগুন গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। মাঝারি সাইজের সারিবদ্ধ অবস্থায় ছিল গাছগুলো। গাছগুলোর বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। কেটে নেওয়া গাছের বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।

শাহীন আহমেদ নামের এক ব্যক্তি জানান, কুলাউড়া রেঞ্জ অফিসের ফরেস্ট গার্ড আমিনুল ইসলামের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকার রফাদফায় রেঞ্জ কর্মকর্তার সমঝোতায় গাছ বিক্রি করা হয়েছে।

গাছের মালিকানা দাবিদার মনোহরপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা খালিক মিয়া বলেন, আমার জমির উপর লাগানো সেগুন গাছ আমি এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছি। সড়ক আমার জমি কেটে নিয়েছে। কমলগঞ্জের এক ব্যক্তির কাছে গাছ বিক্রি করেছি। সে বন বিভাগের অনুমতি নিয়েছে না কিভাবে গাছ কেটে নিয়েছে সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।

এ ব্যাপারে কমলগঞ্জের মিলন মিয়া মোবাইল ফোনে গাছ কিনার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো সেগুন গাছ কিনি নাই এবং মনোহরপুর গ্রামও চিনি না। এলজিইডি কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না।

শরীফপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. লাল মিয়া বলেন, সড়কের পাশ থেকে গাছ কাটার বিষয়ে বন বিভাগের লোকজনও সেখানে আসতে শুনেছি। তবে পরে কি হয়েছে আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ মোবাইল ফোনে বলেন, আমার এখান থেকে মনোহরপুর ২৮ কি.মি. দূরে। এগুলো বাড়ির গাছ। জমি আমাদের নয়, গাছও আমাদের নয়। সেখানে গেলে লোকজন মারবে।

এ ব্যাপারে সিলেট বনবিভাগের শ্রীমঙ্গলস্থ সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ নাজমুল আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বাড়ির গাছ কাটতে হলেও বনবিভাগের অনুমতি নিতে হয়। আর সড়কের পাশ থেকে সেগুন গাছ কাটার বিষয়ে অবশ্যই অনুমতি লাগবে। বন বিভাগের কেউ এর দায় এড়াতে পারেন না। আমি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিচ্ছি।